প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ফার্ণিচার ও বই বিক্রি করে দিল প্রধান শিক্ষক

প্রকাশিত: ২৪ নভেম্বর ২০২২, ০৩:৪৯ পিএম

লামায় রূপসীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন লোহার বেঞ্চ (দুই ভ্যান) ও প্রায় ৭শত কেজি বই রাতের আঁধারে চুরি করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। সরকারি স্কুলের ফার্ণিচার ও বই বিক্রির বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকার মানুষের মাঝে নিন্দার ঝড় উঠে। এদিকে ঘটনা খতিয়ে দেখতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে তদন্ত কমিটি গঠণ করা হয়েছে।

সরজমিনে গেলে রূপসী বাজার পাড়ার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম, মোঃ পিন্টু ও মোঃ ফজলু সহ অনেকে জানান, কয়েকদিন আগে রাতের আঁধারে ২টি ভ্যানে করে স্কুলের পুরাতন বেঞ্চের লোহার ফ্রেমগুলো নিয়ে যাওয়ার সময় রূপসীপাড়া বাজারের নুর জামালের দোকানের সামনে স্থানীয়রা আটক করে। এসময় মোঃ ফজলু মোবাইলে এই বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবদুল মুবিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো মেরামতের জন্য লামা বাজারে নেয়া হচ্ছে। মোঃ পিন্টু নামের একজন, রাতে নিচ্ছেন কেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি উত্তর দেয়নি। সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও ফার্ণিচার গুলো আনা হয়নি। জানা যায় সেগুলো কেজি ধরে বিক্রি করেছে প্রধান শিক্ষক। তারা আরো জানান গত ১৫ নভেম্বর সকালে স্কুলের স্টোর রুম থেকে প্রায় ৭শত কেজি নতুন-পুরাতন বই কেজি ১৭ টাকা ধরে বিক্রি করে দেন এই প্রধান শিক্ষক।

স্কুলের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ সালাউদ্দিন আল মামুন বলেন, বিষয়টি জানার পরপরই বুধবার রাতে আমি প্রধান শিক্ষককে ফোন দিই। তিনি আমার কাছে অস্বীকার করেন। আজ বৃহস্পতিবার স্কুলে আসলে ও রূপসীপাড়া বাজারের অনেকে ২ ভ্যান লোহার বেঞ্চের ফ্রেম ও বই বিক্রির বিষয়টি অবগত করে। বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) বেলা ১০টায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে সহকারী শিক্ষা অফিসার আব্দুল করিম জনি বিষয়টি তদন্তে স্কুলে আসেন। এসময় কমিটির লোকজন, স্থানীয় লোকজন ও স্কুলের অন্যান্য শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় একটি সাংবাদিক টিম বিষয়টি জানতে স্কুলে যায়। এসময় প্রধান শিক্ষক স্কুলে না থাকায় কথা হয় সহকারী শিক্ষকের সাথে। স্টোর রুমের বই এবং স্কুলের নতুন ভবনের সিঁড়ির নিচে ও ছাদে থাকা লোহার ফার্ণিচার গুলো কোথায়? এমন প্রশ্ন করলে তারা বলেন, আমরা জানিনা। স্টোর রুম ও ছাদের চাবি প্রধান শিক্ষকের কাছে থাকে। তিনি বলতে পারবেন। তবে স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যেক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে এই অসৎ কাজের সাথে কমিটি ও সরকারী শিক্ষকরা কেউ জড়িত নেই।

এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক মোঃ আবদুল মুবিন বলেন, আপনি (সাংবাদিক) নিজের মানুষ। নিউজ করিয়েন না। আমি দেখা করব। তবে তিনি বই ও ফার্ণিচার বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করেন।

রূপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মার্মা বলেন, প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোবিন ফার্ণিচার ও বই বিক্রির বিষয়টি অনেকের কাছ থেকে জানলাম। এমন কাজ করা ঠিক হয়নি। লামা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তপন কুমার চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে নিয়েছি। তদন্তপূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: