ডলারের পরিবর্তে স্বর্ণ দিয়ে তেল কিনতে চায় ঘানা

প্রকাশিত: ২৫ নভেম্বর ২০২২, ১১:৫০ পিএম

নিজেদের অর্থনৈতিক ভারসাম্য ও বিদেশি মুদ্রা, বিশেষ করে ডলারের মজুত বাঁচাতে স্বর্ণের বিনিময়ে তেল কেনার পরিকল্পনা করছে ঘানা। পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটি ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহমুদু বাউমিয়া বৃহস্পতিবার এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ডলারের মজুত কমতে থাকা ও তার জেরে দেশটির জাতীয় মুদ্রা সেডির টানা অবমূল্যায়ন ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি প্রতিরোধ করতেই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করছেন ঘানার অর্থনীতিবিদরা।

যে কোনো দেশের ন্যূনতম অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য ওই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো ডলারে মজুত থাকতে হয়।সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ ঘানার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ নেমে এসেছে ৬৬০ কোটি ডলারে। এই পরিমাণ দেশটির তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব নয় ঘানার পক্ষে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের শেষে ঘানার রিজার্ভ ছিল ৯৭০ কোটি ডলার।

২০২৩ সালের প্রথম থেকেই এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেওয়া হবে উল্লেখ করে ঘানার ভাইস-প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা আশা করছি, এর ফলে একদিকে আমাদের পক্ষে আন্তর্জাতিক ঋণের কিস্তি পরিশোধ যেমন সহজ হবে, তেমনি আমাদের মুদ্রার মান নেমে যাওয়াও বন্ধ করা সম্ভব হবে।’

‘কারণ, তেল কেনার মূল্য যদি স্বর্ণ দিয়ে পরিশোধ করা যায়, সেক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের আর এ বাবদ ডলার ব্যয়ের প্রয়োজন পড়বে না, এবং এই পরিকল্পনা সফল হলে আমাদের গোটা অর্থনীতিতে কাঠামোগত পরিবর্তন আসবে।’

আফ্রিকার দেশটির এই প্রস্তাবিত নীতি বেশ বিরল। অনেক দেশ মাঝে মাঝে তেলের বিনিময়ে অন্যান্য পণ্য বা সেবা কেনে, মূলত তেল উৎপাদক দেশগুলোকেই তেল ব্যতিরেকে অন্য পণ্য ক্রয়ে এমন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়, তেল আমদানিকারক দেশকে নয়।

ঘানা অপরিশোধিত তেল উৎপাদন করে; কিন্তু ২০১৭ সালে এক বিস্ফোরণে তাদের একমাত্র পরিশোধক কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে দেশটির সরকার পরিশোধিত তেল ও এ জাতীয় পণ্য আমদানি করে আসছে।

ঋণ সংকট মোকাবেলায় ব্যয় কমানো ও রাজস্ব বাড়াতে পদক্ষেপ গ্রহণ নিয়ে ঘানার অর্থমন্ত্রী কেন ওফোরি-আটার ঘোষণার কাছাকাছি সময়ে রিজার্ভের ডলারের বদলে সোনা দিয়ে তেল কেনার এই পরিকল্পনার কথা জানালেন মাহমুদু বাউমিয়া।

বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে ২০২৩ সালের জন্য উত্থাপিত বাজেটে ওফোরি-আটা পশ্চিম আফ্রিকার ঋণ সংকটের উচ্চ ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করেছেন। বলেছেন, স্থানীয় মুদ্রা সেডির মান কমে যাওয়া ঘানার সরকারি ঋণ ব্যবস্থাপনার সক্ষমতাকে ভয়ঙ্করভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হওয়া কোকো, স্বর্ণ আর তেল উৎপাদনকারী এই দেশটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে একটি সহায়তা প্যাকেজ পেতে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। সূত্র: রয়টার্স।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: