আমরা নির্দলীয় সরকার ছাড়া কোনও নির্বাচনে যাচ্ছি না: মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর ২০২২, ০৭:৫৬ পিএম

কুমিল্লা গণসমাবেশে প্রধান অতিথি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন- সরকার ভাতে মারছে, গুলিতে মারছে। আজ যেখানে আপনারা দাঁড়িয়ে আছেন, এই সমাবেশের জন্যই নয়ন খুন হয়েছে। নয়নের বুকে জ্বলা আগুন এই সমাবেশ। আর তারা বলছে, আমরা কি রিজার্ভ চিবিয়ে খেয়েছি?’’ আমরা বলবো, রিজার্ভ আপনারা গিলে খেয়েছেন। আপনার মন্ত্রীরা মিলে গিলে খেয়ে মোটা তাজা হয়েছেন। আপনারা দেখেছেন, তারা (এমপি-মন্ত্রীরা) দিন দিন কী মোটা হচ্ছে। ১০ তলা বাড়ি থেকে ২০ তলা বাড়ি হচ্ছে তাদের। কিন্তু দেশের কী হচ্ছে? সময় থাকতে কেটে পড়েন- না হলে পালানোর জায়গা পাবেন না। শনিবার (২৬ নভেম্বর) কুমিল্লার টাউন হল মাঠে বিভাগীয় গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ২০১৮ সালের রাতের ভোট এবার কি আপনারা চান? না চাইলে ১০ ডিসেম্বর আসুন। আমরা নির্দলীয় সরকার ছাড়া কোনও নির্বাচনে যাচ্ছি না। নির্বাচন হবে কেয়ারটেকার (তত্ত্বাবধায়ক) সরকারের হাতে। আপনার মন্ত্রীরা মন্ত্রী থাকবে, আপনি প্রধানমন্ত্রী থাকবেন- আর নির্বাচন দেবেন, তামাশা পেয়েছেন?’

তিনি বলেন, এখন মানুষ বলে আগে জানলে ভাঙা নৌকায় উঠতাম না। মানুষ নৌকায় উঠে ভুলের মাশুল দিচ্ছে। চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ সব কিছুর আকাশ ছোঁয়া দাম। এই সরকার মানুষের স্বপ্ন লুটে খেয়েছে। এ জন্য বলি, মানুষ না খেতে পেরে রাস্তায় নেমেছে।’

মির্জা ফখরুল তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী, স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে ভোলায়, বাহ্মণবাড়িয়ার অনেক ভাই প্রাণ দিয়েছেন। তাদের খুনের বিচার, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি, ৩৫ হাজার মিথ্যা মামলার প্রত্যাহারের দাবিতে এই মহাসমাবেশ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাত্রদল নেতা নয়নকে বিনা কারণে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে ফখরুল বলেন, তার কোনো দোষ ছিল না। নয়নের বুকে প্রতিবাদের আগুন জ্বলেছিল। তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। গোটা দেশবাসী আজ মুক্তি চায়। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে কেউ ভোট দিতে যায়নি। ২০১৮-তে আগের রাতেই ভোট চুরি করেছেন। তিনি নাকি আবার ক্ষমতায় যাবেন! যশোরে সভায় তিনি বলেছেন- আওয়ামী লীগ আসলে জনগণ শান্তি পায়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ২০১৮ সালের রাতের ভোট এবার কি আপনারা চান? না চাইলে ১০ ডিসেম্বর আসুন। আমরা নির্দলীয় সরকার ছাড়া কোনও নির্বাচনে যাচ্ছি না। নির্বাচন হবে কেয়ারটেকার (তত্ত্বাবধায়ক) সরকারের হাতে। আপনার মন্ত্রীরা মন্ত্রী থাকবে, আপনি প্রধানমন্ত্রী থাকবেন- আর নির্বাচন দেবেন, তামাশা পেয়েছেন?’

তিনি বলেন, এখন মানুষ বলে আগে জানলে ভাঙা নৌকায় উঠতাম না। মানুষ নৌকায় উঠে ভুলের মাশুল দিচ্ছে। চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ সব কিছুর আকাশ ছোঁয়া দাম। এই সরকার মানুষের স্বপ্ন লুটে খেয়েছে। এ জন্য বলি, মানুষ না খেতে পেরে রাস্তায় নেমেছে।’
ফখরুল বলেন, ১০ বছরের এই লুটেরা সরকার খেয়েছে ৮৬ লাখ কোটি টাকা। আর এক বছরে বিদ্যুতের নামে খেয়েছে ৭৮ হাজার কোটি টাকা। এগুলা কে খেয়েছে? বিএনপি? শোনেন পত্রিকায় দেখলাম, গণসমাবেশে সাধারণ মানুষ যাচ্ছে। আচ্ছা এটা কী অস্বাভাবিক কিছু? মানুষ এখন নিরুপায়। তারা নাকি আমাদের পূর্বাচলে পাঠাবে, তারপর আরেকটু এগিয়ে আসলেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। আমরা বলি, আরেকটু এগিয়ে আসুন। তাছাড়া উপায় নাই। এগিয়ে আসতেই হবে। ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ পল্টনেই হবে। সব ফয়সালা রাজপথে হবে। গুম, খুন হত্যা, নির্যাতন সব কিছুর বিচার হবে- বাংলার মাটিতেই হবে। এ দেশের মানুষ করবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, একটি সুখী বাংলাদেশ দোখার জন্য দেশ স্বাধীন করেছিলাম। এখন আবার যুদ্ধ করতে হচ্ছে ভোটের অধিকারের জন্য। আমরা আরেকটা ৭১ আনবো। এবারের যুদ্ধ হবে ভোট চোর, কম্বল চোরের বিরুদ্ধে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসেও মানুষ আজ খাবারের জন্য দৌড়ায়। বর্তমান সরকার ইভিএম কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রাখতে চায় দাবি করে নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি নেতা-কর্মীদের নামে অতীতের মতো গয়েবি মামলা দেয়ারও অভিযোগ করেন দলটির মহাসচিব। তিনি বলেন, এতে করে কি ১০ তারিখ সমাবেশ বন্ধ করতে পারবে? পারবে না।

তিনি বলেন, অনেক মন্ত্রীরা দেখি, কী কী জানি বলে। আপনারা বলেন, আওয়ামী লীগ নির্দলীয় সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন করলে কী জামানত থাকবে? শোনেন, এই সাধারণ মানুষকে নিয়ে যেমন খুশি তেমন আর করার সুযোগ নেই।’ তিনি বলেন, শুনেছি, ১৫ দিনে নাকি রাজশাহীতে ৩৫ মামলা হয়েছে। সব গায়েবি মামলা। ১০ ডিসেম্বরের আগে এমন বহু গায়েবি মামলা হবে। এদের (সরকারের) চামড়া গন্ডারের মত। সব করে তারা দোষ দেয় বিএনপির। তারা বলে, আমরা নাকি অগ্নিসন্ত্রাস করবো। শুনুন, অগ্নিসন্ত্রাস করতে গিয়ে চট্টগ্রমে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা ধরা খেয়েছে বিএনপি নয়।’

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: