ময়মনসিংহে আ.লীগের সম্মেলন: পোস্টার ও ব্যানারে দখল ময়মনসিংহ নগরীর আকাশ

প্রকাশিত: ০১ ডিসেম্বর ২০২২, ০৭:২৬ পিএম

আগামী ৩ ডিসেম্বর হতে যাচ্ছে ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন। ছয় বছর পর ত্রিবার্ষিক এ সম্মেলনকে ঘিরে উচ্ছ্বসিত নেতাকর্মীরা স্বচ্ছ নেতৃত্বচান জেলা ও মহানগরে। পদপ্রত্যাশী আওয়ামী লীগ নেতা ও সমর্থকদের প্যানা, পোস্টার ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে ময়মনসিংহ নগরীর আকাশ। বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহ নগরীর চরপাড়া, নতুন বাজার, টাউন হল, মাসকান্দা, গাঙ্গিনারপাড়, পাটগোদাম ব্রীজ মোড়, ত্রিশাল বাসস্টেন্ড, জেলা স্কুল মোড়, বাইপাস, কাঁচিঝুলি মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, পদপ্রত্যাশী নেতা ও তাদের সমর্থকদের প্যানা পোষ্টারে ছেয়ে গেছে।

সম্মেলনের দিন ঘনিয়ে আসায়, এ ধরনের প্রচারণা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনায় নগরের বিভিন্ন সড়কে বাঁশের খুঁটি গেড়ে নেতাদের নামে ব্লক দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সড়কে অনেক তোরণ নির্মাণের কাজ চলতে দেখা যায়। নগরীর সার্কিট হাউস মাঠে অনুষ্ঠিত হবে এই সম্মেলন। এই উপক্ষে নগরীর ঐতিহাসিক সার্কিট হাউস মাঠে বিশাল আকৃতির নৌকায় তৈরি করা হচ্ছে সুসজ্জিত প্যান্ডেল। বর্তমান কমিটির নেতাদের প্রত্যাশা সম্মেলনে দুই লাখ লোকের সমাগম হবে।

এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উদ্বোধক হিসাবে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি, সম্মানীত অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি, প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

এর আগে ২০১৬ সালের ১০ অক্টোবর সম্মেলন করে সাবেক ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের পর সভাপতির দায়িত্ব পান অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা। সাধারণ সম্পাদক হন অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণার পর ২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ৭৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয় জেলা আওয়ামী লীগের।

ইতোমধ্যে ত্রিবার্ষিক কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। জেলা কমিটির অধীনে থাকা ১৩টি উপজেলার মধ্যে গত কয়েক মাসে ৯টির সম্মেলন করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। বাকি রয়েছে সদর উপজেলা, ফুলপুর, ভালুকা ও নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মাঠে আলোচনায় রয়েছেন সভাপতি পদপ্রত্যাশীরা হলেন, বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা, সহ-সভাপতি সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আহমেদ, ফারুক আহমেদ খান, অ্যাডভোকেট পীযুষ কান্তি ও অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন খান।

সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীরা হলেন, মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত, বর্তমান জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমএ কুদ্দুস, শওকত জাহান মুকুল, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ আলী আকন, শরীফ আহমেদ এবং প্রচার সম্পাদক আহসান আজাদসহ আরো বেশ কয়েকজন। ২০১৬ সালের ১০ অক্টোবর ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। তখন আংশিক কমিটিতে সভাপতি করা হয় এহতেশামুল আলমকে এবং সাধারণ সম্পাদক হন অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের ছেলে মোহিত উর রহমান শান্ত। পরে ২০১৮ সালে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়। শহরের ২১টি ওয়ার্ডের সঙ্গে আরও নতুন ১২টি ওয়ার্ড যুক্ত হয়ে ৩৩টি ওয়ার্ড নিয়ে মহানগর।

মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে তুমুল আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান সভাপতি এহতেশামুল আলম, সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু ও সাদেক খান মিল্কী টজু প্রমুখ। সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় রয়েছেন, বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি অধ্যাপক গোলাম ফেরদৌস জিল্লু, কাউন্সিলর মাহবুবুর রহমান দুলাল, যুগ্ম সম্পাদক হোসাইন জাহাঙ্গীর বাবু ও সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ারুল হক প্রমুখ।

মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু গণমাধ্যমকে জানান, সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রান্তিক পর্যায়ে দলের মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন ষড়যন্ত্র, অপচেষ্টা মোকাবিলায় সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। এ ধরনের কাজ যারা ত্বরান্বিত করতে পারবেন, এমন নেতৃত্ব চান তিনি।

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ইতোমধ্যে ২১টি ওয়ার্ডের সম্মেলন হয়েছে। ১২টি কমিটি দেওয়া হয়েছে, বাকিগুলোও দেওয়া হবে। অন্য ওয়ার্ডগুলো জেলা আওয়ামী লীগ থেকে তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে সেগুলোতে সম্মেলন করা কঠিন হয়ে যাবে। তবে যারা ত্যাগী: দীর্ঘদিন দলের রাজনীতি করেছেন; এমন নেতারাই নেতৃত্বে আসুন- এটাই তাঁর প্রত্যাশা।

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্তর ভাষা, তাঁর বাবা যেভাবে ২৭ বছর আওয়ামী লীগকে আগলে রেখেছিলেন, সেই পদাঙ্ক অনুসরণ করে আওয়ামী লীগকে আগলে রাখতে চান তিনি। তাঁর বাবার সময় দলে কোন্দল ছিল না। নেত্রী দায়িত্ব দিলে বিভেদ দূর করে দলকে শক্তিশালী করে গড়তে কাজ করবেন বলে প্রত্যাশা তার।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল বলেন, সম্মেলনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সব পর্যায়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দায়িত্ব পাওয়ার পর দলকে সংগঠিত করতে সঠিকভাবে কাজ করেছেন। নেত্রী যেখানে রাখতে চান, তিনি সেখানেই থাকবেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল হক বলেন, সম্মেলনের সকল প্রকার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।ইতিমধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগকে সম্মেলনের বিষয়ে জানানো হয়েছে। আমরা আশাবাদী প্রকৃত ত্যাগীরাই নেতৃত্বে আসবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: