‘ওরা ডাক্তার না কসাই, আমার মেয়ের পেট কাটলো কেন’

প্রকাশিত: ০৩ ডিসেম্বর ২০২২, ১০:৫৫ এএম

মাত্র ৯ মাস বয়সে মাইশার (৫) ডান হাতের আঙুল চুলার আগুনে পুড়ে যায়। সে সময় রংপুরে চিকিৎসা করে হাতের ক্ষত ভালো হলেও কুঁকড়ে যায় তিন আঙুল। তবে আঙুলগুলো ঠিক হয়ে যাবে আশা করে, সম্প্রতি ঢাকার এক চিকিৎসকের পরামর্শে আঙুলে অস্ত্রোপচার করানো হয় শিশুটির। আর সেই অস্ত্রোপচারই যেনো কাল হলো। অস্ত্রোপচার করতে গিয়েই মৃত্যু হলো মাইশার।

জানা যায়, কুড়িগ্রাম পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভেলাকোপা ব্যাপারী পাড়ার মোজাফফর আলী ও বেলি আক্তার দম্পতির মেয়ে মারুফা জাহান মাইশা। নানা ওসমান গণি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। গতকাল শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) ভুক্তভোগীর বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, কিছু দিন আগে রাজধানী ঢাকার মিরপুরে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের ডাক্তার মো. আহসান হাবীবের শরণাপন্ন হন মাইশার বাবা মোজাফফর। তিনি জানতে পারেন ভালো চিকিৎসা নিলেই মেয়ের হাত ভালো হবে। চিকিৎসকও বলেছেন, ‘অপারেশন করলে স্বাভাবিক হবে’।

পরবর্তীতে চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী ৩০ নভেম্বর সকালে রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে আলম মেমোরিয়াল হাসপাতালে হাতের অপারেশন হয় মাইশার। অস্ত্রোপচারের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, মাইশার অবস্থা খারাপ তার আইসিইউ সাপোর্ট লাগবে। তাকে গ্লোবাল স্পেশালাইজড হাসপাতালে নিতে হবে। সেখানেই মারা যায় মাইশা।

তবে কিভাবে মারা গেছে এই শিশু, বিষয়টি বুঝে ওঠার আগেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অপারেশনের জন্য নেয়া টাকা ফিরিয়ে দেয় মাইশার বাবা-মাকে। লাশ বাড়িতে আনতে ঠিক করে দেয় অ্যাম্বুলেন্সও। বাড়ি ফিরে যখন ছোট্ট মাইশাকে দাফনের জন্য গোসল করানো হবে, তখন গোসল করানো নারীরা দেখতে পান মাইশার নাভির নিচে পেটজুড়ে কেটে সেলাই করা। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় নানা গুঞ্জন।

আহাজারিতে মাইশার মা বেলি জানান, ‘আমি কী ভুল করলাম! কেন মেয়েকে নিয়ে গেলাম। ওরা ডাক্তার না, কসাই। আমার মেয়ের পেট কাটলো কেন? ওরা আমার মেয়েকে মেরে ফেলছে। আমি এর বিচার চাই। আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বিচার চাই।’

এ বিষয়ে চিকিৎসক ডা. আহসান হাবীবেরর কাছে অপারেশন ও মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, ‘আমি অপারেশন করিনি। আমার শেয়ার থাকা আলম মেমোরিয়াল হাসপাতালে অপারেশন অ্যারেঞ্জ করে দিয়েছিলাম। সেখানে ঢাকা মেডিকেলের প্লাস্টিক সার্জারির চিকিৎসক (সহকারী অধ্যাপক) ডা. শরিফুল ইসলাম অপারেশন করেন। কিন্তু দুর্ঘটনাবশত শিশুটি মারা যায়। আমি নিজেও এ ঘটনায় হতবাক।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: