বাংলাদেশে এশিয়ার সর্ববৃহৎ দুটি হাওরে এখন অতিথিদের আগমনে ভরপুর

প্রকাশিত: ০৫ ডিসেম্বর ২০২২, ১০:৩৭ পিএম

বাংলাদেশে এশিয়ার সর্ববৃহৎ দুটি হাওরে এখন অতিথিদের আগমনে ভরপুর।পাখির কলকাকলী ও কিচিমিচির শব্দে হাওর পাড়ের মানুষের ঘুম ভাঙ্গছে। হাওর দুটি হচ্ছে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর ও মৌলভীবাজারের হাকালুকি। সিলেট বিভাগ নয় পুরো এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম হাওর বলে জন শ্রতি রয়েছে। এসব হাওরে অসংখ্য গাছ গাছালি রয়েছে। প্রতি শীত মওসুমে হাওরাঞ্চলে প্রচুর শীতকালীন অতিথি পাখি আসে।

এসব অতিথি পাখি ঝাকে ঝাকে প্রতি বছর সুদুর সাইবেরিয়া চীন থেকে আসার সাথে সাথে একশ্রেনীর শিকারী কারেন্ট জাল ও বিষ প্রয়োগ করে মেরে হাট বাজারে দেদারছে বিক্রি করেন। শীত মওসুম শুরু হয়েছে অতিথি পাখিদের আমনে গনহারে পাখি শিকার করছেন। এদের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। আর না হয় এক সময় অতিথি পাখি শুণ্য হয়ে পড়বে পাখিদের অভয়ারণ্য হাওরাঞ্চল।

বর্মানে টাঙ্গুয়ার হাওর ও হাকালুকি হাওরে কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে অবাধে চলছে পাখি শিকার। পাখি শিকারিরা সবসময় তৎপর থাকলেও যথাযথ কর্তৃপক্ষ রয়েছে অন্ধকারে। পাখি শিকার বন্ধে বন বিভাগ সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় কোনভাবেই থামছেনা পাখি শিকার। পরিবেশ ও পাখিপ্রেমীসহ স্থানীয়রা পাখি শিকার বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন।

হাওর পাড়ে বসবাসকারী স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা যায়, শীতকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে আসতে শুরু করেছে অতিথি পাখিরা। এসব অতিথি পাখির কলরবে মুখরিত বিলগুলো। টাঙ্গুয়ার হাওরে অসাধু শিকারিরা বিষটোপ আর ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করায় দিন দিন অতিথি পাখির আগমন কমে যাচ্ছে। বিশেষ করে শীতে হাওরে অতিথি পাখি আসার সাথে সাথে পাখি শিকারিরা তৎপর হয়ে উঠেছে।

স্থানীয়রা আরোও জানান, প্রতি বছর শীত প্রধান সুদুর সাইবেরিয়া চীন থেকে টাঙ্গুয়ার হাওরে নানা প্রজাতির পাখি যেমন: গুটি ইগল, বালিহাঁস, ভুতিহাঁস, গিরিয়াহাঁস, ল্যাঞ্জাহাঁস, কাস্তেচরা, কুড়া ইগল, সরালি, পানভুলানি, কালিম, সাদা বক, কানি বক, পানকৌড়ি আসে। বিদেশি পাখির পাশাপাশি দেশীয় প্রজাতির নানা জাতের পাখি রয়েছে এ হাকালুকি হাওরে।

সরজমিনে, সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর জামাই কাটা ও তাহির পুর এলাকায় বকুল মিয়া বিষটোপ দিয়ে পাখিগুলো ধরে জবাই করে তার বাসায় রাখে। সে আরো জানায়, বিলের ইজারাদার ফয়াজ মিয়া সকালে আরো বেশ কিছু জীবিত পাখি শিকারীর হাত থেকে উদ্ধার করে বিলে ছেড়ে দেয়। পরে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য পাখি শিকারি হোসেনের মোবাইলে যোগাযোগ করলে সে পাখি শিকারের বিষয়টি স্বীকার করে। পরে বস্তার ভিতরে থাকা পাখিগুলো স্থানীয় কয়েকজন সহ সাংবাদিকরা মিলে বিলের পাড়ে মাটি চাপা দেন।

পরিবেশকর্মী তোফায়েল রেজা বলেন, অবাধে পাখি শিকারের কারণে হাওরে পাখির সংখ্যা দিনে দিনে কমছে। পাখি রক্ষায় জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। পাখি শিকার বন্ধে বনবিভাগের লোকবল সংকটে রয়েছে। অবিলম্বে বনবিভাগের লোকবল সংকটে নিরসন করে শিকার রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, পাখি শিকার বন্ধে আমাদের প্রধান অন্তরায় লোকবল সংকট। মাঝেমধ্যে আমরা বন্দুক দিয়ে পাখি শিকারের খবর পাই। এ ব্যাপারে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। এরপরও যদি কেউ পাখি শিকার করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: