লক্ষ্মীপুর ইউসিসিএল এর সভাপতি ও বিআরডিবি’র কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৬ ডিসেম্বর ২০২২, ০৭:৩১ পিএম

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি (ইউসিসিএল) এর সভাপতি রফিক আহম্মেদ ও বিআরডিবি’র কর্মকর্তা মোঃজামাল হোসেন পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

গত ২১/১১/২২ ইং তারিখে দক্ষিন পূর্ব চররুহিতার সমবায় সদস্য মোঃ আলী চৌধুরী নামে একজন সমবায়ী উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি (ইউসিসিএল) এর সভাপতি রফিক আহম্মেদ এবং রায়পুর উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ জামাল হোসেন পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) মহাপরিচালক বরাবর ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সদর উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) হিমাংশু বনিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, নগদে টাকা নিয়ে ০৭(সাত) টি দোকানঘর নির্মান ও বরাদ্ধ চুক্তি সম্পাদন করেছে। অথচ দোকানঘর নির্মানে অগ্রিম গ্রহনকৃত ৫,৬০,০০০/-(পাঁচ লক্ষ ষাট হাজার টাকা) ইউসিসিএলঃ এর ব্যাংক হিসাবে জমা করে নাই। প্রশাসনিক অনুমোদন না নিয়ে দোকানঘর সভাপতি কর্তৃক এককভাবে বরাদ্ধ চুক্তি সম্পাদন করা। জোড়া বাড়ী ও গাছের লভ্যাংশ বাবদ প্রাপ্ত অর্থ যথাক্রমে ৫,৮০,০০০/- ও ৫,৬৭,৯৫০/- টাকা ইউসিসিএল স্থায়ী হিসাবে জমা না করা। একসিলেন্ট ওয়ার্ল্ড হেলথ এন্ড ওয়েল্থ থেকে গৃহীত বিসিক বিল্ডিং এর ভাড়া বাবদ নগদে ২২০০০/- টাকা জামাল হোসেন পাটোয়ারী ও সভাপতি কর্তৃক প্রত্যয়ন পত্রে স্বাক্ষর করে নেওয়ার পর ইউসিসিএলিঃ এর হিসাবে জমা না করা। সভাপতি রফিক আহম্মেদ এর সম্মানী ভাতা ৫০০০/- টাকা করে জামাল হোসেন পাটোয়ারী কর্তৃক সার্কুলার অমান্য করে প্রদান করা। প্রাক্তন পরিদর্শক সহিদ এর বকেয়া বেতন বাবদ ১৬৭৫৮৯/- টাকা চেকে উত্তোলন করে ৫০,০০০/- টাকা তাকে প্রদান করা।যার অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী অফিসার,সদর,লক্ষ্মীপুর এর নিকট দাখিল আছে। লক্ষ্মীপুর ইউসিসিএলিঃ এর গোডাউনের অব্যবহৃত মালামাল এর বিক্রয়লব্দ টাকা ইউসিসিএলিঃ এর ব্যাংক হিসাবে জমা না করা। প্রাক্তন পরিদর্শক মাধুরী রানী নাথ এর ২৮মাসের বকেয়া বেতন বাবদ প্রায় ৪৯৩০০০/- টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা। ১৭ নং ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নে বিআরডিবি’র আওতাধীন গোডাউনের ভাড়া বাবদ নগদ ৭৯০০০/- টাকা তিন বছরের জন্য জামাল হোসেন পাটোয়ারী ও সভাপতি রফিক আহম্মেদ কর্তৃক প্রাক্তন পরিদর্শক সহিদ এর উপস্থিতিতে খুরশিদ আলম খোকন এর নিকট হইতে অগ্রিম গ্রহন করে ইউসিসিএলিঃ এর ব্যাংক হিসাবে জমা না করা এবং খোকনকে অদ্যবধি গোডাউন ব্যবহার করতে না দেয়া।এ ব্যাপারে খুরশিদ আলম খোকন গত ১৪/১১/২২ ইং তারিখে গোডাউন ভাড়ার রশিদ ও বায়নাচুক্তি পাওয়ার জন্য উপ-পরিচালক,বিআরডিবি,লক্ষ্মীপুর বরাবর আবেদন করেন।

ভুক্তভোগী সদর উপজেলার বিআরিডিবি’র সাবেক পরিদর্শক মাধুরী রানী নাথ বলেন, আমি বকেয়া বেতনের এক টাকাও পাইনি। কেউ আমাকে কোন টাকা দেয়নি।

সদর উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি (ইউসিসিএল) এর সভাপতি রফিক আহম্মেদ বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা। অভিযোগকারী মোঃ আলী নিজেই আবার অভিযোগ প্রত্যাহার করেছে। নির্বাচন কেন্দ্রীক আমার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

প্রাক্তন পরিদর্শক জনাব সহিদ এর বকেয়া বেতন নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সদর, লক্ষ্মীপুর এর নিকট দাখিলকৃত অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, উক্ত অভিযোগের ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছেন।কমিটি সব কাগজপত্র দেখেছে। সব জায়গায় সহিদের স্বাক্ষর আছে। তার পরে কমিটি কি প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন তা আমি জানিনা।

অভিযুক্ত রায়পুর উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা জামাল হোসেন পাটোয়ারী বলেন, অভিযোগের বিষয়টি আমার জানা নেই। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। পরে জানতে পেরেছি যিনি অভিযোগ করেছেন তিনি আবার অভিযোগ প্রত্যাহার করেছেন।

সদর উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) হিমাংশু বণিক বলেন, আমি অভিযোগের একটি অনুলিপি পেয়েছি। এতে আমার কোন কিছু করার এখতিয়ার নেই।বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখবেন। এ বিষয়ে জানতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ইমরান হোসেনের মুঠোফোনে কল করলে তাঁকে পাওয়া যায়নি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: