সব প্রস্তুতি সম্পন্ন, প্রধানমন্ত্রীকে বরণের অপেক্ষা

প্রকাশিত: ০৭ ডিসেম্বর ২০২২, ১০:৩৪ এএম

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজার আসছেন বুধবার (৭ ডিসেম্বর)। সকালে ইনানীতে নৌবাহিনীর আন্তর্জাতিক নৌ মহড়ার উদ্বোধন করবেন তিনি। বিকেলে তিনি কক্সবাজার লাবনী সৈকত সংলগ্ন শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগের জনসভায় ভাষণ দেবেন। শেখ হাসিনাকে সমুদ্র শহরে স্বাগত জানাতে মহা আয়োজনের প্রস্তুতি শেষ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ।

প্রধানমন্ত্রীর কক্সবাজার সফর ও জনসভা ঘিরে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মাঝে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা। জনসভায় যোগ দিতে একদিন আগেই উপকূলীয়সহ দূরের উপজেলাগুলো থেকে লোকজন কক্সবাজারে চলে এসেছেন। মঙ্গলবার দুপুর থেকে তারা এসে শহরের আবাসিক হোটেলে অবস্থান নিয়েছেন। সকাল থেকে নেতাকর্মীরা জনসভাস্থলে আসতে শুরু করেছেন।

কক্সবাজার আবাসিক হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার জানান, মঙ্গলবার দুপুর থেকে কুতুবদিয়া, পেকুয়া, চকরিয়া, টেকনাফ থেকে অনেক মানুষ এসে শহরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে অবস্থান নিয়েছেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত অন্তত ৩০ হাজার মানুষ এসেছেন।

দলীয় সূত্র বলছে, শেখ হাসিনা বুধবার সকালের কর্মসূচি শেষ করে দুপুর ২টার পর আসবেন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের নিকটবর্তী লাবণীয় পয়েন্টের শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামের জনসভা মঞ্চে।

তবে সকাল ১০টা থেকে সভাস্থলে জনসমাগম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম চৌধুরী। তিনি জানান, সভা মঞ্চের পাশে সকাল থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ কার্যক্রম শুরু হবে। এর জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, সভাস্থলের নৌকা আকৃতির মূল মঞ্চ প্রস্তুত। সঙ্গে প্রস্তুত চারটি উপ-মঞ্চ, যেখানে কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতারা পৃথকভাবে অবস্থান নেবেন। একই সঙ্গে উদ্বোধন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্যও আলাদা মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান জানান, কেবল সভাস্থল শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম নয়; এর আশে-পাশে পুরো কক্সবাজার শহর হবে জনারণ্য। তারা আশা করছেন, এবারের জনসভায় পাঁচ লাখ মানুষের জমায়েত হবে। আর পুরো এলাকা জুড়ে দুই শতাধিক মাইক রাখা হয়েছে।

কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নজিবুল ইসলাম জানিয়েছেন,কক্সবাজারের সাড়ে তিন লাখ কোটি টাকার উন্নয়নের মহাযজ্ঞে প্রধানমন্ত্রীকে অভিবাদন জানাতে লাখো জনতা প্রস্তুত। সমুদ্র তীরের মানুষ সমুদ্রের মতো উজাড় করে ভালোবাসা জানাবে প্রিয় নেত্রীকে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারে ২৮টি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। ১ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। একই সঙ্গে ৫৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে।

এদিকে কক্সবাজারের সিভিল সার্জন মো. মাহাবুবুর রহমান জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর কক্সবাজার সফর ও জনসভাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে চিকিৎসা সেবাদানের জন্য সাতটি বিশেষ মেডিকেল দল গঠন করা হয়েছে।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন ঘিরে কক্সবাজার জেলা পুলিশ চার স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে। পুলিশের সদস্যরা পোশাকে, সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করবেন। সাজানো হয়েছে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। সঙ্গে রয়েছে কঠোর গোয়েন্দা নজরদারি।

পুলিশ সুপার জানান, দুইটি অনুষ্ঠানস্থল ঘিরে সাড়ে তিন হাজার পুলিশ সদস্যসহ চার হাজারের বেশি সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। কক্সবাজার জেলা পুলিশের বাইরে বিভিন্ন জেলা থেকে পুলিশ সদস্যদের আনা হয়েছে।

কক্সবাজারবাসীর ১১ দাবি: শেখ হাসিনার কাছে কক্সবাজারবাসীর পক্ষে ১১টি দাবি জানানো হবে। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবিগুলো তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে- কক্সবাজার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের সংযুক্তিকরণ, কক্সবাজারের সঙ্গে মহেশখালী উপজেলার সংযোগ সেতু ও বাঁকখালী নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণ, কুতুবদিয়া-মগনামার মধ্যে ফেরি সার্ভিস চালুকরণ, কক্সবাজার পর্যটন গবেষণা ইনস্টিটিউট, চার লেনের মেরিন ড্রাইভ, ছয় লেনের কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, কক্সবাজার সিটি করপোরেশন, কক্সবাজার সিটি কলেজকে সরকারিকরণ, চকরিয়া উপজেলা মাতামুহুরীকে পৃথক উপজেলা ঘোষণা, ঝিনুক ব্যবসায় জড়িত উচ্ছেদকৃত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন ও স্থায়ী আধুনিক ঝিনুক মার্কেট নির্মাণ।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: