নয়াপল্টনে রণক্ষেত্র

প্রকাশিত: ০৭ ডিসেম্বর ২০২২, ০৫:৩৫ পিএম

আরিফ জাওয়াদ, নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও টিয়ার শেল-রাবার বুলেট নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। নেতাকর্মীরাও পাল্টা ইট ছুড়েছে পুলিশকে লক্ষ্য করে।

বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষ শুরুর আগে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিচ্ছিলেন। দুপুর ১২টার দিকে নয়াপল্টন এলাকায় একাধিক সাঁজোয়া যান, প্রিজন ভ্যান ও অতিরিক্ত স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন করে পুলিশ।

বিএনপির কার্যালয়ের সামনে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে নেতা–কর্মীরা। এ ঘটনায় রক্তাক্ত অবস্থায় একজনকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যেতে দেখা যায়। পুলিশের লাগাতার টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপে টিকতে না পেরে পিছু হটে বিএনপি নেতাকর্মীরা। আশপাশের গলিতে অবস্থান নেয় তারা।

পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটে বেশকয়েকজন ছাত্রদল নেতা গুলিবিদ্ধ হন। তারা হলেন- তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রদল নেতা আলদীন, জুয়েল, আরিফ, নিয়াজ মোরশেদ। তাদেরকে রিকশায় করে হাসপাতালে নেয়া হয়।

বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, রুহুল কবির রিজভীসহ অসংখ্য নেতাকর্মী পার্টি অফিসে আটকা পড়েছে। সাইফুল ইসলাম নামের দলটির এক কর্মী গণমাধ্যমে জানান, ‘আমিও ভেতরে আটকা আছি; রিজভী সাহেবও। পুলিশের ছোড়া টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেডের ধোঁয়া ভেতরে প্রবেশ করায় শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।’

এদিকে কার্যালয়ে আছেন জানিয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক গণমাধ্যমকে বলেন, তিতুমীর কলেজের ছাত্রদলের কিছু নেতা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদের শরীর থেকে ব্যাপক রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তারা নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবরুদ্ধ, হাসপাতালে নেয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে খবর দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যত হামলা করা হোক, আগামী ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হবে। সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে বিএনপির নিরীহ নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশের এই গুলি সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে।

ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার হায়াতুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘১০ তারিখের সমাবেশের এখনও চার-পাঁচ দিন বাকি আছে, কিন্তু বিএনপির নেতা-কর্মীরা আজকে নয়াপল্টনে রাস্তা বন্ধ করে মিছিল-মিটিং শুরু করেছিল। আমরা তাদের এসব বন্ধ করতে বলায় তারা পুলিশের ওপর হামলা করে। এরপর আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিয়েছি। বিএনপি কর্মীদের চারপাশ থেকে হামলার কারণে বাড়তি ফোর্স আনিয়েছি। বাড়তি সতর্কতার জন্য সোয়াট সদস্যরাও ঘটনাস্থলে এসেছেন।

উল্লেখ্য, আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশ ঘিরে উত্তেজনা চলছে কয়েকদিন ধরেই। মূলত, গণসমাবেশের স্থান নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে সমাবেশের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি মিললেও সেখানে এই আয়োজন করতে এখন পর্যন্ত রাজি নয় বিএনপি। দলটির পক্ষ সমাবেশস্থল হিসেবে নয়াপল্টনকে চাওয়া হচ্ছিল। এরইমধ্যে নয়পল্টনের বিকল্প হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার আরামবাগের বিষয়ে প্রস্তাব জানায় দলটি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: