বেগম রোকেয়া দিবসে পাইকগাছার ৫ নারী পাচ্ছেন জয়িতা সম্মাননা

প্রকাশিত: ০৮ ডিসেম্বর ২০২২, ০২:৩৩ পিএম

তৃপ্তি রঞ্জন সেন, পাইকগাছা (খুলনা) থেকে: “বিশ্বে যা-কিছু সৃষ্টি চির-কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর”। সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে এদেশের নারীরা। এখন পুরুষের পাশাপাশি উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে এগিয়ে নিচ্ছে নারীরা। সকল ক্ষেত্রে নারীদের জীবনে সফালতা আসেনি। এজন্য তাদের করতে হয়েছে অনেক লড়াই-সংগ্রাম। অনেকের রয়েছে করুন ইতিহাস। সব বাঁধা আর সমাজের নানা প্রতিবন্ধকতাকে পিছনে ফেলে যারা সফল হয়েছে তারাই জয়িতা।

প্রতিবছর সরকার সমাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য অথবা ব্যক্তি জীবনে সফলতা পাওয়া নারীদের মধ্য থেকে ৫টি ক্যাটাগরীতে জয়িতা সম্মাননা প্রদান করে থাকে। নারীদের জন্য এটি বিরল একটি সম্মাননা। সরকার এ সম্মাননা উপজেলা পর্যায় থেকে জেলা, বিভাগ ও জাতীয় পর্যায়ে প্রদান করে থাকে। প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও খুলনার পাইকগাছা উপজেলার ৫টি ক্যাটাগরীতে ৫ জন নারী জয়িতা সম্মাননা পাচ্ছেন।

৯ ডিসেম্বর শুক্রবার বেগম রোকেয়া দিবস ও জয়িতা সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে উপজেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক দপ্তর থেকে নির্বাচিত ৫ নারীকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদ পত্র প্রদান করা হবে। এ বছর যে ৫জন নারী মনোনীত হয়েছেন তারা হলেন, “শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী” ক্যাটাগরীতে রহিমা সুলতানা বুশরা। তিনি পৌরসভার বাতিখালী গ্রামের জিএম নাহিদুল এহসান মিলন এর সহধর্মীনি। তার পিতা এসএম সহিদুল ইসলাম ও মাতা সাহিদা ইসলাম।

রহিমা সুলতানা প্রশাসনের ৩৪তম ব্যাচের বিসিএস কর্মকর্তা। তিনি বর্তমানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত রয়েছেন। “সফল জননী” ক্যাটাগরীতে আকলিমা আজাদ। তিনি উপজেলার রাড়–লী ইউপি চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদ এর সহধর্মীনি। সফল এ জননী’র ৫ সন্তানের মধ্যে ছেলে আমিনুল ইসলাম টুকু সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, মোমিনুল ইসলাম মুকুল বিএ পাশ ও প্রাক্তন চাকুরীজীবী, ইনামুল ইসলাম বকুল মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক, তারিকুল ইসলাম উজ্জ্বল বান্দরবন জেলা পুলিশ সুপার ও মেয়ে আশরাফুন্নেছা রত্না বিএ পাশ।

“নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করেছেন যে নারী” ক্যাটাগরীতে শাহিদা আক্তার। তিনি পৌরসভার বাতিখালী গ্রামের মৃত মেছের আলী ও মৃত ফুলজান বিবির অভাগা মেয়ে। পিতা-মাতা হারিয়ে এতিম শাহিদা পালিত ভাই মুনছুর আলীর এখানে থেকে চরম অভাব অনটনের মধ্যে এইচএসসি পাশ করে বর্তমানে একটি বেসরকারী প্রতিষ্টানে কর্মরত রয়েছেন। “অর্থনৈতিক ভাবে সাফল্য অর্জনকারী” ক্যাটাগরীতে পুতুল রজক। তিনি উপজেলার হরিঢালী গ্রামের গঙ্গাধর রজক ও সন্ধ্যা রাণী রজক এর মেয়ে। মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা পুতুল এইচএসসি পাশ করার পর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে গরুর খামার করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।

“সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন যে নারী” ক্যাটাগরীতে কাকলী রাণী সরদার। তিনি উপজেলার উত্তর খড়িয়া গ্রামের কমলেশ সরকারের স্ত্রী। তিনি বিএ পাশ করে নারী উদ্যোক্তা ও কমিউনিটি পুষ্টি স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, বেগম রোকেয়া দিবস ও জয়িতা সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তাদেরকে সম্মাননা প্রদান করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম বলেন, এধরনের জয়িতা সম্মাননা প্রদান নারীদের জন্য সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। নারীদের জন্য এটি জাতীয় সম্মাননা এবং আর্তমর্যাদার বিষয়। এবার যারা সম্মাননা পাচ্ছেন তাদের মধ্যে আমার মতো উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদমর্যাদার নারী ও রয়েছেন। তাদের সকলকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: