ডিজিটাল ভর্তির লটারিতে এক শিক্ষার্থীর নাম উঠলো ১১ বার!

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি লটারির ফলাফলের তালিকায় এক শিক্ষার্থীর নাম ১১ বারসহ আরও দুই শিক্ষার্থীর নাম ৮ বার এসেছে। সোমবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে শহরের অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে ঝুলিয়ে দেওয়া ফলাফল শিটে এই তথ্য জানা যায়৷
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা প্রতিবাদ জানান। অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে জানা যায়, সারাদেশের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে মর্নিং শিফট ১৪১ ও ডে-শিফটে ৭৫ শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আবেদন নেওয়া হয়। অনলাইনে শিক্ষার্থীরা আবেদন করার পর সোমবার লটারির মাধ্যমে বাছাই করা হয়।
ওই দিন বিকেলে স্কুলের গেইটে লটারিতে বাছাই করা শিক্ষার্থীদের তালিকা লাগিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে দেখা যায় আইমান হাসান তুরজয় নামের এক শিক্ষার্থীর নাম ১১ বার লটারিতে বাছাইয়ের তালিকায় প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে পিতা-মাতা ও মোবাইল নাম্বার একই লিখা থাকলেও ইউজার আইডি নম্বর ভিন্ন ভিন্ন লেখা আছে।
তালিকায় মর্নিং শিফট লিস্টে ২৯, ডে-শিফট লিস্টে ১১, ২৩,২৪,৫৮,১০১,১১০ এবং ওয়েটিং লিস্টে ৩২, ৩৩, ৪২ ও ৮৭ নম্বরে তুরজরের নাম এবং ছবি দেওয়া রয়েছে। অন্যদিকে আরও দুই শিক্ষার্থী মো. রাহাত খান ৮ বার ও কাজী আহনাফ আতিফ ৮ বার লটারিতে বাছাইয়ের তালিকায় প্রকাশ করা হয়েছে। তালিকায় মর্নিং শিফট লিস্টে ২৫, ৪১, ৪৭, ৫৪ ও ৫৭ এবং ওয়েটিং লিস্টে ১৭, ৪৩ ও ৯৪ নম্বরে রাহাতের নাম এবং ছবি দেওয়া রয়েছে এবং কাজী আহনাফ আতিফের মর্নিং শিফট লিস্টে ৯, ২২, ডে-শিফট লিস্টে ৯, ৪৪ ও ৫৩ এবং ওয়েটিং লিস্টে ১৫, ৩৩ ও ৯৯ দেওয়া রয়েছে৷ একই শিক্ষার্থীর নাম লটারিতে ১১ ও আরও দুই শিক্ষার্থী নাম ৮ বার থাকায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন লটারিতে বাছাই বাদ পড়া শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা।
তারা অভিযোগ করে বলেন, এখানে নিশ্চিত অবৈধ পন্থা অবলম্বন করা হয়েছে। একই ইউজার আইডি, নাম, পরিচয় হলে বুঝতে পারতাম ভুলে এসেছে। কিন্তু একই শিক্ষার্থী আলাদা ১১ বা ৮ বার কিভাবে আবেদন করে ইউজার আইডি পেল?
সেকুল নামে এক অভিভাবক বলেন, আমি আমার ছেলে ভর্তির ফলাফল দেখতে এসেছিলাম। এসে দেখলাম আমার ছেলে সহ শতশত ছেলের লটারিতে বাদ পড়েছে। কিন্তু এমন মেয়ে দেখলাম, তার নাম ১১/৮ বার এসেছে তালিকায়। এই ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া হলে আন্তরিক ভাবে খুশি হবো।
আরেক অভিভাবক বলেন, একই ছেলের ১১/৮ বার পেয়ে গেল। আর একজন একবারও না। এখানে অন্য ছেলেদের সুযোগ পেতে পাড়তো।
এ ব্যাপারে অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ফরিদা নাজমীন বিডি২৪লাইভকে বলেন, এই ঘটনাটি কিভাবে ঘটলো তা বলতে পারবো না। সম্পূর্ণ বিষয়টি অনলাইনের মাধ্যমে হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে শিক্ষার্থীরা পর্যায়ক্রমে ভর্তির সুযোগ পাবে। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জুলফিকার হোসেন বিডি২৪লাইভকে বলেন, গভঃ মডেল গার্লস হাই স্কুল ও সাবেরা সুবহান স্কুলেও একই রকম ঘটনা ঘটেছে।
তিনি আরও বলেন, অন্নদা স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। তারপর আমি স্কুলে গিয়েছিলাম। এ বিষয়টি সিস্টেমের ত্রুটি না৷ বিভিন্ন অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নাম ও রেজিষ্ট্রেশন একেকবার একেক রকম লিখে আবেদন করার কারনে এ সমস্যা হয়েছে। যাদের নাম ভর্তি তালিকায় একাধিকবার আসছে তাদের ভর্তি পর্যালোচনা সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে হবে৷ জেলা প্রশাসক মহোদয়কে বিষয়টি জানিয়েছি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. জিয়াউল হক মীর বিডি২৪লাইভকে বলেন, এক শিক্ষার্থীর নাম ১১/৮ বার আসার বিষয়ে জেনেছি। স্থানীয় ভাবে কিছুই করা হয় না। অনলাইনে লটারির বিষয়ে সম্পূর্ণ ঢাকা থেকে দেখা হয়। সেখানেও বদল করার সুযোগ নাই। যেসব শিক্ষার্থীর নাম ১১/৮ বার আসছে, তারা একবারই ভর্তি হতে পারবে। বাকী গুলো ওয়েটিং লিষ্ট থেকে পূর্ণ করা হবে।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: