ফুলবাড়ীতে খ্রিষ্টান পল্লীতে চলছে বড়দিন উদযাপনের প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ২৪ ডিসেম্বর ২০২২, ০৪:৩৫ পিএম

মোঃ আবু শহীদ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) থেকে: খ্রিষ্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিষ্টের জন্মদিন,খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উদযাপন উপলক্ষে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে এবার ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহন করেছেন খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীরা।

বড়দিনের উৎসবকে কেন্দ্র করে নতুন নতুন অনুষঙ্গ যুক্ত হওয়ার পাশাপাশি যুগে যুগে হারিয়ে গেছে অনেক কিছু। গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা শুরুর পরের সময়ে তাকালে মনে হতে পারে,শুধু ক্রিসমাস ট্রি সাজানো আর সান্তাক্লজের উপহারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ যিশুখ্রিষ্টের জন্মদিন উদযাপন। গত দুবছর বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতির কারণে তেমন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনে ভাটা পড়লেও এবার ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের আদিবাসী পাড়ায় বড়দিনের ব্যাপক প্রস্ততি দেখা গেছে।

সরেজমিনে উপজেলার আদিবাসী পাড়া ঘুরে দেখা গেছে,বড়দিন উপলক্ষে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী নারীরা তাদের বাড়ীর সৈান্দয্য ফুটিয়ে তুলতে মাটির দেয়ালে নানা রকমের ফুল এবং নকশা আঁকছেন।

এদিকে নানা রকমের ফুল,বেলুন,নকশা করা কাগজ ও জরি দিয়ে কয়েক দিন ধরেই সাজাচ্ছেন তাদের গির্জা। উপজেলার সবগুলো গির্জায় বর্ণিল সাজে কয়েক দিন ধরেই চলছে উৎসবের প্রস্তুতি। তাদের বিশ্বাস,যিশুর জন্ম হয়েছিল গোয়ালঘরে। সেই স্মৃতিকে স্মরণ করে বড়দিন উপলক্ষে গির্জাগুলোতে তৈরি করা হয়েছে প্রতীকী গোয়ালঘর। অনেকে তাদের বাড়িতেও তৈরি করেছেন গোয়ালঘর।

বেতদিঘি ইউনিয়নের সুর্য পাড়া গ্রামে দেখা মেলে বেলী বাস্কে, কুস্কু মার্ডি, লিমা মার্ডি তাদের বাড়ী সাজানোর কাজে ব্যাস্ত। এসময় তাদের সাথে কথা বললে তারা জানান,এটি তাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। ২৫ ডিসেম্বর এইদিনে আনন্দ-উৎসব ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে তারা দিনটি উদযাপন করেন। দিনটি উপলক্ষে অনেক খ্রিষ্টান পরিবারে কেক তৈরি হবে, থাকবে বিশেষ খাবারের আয়োজন।

সেইসাথে প্রিয়জনকে উপহার দেওয়া, সংগীতানুষ্ঠান ও নৃত্য পরিবেশন,বড়দিনের কার্ড বিনিময়,গির্জায় ধর্মোপসনা এবং বড়দিনের বৃক্ষ,আলোকসজ্জা,যিশুর জন্মদৃশ্য এবং হলি সমন্বিত এক বিশেষ ধরনের সাজসজ্জার আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে তারা সাজ-সজ্জা করছেন।

ফুলবাড়ী উপজেলার কাজিহাল ইউনিয়নের পারইল কদবীর ক্যাথলিক চার্চের ইনচার্জ ফাদার জসিম ফিলিপ মুর্মু ও সিস্টার প্রীতি গোমেজ বলেন, খ্রিষ্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিষ্ট ২৫শে ডিসেম্বর ওইদিনে বেথলেহেম শহরে জন্মগ্রহণ করেন।তাদের বিশ্বাস,সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচার এবং মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালনা করার জন্য যিশুখ্রিষ্ট জন্ম নিয়েছিলেন। তারা বলেন,সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচার এবং মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালনা করার লক্ষে যিশুখ্রিষ্ট জন্ম নিয়েছিলেন। ৪৪০ সালে পোপ এইদিবসকে স্বীকৃতি দিলেও উৎসবটি জনপ্রিয়তা পায় মধ্যযুগে। সে সময় এর নাম দেওয়া হয় ‘ক্রিসমাস ডে’।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ওয়াসিকুল ইসলাম বলেন, খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উদযাপন উপলক্ষে উপজেলার ৫৮টি গির্জায়, সরকারীভাবে ২৯হাজার মেট্রিকটন চাল সহায়তা দেয়া হয়েছে এবং তারা যাতে সুশৃঙ্খল ভাবে দিবসটি উদযাপন করতে পারে, সেদিক খেয়াল রেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: