হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ ও সুস্বাদু খেজুরের রস-গুড়

প্রকাশিত: ২৭ ডিসেম্বর ২০২২, ০৪:১৪ পিএম

হারিয়ে যাচ্ছে বরগুনার আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ ও সুস্বাদু খেজুরের রস- গুড়। রস আহরণে গাছিরা কোমরে দড়ির সঙ্গে ঝুড়ি বেঁধে ধারালো দা দিয়ে নিপুণ হাতে গাছ চাঁচাছোলা ও নলি বসানোর কাজ এখন আর দেখা যায় না। চোখে পড়ে না গ্রাম বাংলার সেই দৃশ্য, তেমনি দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে খেজুরের রসও। অথচ খেজুর গাছ হারিয়ে গেলে এক সময় হারিয়ে যাবে খেজুর রস ও খেজুর গুড়ের ঐতিহ্য।

শীত মৌসুমের শুরুতেই গ্রামাঞ্চলে খেজুর রসের ক্ষির, পায়েস ও পিঠে খাওয়ার ধুম আর তেমন চোখে পড়ে না। এখন আর আগের মত খেজুরের রসও নেই, নেই সে পিঠে পায়েসও। বরগুনা সদর, বেতাগী, তালতলী, আমতলী, পাথরঘাটা ও বামনাসহ পটুয়াখালীর কলাপাড়া, মহিপুর, কুয়াকাটার সুস্বাদু এই খেজুরের রস আগুনে জ্বাল দিয়ে বানানো হতো বিভিন্ন রকমের গুড়ের পাটালি ও নালি গুড়। খেতেও যেমন সুস্বাদু, চাহিদাও ছিল ব্যাপক। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে।

বরগুনা সদরের আয়লা-পাতাকাটা ইউনিয়নের খাজুরতলা গ্রামের হানিফ হাওলাদার বলেন, আগে আমাদের দারুণ কদর ছিল, মৌসুম শুরুর আগ হতেই কথাবার্তা পাকা হতো কার কটি খেজুর গাছ কাটতে হবে। কিন্তু, আগের মতো তেমন খেজুর গাছও নেই। আর গ্রামের লোকেরাও এখন আর কেউ ডাকে না। গ্রামে অল্প কিছু গাছ আছে সেগুলো কেটে নিজেদের চাহিদা মিটাই।

খেজুর গাছ হারিয়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে— ইট ভাটার জ্বালানি হিসাবে ব্যবহারের জন্য বেপরোয়া খেজুর গাছ কাটা। এতে দিনে দিনে বরগুনা জেলাজুড়ে আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পাচ্ছে খেজুরের গাছ।

বরগুনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু সৈয়দ মো. জোবায়দুল আলম জানান, যত্রতত্র ইট ভাটা গড়ে ওঠায়, ভূপৃষ্ঠের রুপ পরিবর্তন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এছাড়া অসাধু ব্যক্তিরা ইট ভাটাসহ বিভিন্ন কাজে অধিক মুনাফার লোভে খেজুর গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছে। যে কারণে বরগুনাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে খেজুর গাছ কমে যাচ্ছে। আর এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে হলে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে আমাদের বেশি বেশি খেজুর গাছ রোপণ করতে হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: