দিনাজপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ী ভাংচুর-ফাঁকা গুলি, ১৫ জন আহত

প্রকাশিত: ৩০ ডিসেম্বর ২০২২, ১১:২৩ এএম

মো.রাসেল ইসলাম, দিনাজপুর থেকে: নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দিনাজপুরের বিরল পৌরসভা ও রাজারামপুর ইউনিয়নের পৃথক দুটি কেন্দ্রে দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের গাড়ীতে হামলা করেছে পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকরা। ইট পাটকেল দিয়ে হামলায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের একটি গাড়ী ভাংচুর হয়েছে এবং আনসার সদস্যসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। এই ঘটনায় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করেছে পুলিশ।

জানা যায়, আজ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে জেলার বিরল উপজেলার রাজারামপুর ইউনিয়নের কানাইবাড়ী কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণার পর কিছু লোকজন কাগজপত্র ভুল আছে দাবি করে কেন্দ্র ঘেরাও করে। এসময় তারা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ী ও সরকারি মালামাল ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। পরে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ ও আনসার গেলে তাদের উপর ইট পাটকেল ছোড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, তাদের গাড়ী ও সরকারি মালামাল নিয়ে ফেরত যায় পুলিশ। এই ঘটনায় পুলিশ ও আনসার সদস্যসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়।

এদিকে, বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে বিরল পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ব্রহ্মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণার পর হট্টগোল শুরু করে পরাজিত প্রার্থীদের সমর্থকরা। তাঁরা ইভিএম মেশিন থেকে পাওয়া কপি দেখতে চেয়ে কেন্দ্র থেকে নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিতদের কেন্দ্র থেকে বের হতে বাধা প্রদান করেন। এসময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ীতে করে নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে আসার চেষ্টা করলে প্রার্থীর সমর্থকরা ইট পাটকেল ছোড়ে। এতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসানের গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। এ সময় প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ, পুলিশ ও আনসার সদস্যসহ কমপক্ষে ৫ জন আহত হন।

বিষয়টি জানতে একাধিকবার ইউএনও আফছানা কায়সারের সরকারি মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জিন্নাহ আল মামুন জানান, দুটি ঘটনাই নির্বাচন ফলাফলকে কেন্দ্র করে। দুটি ঘটনায় পুলিশ ও আনসার সদস্যসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমরা একটি কেন্দ্রে সরকারি মালামাল রক্ষা ও নিজেদের নিরাপত্তায় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেছি। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা মামলা দিবেন, যা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম প্রামাণিক বলেন, দুটি কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণার পর হামলা হয়েছে। এতে আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ী ভাংচুর হয়েছে। ব্রহ্মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবদুল লতিফ (জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী) আহত হয়েছেন। এছাড়াও পুলিশ ও আনসার সদস্যরা আহত হয়েছেন। আমাদের নির্বাচনী সরঞ্জামাদি নিরাপদ রয়েছে। হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা মামলা দায়ের করেছেন।

উল্লেখ্য যে,দিনাজপুরের বিরল পৌরসভায় মেয়র পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সবুজার সিদ্দিক সাগর নির্বাচিত হওয়ায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়নি। ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪ জন ও ৩টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আর রাজারামপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ২ জন প্রার্থী। এছাড়াও সাধারণ সদস্য পদে ৩০ জন এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: