কক্সবাজার সৈকতে থার্টি ফার্স্ট নাইট আয়োজন নিষেধ

প্রকাশিত: ৩০ ডিসেম্বর ২০২২, ১১:৪৭ পিএম

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে বছরের শেষ সময়ে ভ্রমণে এসেছেন হাজারও মানুষ। এসব পর্যটকদের বেশির ভাগই আসছেন খ্রিষ্টীয় ক্যালেন্ডারে বছরের শেষ রাত ও নতুন বছরের প্রথম প্রহর অর্থাৎ-থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করতে। তবে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে বর্ষবিদায় কিংবা বর্ষবরণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে প্রশাসন।

পর্যটকদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা টুরিস্ট পুলিশ বলছেন, ২০২২ সালের শেষ সূর্যকে বিদায় জানাতে প্রতিবছর এই সৈকতে সমাগম ঘটে অন্তত তিন লাখ পর্যটকের। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটবে না।

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বছরের শেষ সূর্যকে বিদায় জানাতে প্রতিবছর কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকসহ স্থানীয়দের সমাগম ঘটে। এবারও ২ লাখ পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থানের সম্ভাবনা রয়েছে।

এ দিকে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনে পুলিশ প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞায় হতাশার কথা জানিয়েছেন সৈকতে ভ্রমণে আসা পর্যটকরা। পরিবারের সদস্য নিয়ে সৈকত ভ্রমণে আসা পর্যটকেরা বলছেন, হোটেল এবং সমুদ্রসৈকতে বর্ষবিদায় এবং বর্ষবরণের কোনো আয়োজন নেই দেখে অবাক হতে হচ্ছে। ভ্রমণে আসা কমবেশি সবার ইচ্ছে ছিল, সৈকতের বালুচরে দাঁড়িয়ে রাত ১২টা ১ মিনিটে পুরোনো ২০২২ সালকে বিদায় এবং নতুন বছরকে ২০২৩ সালকে বরণ করার।

পর্যটকরা আরও বলেন, আতশবাজি ঝলকানি এবং ফানুসের আলোয় ঝলমল হতো অন্ধকার আকাশ। আগেও তিন চার লাখ মানুষের উপস্থিতিতে থার্টি ফার্স্ট নাইটের উৎসব হয়েছে। তখন নাশকতা, বোমা হামলার চিন্তা কারও মাথায় ছিল না। কিন্তু এখন ভাবতে হচ্ছে।

শরীয়ত পুর থেকে আসা পর্যটক লাভলী চৌধুরী বলেন, বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকতে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি দুঃখজনক। নিরাপত্তা জোরদার রেখে অনুমতি দেয়া উচিত ছিল।

বগুড়া থেকে আসা পর্যটক আহাদ-ঝুমুর দম্পতি বলেন, সৈকতে ২০২২ সালকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে বরণ করবো আশা নিয়ে সৈকতে এসেছি। কিন্তু এখনে আসার পর জানতে পারলাম সৈকতে কোনো নাচ-গান কিংবা কনসার্টের আসর হবে না। একটু খারাপ লাগছে।

সি গাল হোটেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরুল ইসলাম ছিদ্দিকী বলেন, এবারও থার্টি ফার্স্ট নাইটের কোনো আয়োজন হোটেলে রাখা হয়নি। তবে অতিথিদের জন্য হোটেলের খোলা মাঠে (সুইমিংপুলের পাশে) ডিনারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান জানিয়েছেন, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এই পদক্ষেপ।

আবু সুফিয়ান জানান, নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে জেলা প্রশাসনের চারটি ভ্রাম্যমাণ আদালত বিভিন্ন স্থানে কাজ করবে। এছাড়াও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা টহল জোরদার রাখবে। এই নিষেধাজ্ঞা কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অমান্য করলে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনা হবে।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. জিললুর রহমান বলেন, কক্সবাজারের নাজিরারটেক থেকে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার সৈকতের কোথাও আতশবাজি, পটকা ফোটানোসহ গানবাজনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কিংবা ব্যান্ডসংগীতের আয়োজন করতে পারবে না কেউ। তবে স্বাভাবিক অবস্থায় বালুচরে দাঁড়িয়ে সমুদ্র উপভোগ করা যাবে। বিধিনিষেধ পালনে টুরিস্ট পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর অবস্থানে থাকবে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, সরকারি নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে সৈকতের উন্মুক্ত স্থানে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কনসার্ট, গান বাজনাসহ সব ধরনের আয়োজন বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে হোটেল কর্তৃপক্ষ চাইলে তাদের অতিথিদের জন্য নববর্ষ উদযাপনের আয়োজন করতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেটি বিবেচনা করা হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: