বিএনপির এমপি সাত্তার: পদত্যাগের ২০ দিন পর বলছেন সিদ্ধান্ত ‘অদূরদর্শী’ ছিল

প্রকাশিত: ৩১ ডিসেম্বর ২০২২, ০৯:৩৪ পিএম

জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগের পর এবার বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার পদও ছাড়লেন আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া। গত বৃহস্পতিবার রাতে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। আজ শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি নিজেই। পদত্যাগের কারণ জানতে চাইলে দলের প্রতি একরাশ অভিমান ঝারেন এই নেতা। সেই সঙ্গে বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগের দলীয় সিদ্ধান্তটি সঠিক ছিল না বলেও মনে করছেন তিনি।

আব্দুস সাত্তার ভূইয়া বলেন, বয়স হয়েছে। আগের মতো দলের জন্য সময় দিতে পারি না। দলও মনে করে না, আমাদের আর প্রয়োজন আছে। দলের জেলা ও উপজেলা কমিটিও কোনো কিছু করার ক্ষেত্রে পরামর্শ নেয় না, জিজ্ঞেসও করে না। এতে খারাপ লাগে। এখন মনে হচ্ছে হয়তো দলে আর আমাদের প্রয়োজন নাই। এই অবস্থায় পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া। বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দলটির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তিনি পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। একবার টেকনোক্র্যাট প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ১১ ডিসেম্বর বিএনপির অন্য ছয় এমপির সঙ্গে তিনিও জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগপত্র জমা দেন। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি এই শূন্য আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

দলীয় সিদ্ধান্তে সংসদ সদস্যের পদ থেকে পদত্যাগ করলেও দলের ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে আপত্তির কথা জানিয়েছেন আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া। তিনি বলেন, দলের সিদ্ধান্ত তো আমরা রন্ধ্রে-রন্ধ্রে মানি। কিন্তু সংসদ সদস্যদের পদত্যাগের সিদ্ধান্তটা দূরদর্শী ছিল না। যদি আমাদের সঙ্গে দল এই বিষয়ে পরামর্শ করত, তাহলে হয়তো ভালো পরামর্শ দিতে পারতাম। তারপরেও দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যে কারণে আমরা এটা মানতে বাধ্য।

এদিকে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে সাত্তার ভূইয়ার পদত্যাগ করা আসনে উপ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, ওই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাত্তার ভূইয়া নিজে অথবা তাঁর ছেলে মাঈনুল হাসান ভূইয়া প্রার্থী হতে পারেন।

এর আগে গত ২৬ নভেম্বর আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর বৈঠকে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, আসনগুলো উন্মুক্ত রেখে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অংশ নেবে। এমনও হতে পারে বিএনপির তৃণমূলের নেতারাও নির্বাচন করতে আসবে। ফলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে।

বৈঠকে উপস্থিত সভাপতিমণ্ডলীর একাধিক সদস্য জানান, প্রধানমন্ত্রী ওই সময় হাসতে হাসতে বলেন, এমনও হতে পারে, যে দলের নেতারা পদত্যাগ করেছে সে দলের নেতারাই আবার নির্বাচন করল! এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাত্তার ভূঁইয়া বলেন, আপাতত এ রকম কোনো সম্ভাবনা নাই। পরবর্তীতে এসব বিষয়ে চিন্তা করা যাবে।’

১৯৭৯ সালে প্রথম তৎকালীন কুমিল্লা-১ (নাসিরনগর ও সরাইলের একাংশ) ও বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া। ওই সময়ে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সহসভাপতি ছিলেন। দল থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। এরপর ১৯৯১ সালে এবং ১৯৯৬ সালের দুটি সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

২০০১ সালের নির্বাচনে চারদলীয় জোটের শীর্ষ নেতা ইসলামী ঐক্যজোটের তৎকালীন মহাসচিব মুফতি ফজলুল হক আমিনীকে আসনটি ছেড়ে দেন আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া। ওই সময় বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার গঠন করলে তাঁকে টেকনোক্র্যাট

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: