মেঘনায় ১১ লাখ লিটার তেল নিয়ে ডুবে যাওয়া জাহাজ উদ্ধার

প্রকাশিত: ০১ জানুয়ারি ২০২৩, ০৪:২১ পিএম

ভোলার মেঘনা নদীর তুলাতলি পয়েন্টে ১১ লাখ লিটার জ্বালানি তেল নিয়ে ডুবে যাওয়ার সাত দিন পর ‘এসভি সাগর নন্দিনী-২’ নামে জাহাজটি উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার (১ জানুয়ারি) সকাল ৭টার পর থেকে ডুবন্ত জাহাজের উদ্ধার কাজ শুরু হয়। বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ ট্যাংকারটি ভাসানো সম্ভব হয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নৌ-সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মো. সেলিম।

তিনি জানান, দেশীয় প্রযুক্তিতে দুটি বার্জের মাধ্যমে ‘সাগর নন্দিনী-২’কে ভাসানো হয়েছে। বর্তমানে জাহাজটি থেকে জ্বালানি তেল সরিয়ে অপর একটি ট্যাংকার ‘সাগর নন্দিনী-৩’এ নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আরেকটি ট্যাংকার রিজার্ভ রাখা হয়েছে।

মো. সেলিম আরও জানান, বিআইডব্লিউটিএ’র নেতৃত্বে কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ, প্রাইভেট স্যালভেজ ও মোংলা বন্দরের জাহাজ ‘অগ্নি প্রহরী’ উদ্ধার কাজে সহায়তা করেছে। উদ্ধার অভিযানে বিআইডব্লিউটিএর দুই ডুবুরিসহ পাঁচ জন ডুবুরি সার্বক্ষণিক কাজ করেছেন। তেল অপসারণের পর জাহাজটির গন্তব্য চাঁদপুর পাঠানো হবে। অপর একটি জাহাজের সাহায্যে টেনে সাগর নন্দিনী-২ নৌযানটি ডক ইয়ার্ডে নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ‘সাধারণত দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে এই ধরনের জাহাজ উদ্ধার সম্ভব। কিন্তু মেঘনা নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় ডুবুরিরা ঠিকমতো কাজ করতে পারেননি। তাই অভিযানে একটু সময় বেশি লেগেছে।’

ঘটনাস্থলে থাকা জাহাজটির তেলের মালিক পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের উপ-মহাব্যবস্থাপক ও তদন্ত কমিটির প্রধান আসিফ মালিক জানান, ডুবে যাওয়া জাহাজ থেকে তেল সরিয়ে সাগর নন্দিনী-৩ জাহাজে নেওয়া হচ্ছে। নেওয়া শেষ হলে হিসাব করে বলা যাবে কী পরিমাণ তেল ভেসে গেছে।

গত ২৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জ্বালানি তেল নিয়ে সাগর নন্দিনী-২ জাহাজটি চাঁদপুরে পদ্মা অয়েল কোম্পানির ডিপোর উদ্দেশে রওনা হয়। পরদিন ভোরে ঘন কুয়াশার মধ্যে ভোলার তুলাতুলির কাঠিরমাথা এলাকায় বালুবাহী একটি নৌযানের সঙ্গে জাহাজটির সংঘর্ষ হয়। এতে তলা ফেটে জাহাজটিতে পানি ঢুকতে থাকে এবং এক পর্যায়ে ডুবে যায়। জাহাজে মোট ১৩ জন কর্মী ছিলেন। ওই সময় তাদের চিৎকার শুনে অন্য একটি নৌ-যান এসে তাদের উদ্ধার করে।

ডুবে যাওয়া জাহাজের কর্মীরা জানান, স্থানীয় জেলেরা এসে জাহাজের তেল সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। কিছু তেল মেঘনায় ছড়িয়েও পড়ে। জাহাজটিতে থাকা তেলের মালিক পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জাহাজে ১১ লাখ লিটার ডিজেল ও অকটেন ছিল। এর মধ্যে ডিজেল আট লাখ ৯৮ হাজার লিটার এবং অকটেন দুই লাখ ৩৪ হাজার লিটার ছিল, যার বাজার মূল্য ৯ কোটি টাকার বেশি।

এ ঘটনায় পদ্মা অয়েল কোম্পানি, বিআইডব্লিউটিএ এবং পেট্রোবাংলা পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনও তদন্ত কমিটির রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করা হয়নি। দুর্ঘটনার পর সাগর নন্দিনী-২ এর মাস্টার বাদী হয়ে ভোলা মডেল থানায় একটি জিডি করেছিলেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: