শশুর বাড়ীতে জামাতার বিষপানে মৃত্যু, ৬ দিন পর মামলা দায়ের

আরিফ হোসেন, চরফ্যাসন (ভোলা) থেকে: ভোলার চরফ্যাসন উপজেলার শশীভূষণে শ্বশুর বাড়িতে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে মারধরের পর মুখে বিষ ঢেলে সোহাগ নামের এক যুবককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীসহ শ্বশুর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) নিহত যুবকের মা ছালেহা বেগম বাদী হয়ে পুত্রবধুসহ ৬ জনকে আসামী করে চরফ্যাসন জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট আদালতে হত্যা মামলাটি দায়ের করেছেন। বিজ্ঞ আদালত দায়ের করা মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ নেন।
নিহত যুবক সোহাগ আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নের মৃত নাছির আহম্মেদের ছেলে। মামলা ও নিহতের পরিবার সুত্রে জানাযায়, উপজেলার এওয়াজপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে আবদুল বারেক হাওলাদারের মেয়ে নাসিমার সাথে পার্শ্ববর্তী আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নের মৃত নাছির আহম্মেদের ছেলে সোহাগের সাথে পারিবারিক ভাবে ৬ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে লামিয়া নামের সাড়ে তিন বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই সোহাগ স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে বসবাস করতেন। এবং সোহাগ চট্রগ্রামের রাজ মিস্ত্রির পেশায় কর্মরত ছিলেন। তার উপার্জিত টাকা স্ত্রী ও শ্বশুর কাছে জমা রাখেন।
গত সোমবার তিনি কর্মস্থল থেকে শ্বশুর বাড়িতে যান। পাওনা টাকা চাইলে জামাতা সোহাগের সাথে শ্বশুর পরিবারের বিরোধ শুরু হয়। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে গত বুধবার সোহাগকে মারধর করে এতে সোহাগ সংঙ্গাহীন হয়ে পরলে মুখে বিষ ঢেলে দেন। বিষক্রিয়ায় সোহাগের মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া গুরুতর আহত সোহাগকে ঘরে আটকে রাখেন। পরে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চরফ্যাসন হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তার অবস্থা সংকটাপন্ন দেখে কর্তব্যরত চিকিসৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেপার করেন। দুই দিন বরিশালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় সোহাগের মৃত্যু হয়।
নিহত সোহাগের স্ত্রী নাসিমা বেগম জানান, বিয়ের পর থেকেই স্বামী সোহাগ তাকে নিয়ে তার বাবার বাড়িতেই বসবাস করতেন। তাকে এবং তার সন্তানকে রেখে তিনি ঢাকা ও চট্রগ্রামে রাজ মিস্ত্রির কাজ করতেন। কয়েক মাস পরপর তিনি বাড়িতে আসতেন। গত সোমবার তিনি কাউকে কিছু না জানিয়ে তার ব্যবহারিত কাপড়চোপড় ছাড়াই কর্মস্থল থেকে তিনমাস পর বাড়িতে আসেন। পরেরদিন মঙ্গলবার সকালে স্বামী সোহাগ আমাকে সাথে নিয়ে নিজের জন্য প্যান্ট,সার্ট ও গ্যাঞ্জি কিনতে স্থানীয় শশীভূষণ বাজারে যান। কাপড় কিনে ফিরে এসে তিনি একাধিক মানুষের সাথে ফোনে কথা বলেছেন। সারাদিন গড়িয়ে রাতভর তিনি তার সাথে এবং সন্তানের সাথেই ছিলেন। গত বুধবার সকালে তিনি ঘরের রান্নার জন্য বাজার করতে যান। বাজারে যাওয়ার আগে তিনি মোবাইল ফোনে কার সাথে যেন কথার কাটাকাটি করছিলেন।
কেনাকাটা শেষে বাড়িতে ফেরার পথে যে কোন সময় সে বিষপান করে বাড়িতে ফিরে আসেন। এবং ঘরে ফিরে তেঁতুল খেতে চান। তেঁতুল খেতে চাওয়ায় বিষয়টি তার (নাসিমা) সন্দেহ হয়। পরে তার মুখে ও শরীরের বিষের গন্ধ পাওয়ায় তাৎক্ষনিক তাকে চিকিৎসার জন্য চরফ্যাসন হাসপাতালে নিয়ে এলে প্রাথমিকি চিকিৎসা শেষে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে রেফার করেন। তবে কি কারনে তিনি বিষপান করেছেন তার আমার জানা নাই। ২দিন চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় বৃহস্পতিবার তার মৃত্যু হয়েছে। তাকে মারধর ও টাকা পাওনা এসব কোন বিষয়ই সঠিক নয়।
শশীভূষণ থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, বরিশালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় বরিশাল কোতয়ালী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে। এজনই শশীভূষণ থানায় কোন মামলা নেয়া হয়নি। ময়না তদন্তের রির্পোট পেলে মৃত্যুর আসল কারন জানাযাবে। তবে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতে মামলা দায়ের করেছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: