শেরপুরে গ্রামবাসী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি আবার সংঘর্ষ, আহত ৩

প্রকাশিত: ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ০৮:৪৭ পিএম

বগুড়া শেরপুর উপজেলায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আবার নতুন করে সংঘর্ষে তিনজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি সম্প্রদায়ের। অন্যজন মুসলিম। আজ বুধবার বেলা ১১ টার দিকে উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের আম্বইল গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন, উজ্জ্বল ও সুজ্জল। তারা এলাকায় ওয়েস্টার্ন ফিড মিল নামক একটি কোম্পানিতে শ্রমিকের কাজ করেন। অন্যজন হলেন প্রতিবন্ধী ফারুক।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জমির মালিকানা সংক্রান্ত বিরোধ মীমাংসার জন্য স্থানীয় মুসলমানদের এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির মানুষেরা গতকাল মঙ্গলবার শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে আলোচনায় বসেন। এ সময় উভয় পক্ষের একজন করে আইনজীবী ছিলেন। ইউএনও আইনের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত উভয় পক্ষকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান জানান।

এর মধ্যে বুধবার বেলা ১১ টার দিকে কাজে উজ্জ্বল ও সুজ্জল কোম্পানিতে কাজের জন্য যান। এ সময় কোম্পানি গেটে ফারুকের সাথে দেখা হয়। দেখা হওয়ার মাত্রই উজ্জ্বল ও সুজ্জল তাকে ইঙ্গিত করে বলেন যে, ইউএনও অফিসে গিয়ে কী ছিড়েছেন। আমাকের কী হবে? এমন উসকানিমূলক কথার প্রতিবাদ করেন ফারুক। তখন ফারুকে লাঠি নিয়ে পিটিয়ে আহত করেন তারা। মুহূর্তের মধ্যেই সেখানে লোজকন জড়ো হয়। এর মধ্যে দুই পক্ষের ধস্তাধস্তিতে উজ্জ্বল ও সুজ্জল আহত হন।
এই খবরটি স্থানীয়ভাবে মাইকে ঘোষণা করা হয়। এতে বিষয়টি গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনা আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানতে পেরে এলাকায় হাজির। পরে তাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

বগুড়া ভূমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি কমল সিং অভিযোগ করেন, বাজারে আমাদের দুজনকে স্থানীয় বাসিন্দারা পিটিয়ে আহত করে। তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসতে আমাদের আরও লোকজন কোম্পানির সামনে যায়। তাদের দেখে মুসলমানেরা মাইকে ঘোষণা দেয়, আমাদের উপর অন্য পক্ষ হামলা করেছেন। তখন বিষয়টি ঘোলাটে হয়ে যায়। তবে এরপর প্রশাসনের লোকজন আসার কারণে আর কিছু হয়নি।

মাইকে ঘোষণা দেওয়ার কথা অবশ্য স্বীকার করেছেন গ্রামের বাসিন্দা জাফর উদ্দিন বাচ্চু। তিনি জানান, গত সোমবার এখানে জমি নিয়ে সংঘর্ষ হয়। তখন আমার মাথা ফেটে যায়। এরপর প্রশাসনের লোকজন এই বিরোধী নিষ্পত্তির জন্য ১০ দিন শান্তিপূর্ণ অবস্থানে থাকতে বলেছেন। সুতরাং আমাদের হামলা করার কোনো কারণ নেই। কিন্তু তারা উসকানি দিচ্ছে সংঘর্ষের। নিজেদের রক্ষা করার জন্য মাইকে ঘোষণা দিয়ে গ্রামবাসীকে সাবধান হতে বলা হয়েছিল।

জানতে চাইলে শেরপুর থানার ওসি আতাউর রহমান জানান, অতি উৎসাহি লোকজনের কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যাওয়ার কারণে কোনো অপ্রতিকর কিছু ঘটেনি।

জমি নিয়ে আম্বুইল গ্রামে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল জানিয়ে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানা বলেন, জমিজমা সংক্রান্ত এই ঘটনা নিয়ে দুই পক্ষের লোকজন গতকাল আমার অফিসে বসেছিলেন। তারা ১০ দিন সময় নিয়েছেন কাগজপত্র ঘুছিয়ে বসার জন্য। কিন্তু এর মধ্যেই এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: