এক টাকার ভিজিটে রোগী দেখেন ডা. সুমাইয়া!

প্রকাশিত: ১২ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯:৪২ এএম

সদ্য এমবিবিএস পাস করা ডা. সুমাইয়া বিনতে মোজ্জাম্মেল। মাত্র এক টাকা ভিজিটে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন তিনি। তার মানবিক উদ্যোগ সাড়া ফেলেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। রাজশাহী নগরীর সাহেববাজারের মনিচত্বর এলাকায় একটি ফার্মেসিতে বসে নিয়মিত রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। তার ইচ্ছে সামনে বিসিএস দিয়ে চাকরির পাশাপাশি আজীবন একটি নির্দিষ্ট সময় বিনামূল্যে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসাসেবা দেবেন।

বর্তমানে তিনি প্রতি শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত নিয়মিত রোগী দেখছেন। পাশাপাশি নিজের অবসর সময়েও সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। তার বাবা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক মীর মোজাম্মেল আলী (৫৬)। ডা. সুমাইয়া বাবা-মায়ের ছোট মেয়ে। তারা তিন বোন ও এক ভাই। তিন বোনই ডাক্তার। তারা বেসরকারি ক্লিনিকে কর্মরত আছেন। ডা. সুমাইয়ার স্বামীও ডাক্তার। তিনিও নগরীর একটি বেসরকারি ক্লিনিকে কর্মরত আছেন।

এ বিষয়ে সুমাইয়া বিনতে মোজাম্মেল বলেন, “আমার ডা. হওয়ার কোনো ইচ্ছেই ছিল না। আমি ব্যবসা করে উদ্যোক্তা হতে চাইতাম। কিন্তু বাবা চাইতেন ডাক্তারি পেশায় আত্মনিয়োগ করে মানুষের সেবা করি। বাবার ইচ্ছেতেই এইচএসসি শেষ করে ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হই। ২০২২ সালের নভেম্বরে ইন্টার্ন শেষ করে বাবার ইচ্ছেতেই বাসার নিচে ফার্মেসি চালু করে চিকিৎসা দেওয়া শুরু করেছি।”

ডা. সুমাইয়া জানান, এক টাকা মূলত প্রতীকী সংখ্যা মাত্র। তিনি বিনামূল্যেই চিকিৎসা দিচ্ছেন। এই এক টাকা মূলত তার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের (দি ফাইভ ফাউন্ডেশন) জন্য নিচ্ছেন। সংগঠনটি করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল। এখনও বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

তিনি ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ফাউন্ডার হিসেবে আছেন। ওই সংগঠনকে এগিয়ে নিতে এক টাকা করে রোগীদের থেকে নিচ্ছেন। তবে কেউ কেউ ১০-২০ টাকা বা ইচ্ছে মতো দিচ্ছেন।

আশরাফুল ইসলাম নামের এক রোগী গণমাধ্যমকে জানান, “নিঃসন্দেহে এটি অকল্পনীয় উদ্যোগ। ডাক্তারি পেশা নিয়ে এখন সাধারণ মানুষ ইতিবাচক ধারণা পোষণ করতে পারছে না। এমন মানবিক ডাক্তার যে এখনও আছে, এটা দেশের জন্য; সমাজের জন্য সুখকর।”

সুমাইয়ার বাবা মীর মোজাম্মেল আলী বলেন, “ইচ্ছে ছিল আমার চার ছেলেমেয়েকে ডাক্তার বানাবো। তবে আল্লাহর হাজার শুকরিয়া তিন মেয়ে ডাক্তার হয়েছে। তিন মেয়েকেই এমন উদ্যোগ নিতে বলেছি। কিন্তু অন্য দুজন রাজি হয়নি। ছোট মেয়ে রাজি হয়েছে। তবে আশাবাদী আমার তিন মেয়ে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে সাধারণ মানুষকে বিনামূল্যে সেবা দেবে।”

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: