এতিম ফাতেমার দায়িত্ব নিল ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন

তিন বছর আগে বাবা মারা গেছেন কিডনি বিকল হয়ে, সম্প্রতি মা-বোন মারা গেছেন বিষপানে, একমাত্র বেঁচে থাকা শিশু ফাতেমার (৪) দায়িত্ব নিয়েছেন জেলা প্রশাসক। ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের ধলাবাজার সংলগ্ন এলাকায়। গতকাল ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজার রহমানের নির্দেশে ফাতেমার বাড়িতে খোঁজ নিতে যান ত্রিশাল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আক্তারুজ্জামান। এসময় তিনি এতিম ফাতেমার পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলেন।
জাহাঙ্গীর আলম তপু জানান, তিন বছর আগে কিডনি বিকল হয়ে ফাতেমার বাবা সোবহান মিয়া(৩৬) মারা যান। এরপর থেকে বিভিন্নজনের বাড়িতে কাজ করে দুই মেয়ে মরিয়ম ও ফাতেমাকে নিয়ে অনেক কষ্টে দিনযাপন করছিলেন তাদের মা আমেনা খাতুন। সংসারের অভাব-অনটন নিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। এরই মধ্যে তার মাথাটা কেমন করে বলে বিভিন্নজনকে জানিয়েও ছিলেন তিনি।
ছবি – সংগৃহীত
তিনি জানান, গত শুক্রবার চায়ের কথা বলে নিজ ঘরের দরজা বন্ধ করে তার দুই মেয়েসহ নিজেও বিষপান করেন। একপর্যায়ে ৪ বছরের শিশু ফাতেমা তার মার অস্বস্তি হচ্ছে দেখে ভেতর থেকে দরজা খোলে দেয়। বিষয়টি প্রতিবেশীরা জানতে পেরে রাতেই পার্শ্ববর্তী উপজেলা গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে মারা যান আমেনা খাতুন। শিশু মরিয়মকে (১০) গফরগাঁও থেকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করার সময় পথে মারা যায় সে। মা-বাবা, বোনকে হারিয়ে এভাবে একেবারেই অসহায় হয়ে পড়ে শিশু ফাতেমা।
শিশু ফাতেমার দাদা শারাফত মিয়া বলেন, কিছুদিনের ব্যবধানে আমার ছেলে, ছেলের বউ ও বড় নাতিকে হারিয়ে আমি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। আমি একটি মশলার মিলে কাজ করি। উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে এই বয়সে এসে আমার নাতনির ভরণপোষণ করা আমার জন্য কঠিন হয়ে পড়েছিল। জেলা প্রশাসক স্যার দায়িত্ব নেওয়ায় মনে শান্তি পেলাম। মরার আগে এই মাছুম শিশুটির নিশ্চিত ভবিষ্যৎ দেখতে পেয়ে আমি খুব খুশি।
গত মঙ্গলবার বিডি২৪লাইভের বিশেষ প্রতিনিধি সাংবাদিক খায়রুল রফিকের ফেসবুক পেজে এই ঘটনা নিয়ে লাইভ করেন। তাৎক্ষণিক ভিডিওটি ভাইরাল হয়। এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নজরে পরে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাফিজার রহমান ও পুলিশ সুপার মাসুম আহমেদ ভূঁইয়ার নজরে। পুলিশ সুপার তাদেরকে আর্থিক সহযোগিতা করেন। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার দুজনেই আলোচনা করে তার সুন্দর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সকল দায়িত্ব নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজার রহমান স্যারের নির্দেশে আমি বাবা-মা, বোন হারানো ফাতেমার খোঁজ নিতে তার বাড়িতে এসেছি। পরে আমার অফিস নিয়ে এসে প্রাথমিকভাবে কিছু খাদ্যসামগ্রী তার হাতে তুলে দিয়েছি। শিশুটির ভরণপোষণের দায়িত্ব জেলা প্রশাসক স্যার নিয়েছেন।
আশরাফুল/সাএ
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: