সার্ভার হ্যাক করে জন্ম নিবন্ধন তৈরি করতেন তারা!

প্রকাশিত: ২৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০৬:২৬ পিএম

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) জন্ম নিবন্ধন সার্ভার হ্যাক করে ৫৪৮ জনকে সনদ দিয়েছে একটি জালিয়াত চক্র। এই ঘটনায় জড়িত ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন সিটিইউ উপ-কমিশনার মোহাম্মদ মনজুর মোরশেদ। এর আগে, সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দিবাগত গভীর রাতে নগরীর বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার হয়েছেন: মোস্তাকিম (২২), দেলোয়ার হোসাইন সাইমন (২৩), আব্দুর রহমান আরিফ (৩৫) ও মো. জহির আলম নামে ১৬ বছরের এক কিশোর। তাদের কাছ থেকে ৪টি সিপিইউ, ৩টি মনিটর, ১টি স্ক্যানার ও প্রিন্টার ও ৪টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। তাদেরকে খুলশী থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলার বাদী ওই ওয়ার্ডর জন্ম নিবন্ধন সহকারী মো. আনোয়ার হোসেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত শনিবার প্রথম চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জন্মনিবন্ধন সার্ভার হ্যাক হয়। এদিন ২০৭টি জন্মনিবন্ধন সনদ ইস্যু করে হ্যাকাররা। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ২২ জানুয়ারি পাঁচটি ওয়ার্ডের ৫৪৬টি জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি ও ইস্যু করার তথ্য পাওয়া যায়। পরে কাউন্সিলর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।

দেখা যায়, পাঁচটি ওয়ার্ডের মোট ৫৪৬টি জন্মনিবন্ধন সনদ ইস্যু করেছে হ্যাকাররা। এরমধ্যে ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডে সর্বোচ্চ ৪০৮টি, ৪০ নম্বর উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ডের ৮৪টি, ৩৮ নম্বর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডের ৪০টি, ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডে ১০টি এবং ৩২ নম্বর আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের চারটি।

এ বিষয়ে সিটিইউ'র উপকমিশনার মঞ্জুর মোরশেদ সাংবাদিকদের জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা মূলত হ্যাকার চক্রের সদস্য। তাদের কাজ হচ্ছে মাঠ পর্যায়ে জন্মনিবন্ধন প্রত্যাশীদের ডাটা এন্ট্রি করে হ্যাকার গ্রুপের নেক্সট লেভেলে পাঠিয়ে দেওয়া। হ্যাকাররা পরে অবৈধভাবে চসিকের জন্মনিবন্ধন সার্ভারে প্রবেশ করে একটি জাল জন্মসনদ প্রস্তুত করে পুনরায় চক্রের সদস্যদের কাছে প্রেরণ করেন। তবে মূল হ্যাকার ধরা পড়েনি। তাকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।

উপকমিশনার মঞ্জুর মোরশেদ বলেন, অভিযানে জব্দ করা ডিভাইস প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করে হ্যাকিং এর আলামত পাওয়া গেছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। ফেসবুকে জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরির বিষয়ে বিভিন্ন গ্রুপ রয়েছে। ওই গ্রুপে প্রবেশ করে যারা ভুয়া জন্মনিবন্ধন করতে ইচ্ছুক প্রকাশ করে যোগাযোগ করে থাকেন তাদেরকে পরে চক্রের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয়। মাঠপর্যায়েও গ্রাহক সংগ্রহ করে থাকে চক্রের অন্যান্য সদস্যরা। এই পর্যন্ত চক্রটি ৫ হাজারের অধিক ভুয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ সৃজন ও বিতরণ করেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। সারাদেশ একাধিক হ্যাকার চক্র রয়েছে। একেকটি চক্রের সদস্য সংখ্যা ৩০-১০০ জন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: