গরুর জন্য আবাসিক হোটেল

প্রকাশিত: ২৫ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:৫১ পিএম

বিভিন্ন কাজের সূত্রে কারণে অনেক সময়েই আমাদের আবাসিক হোটেলে থাকতে হয়। সাধারনত এখানে খাওয়ার পাশাপাশি থাকার ব্যাবস্থা ও করা হয়ে থাকে। এখানে সবাই বেশ নিরাপদ ভাবেই রাত্রী যাপন করতে পারেন। তবে এর জন্য গুনতে হয় টাকা।

এত দিন শুনে এসেছেন, আবাসিক হোটেলে থাকে মানুষ। তবে অবাক হলেও সত্য রংপুর মহানগরীতে গড়ে উঠেছে ব্যতিক্রমধর্মী এক আবাসিক হোটেল। তবে এই হোটেল মানুষের জায়গায় থাকে গরু। হোটেলটি ইতোমধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অল্প খরচে নিরাপদ নিরাপত্তা বলয়ে গরুর পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও পাচ্ছেন আবাসিক সুবিধা।

এভাবে গরু-মহিষ রাখতে পেরে খুশি ব্যবসায়ীরাও। পাশাপাশিআবাসিক হোটেলগুলো গড়ে উঠার ফলে হাটে যেমন সৃষ্টি হয়েছিল নতুন কর্মসংস্থান, তেমনি ব্যবসায়ীদের জন্য সৃষ্টি হয় নিরাপদ পরিবেশে পশু বেচা-কেনার সুযোগ।  দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীরা রংপুরের হাটগুলো হতে গরু ক্রয় করে ঢাকাসহ অন্যান্য স্থানে নেওয়ার জন্য এখানে গরুকে নিয়ে রাত যাপন করেন। এতে ব্যবসায়ীরা যেমন নির্বিঘ্নে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারছেন। তেমনি তাদের পশুর সেবাও নিশ্চিত হচ্ছে এই আবাসিক হোটেলে। এখানে রয়েছে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা। গরুর সার্বক্ষণিক দেখাশোনা করতে আছেন চারজন কর্মচারী।

ইতিমধ্যে এই হোটেলটির নাম সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। জানা জায়, রংপুর মহানগরীর প্রবেশমুখে মর্ডান মোড়ের ধর্মদাস বারো আউলিয়া এলাকায় গরুর এই আবাসিক হোটেলের অবস্থান। এখন গরু কম হলেও কোরবানি ঈদ এলে এই আবাসিক হোটেলে ব্যবসা আরও জমজমাট হয়ে ওঠে। আবাসিক হোটেলে রয়েছে গরুর জন্য নির্ধারিত স্থান এবং থাকা-খাওয়যায়,র্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা। জানা যায়  রংপুরের বিখ্যাত লালবাগ হাট, বড়াইবাড়ি হাট, শঠিবাড়ি হাট, আমবাড়ি হাট, বেতগাড়ি হাট, বুড়িরহাট, তারাগঞ্জ, মধুপুর, খানসামা, আফতানগরসহ ও আশপাশের জেলার বিভিন্ন হাট থেকে গরু ক্রয় করেন ব্যবসায়ীরা।

এসব আবাসিক হোটেলে রয়েছে গরু, মহিষ ও ছাগলের জন্য নির্ধারিত স্থান অনেকেই সেই গরু ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যান। তবে গরু কিনে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানোর আগে অনেক ব্যবসায়ী বা ক্রেতাই গরুকে ঠিকমতো খাওয়াতে না পারাসহ বিশ্রাম করতে না পেরে হাঁপিয়ে ওঠেন। তাদের সুবিধার্থেই এই আবাসিক হোটেল গড়ে তুলেন সৌখিন এক উদ্যোক্তা। ব্যবসায়ীরা এই আবাসিক হোটেলে এক রাত অথবা দুই রাত গরুকে বিশ্রাম দিয়ে তারপরে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। প্রতিটি গরু বাবদ ৬০ টাকা করে নেওয়া হয়। সেখানে ১০০ গরু রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। রাত্রি যাপনের পরে এখান থেকে ট্রাকযোগে বিভিন্নস্থানে গরু পাঠানো হয়।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে,গরুর জন্য গড়ে তোলা ব্যতিক্রমী এই আবাসিক হোটেলের উদ্যোক্তা আসানুর রহমান। তিনি নগরীর টার্মিনাল বড়বাড়ী দেওডোবা এলাকার বাসিন্দা। সাত-আট বছর আগে মর্ডান মোড় সংলগ্ন বারো আউলিয়া এলাকায় তিনি গরুর হোটেল হোটেলটি তৈরি করেন উদ্যোক্তা আসানুর রহমান। তিনি জানান , এখন শীতকাল তাই গরুর আমদানি কম। তবে এখন প্রতিদিন ৩০-৪০টি গরু তার এই হোটেলে থাকছে। ঝড়-বৃষ্টির সময় গরু নিয়ে খুব বেকায়দায় পড়ত ব্যাপারী ও ব্যবসায়ীরা।এই আবাসিক হোটেল হওয়াতে রোদ-ঝড়-বৃষ্টিতে গরুর কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। ব্যবসায়ী ও ব্যাপারীদের ভোগান্তিও কমেছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: