জবিতে ৩৬ মণ্ডপে সরস্বতী পূজা উদযাপন

প্রকাশিত: ২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ০৬:৫৫ পিএম

সানাউল্লাহ ফাহাদ, জবি প্রতিনিধি: ব্যাপক উৎসাহ, উদ্দীপনা ও আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৬টি পূজামণ্ডপে সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা উদযাপন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় পূজা কমিটির উদ্যোগে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় পূজার আয়োজন করা হয়। এবার পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ (আই.ই.আর, জবি)-সহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ৩৬টি পূজামণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়।

দেবীর চরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, বাণী অর্চনা ও প্রসাদ বিতরণসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে সাড়ম্বরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) উদযাপিত হয় বিদ্যা, বাণী ও সুরের দেবী সরস্বতীর পূজা। পূজা মন্ডপগুলোতে রাখা হয়েছে সৃজনশীলতার ছাপ, স্ব স্ব বিভাগের আদলে সাজানো হয়েছে মন্ডপগুলো। মণ্ডপগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছাড়াও আশেপাশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ও ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মানুষ ভিড় করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. পরিমল বালা বলেন, ‘সরস্বতী পূজার মাধ্যমে অন্ধকার থেকে আলোতে যাত্রার প্রার্থনা করা হয়ে থাকে। প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সারা বিশ্বের অন্ধকার দূরীভূত হবে এবং আলোকিত মানুষ হিসেবে গিড়ে উঠার জন্য প্রার্থনা করা হয় এদিন। সর্বোচ্চ শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে নির্বিঘ্নভাবে যাতে পূজা অনুষ্ঠিত হয় আমরা চেষ্টা করছি।’

এরআগে সকালে সকালে বাণী অর্চনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় পূজার আনুষ্ঠানিকতা।মণ্ডপগুলোতে সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা বিদ্যার দেবীর সামনে প্রার্থনায় অংশ নেন। পূজা শেষে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। পরে বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক মন্ডপগুলো ঘুরে দেখেন। এসময় তার সাথে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালবউদ্দীন আহমদ, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান উপস্থিত ছিলেন।

ছাত্রী হলের মণ্ডপে পূজা করতে আসা শিক্ষার্থী জয়া নাইডু বলেন, ‘বিদ্যা, বানী আর সুরের দেবী সরস্বতী। দেবী খুশি বিদ্যা হলে আমাদের বিদ্যা ও জ্ঞান বৃদ্ধি পাবে, তাই আমরা শিক্ষার্থীরা স্বরসতী দেবীর পূজা করি। সকালে অঞ্জলি দিয়ে, দেবীর কাছে প্রার্থনা করেছি।’

সনাতন ধর্মালম্বীরা ছাড়াও ক্যাম্পাসে সমান উপস্থিতি রয়েছে মুসলিম-খ্রিষ্টান-বৌদ্ধ শিক্ষার্থীদের। মন্ডপে মন্ডপে ঘুরে প্রতিমা ও পূজা দেখে, প্রসাদ গ্রহণ করে সনাতন ধর্মালম্বী সহপাঠীদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করছেন তারা।

পূজা দেখতে আসা প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী বিজন ঘোষ বলেন, সনাতন ধর্মালম্বী সহপাঠীদের বিদ্যার দেবী স্বরসতী পূজা আজ। সহপাঠীদের দাওয়াতে পূজায় এসেছি, মন্ডপ ঘুরছি, খাওয়াদাওয়া করছি। একসাথে এতগুলো মন্ডপ দেখে ভালো লাগছে।সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মাধ্যমে সকল অন্ধকার দূরীভূত হয়ে আলোর পথ প্রসারিত হোক, এটাই স্বরসতী পূজায় প্রত্যাশা।’

রাজধানীর ওয়ারী থেকে পরিবার নিয়ে পূজা দেখতে আসা রিয়া দেবনাথ বলেন, ‘পরিবার নিয়ে মন্ডপ দেখছি। জগন্নাথে একসাথে ৩৬টা মন্ডপ, ডিজাইনগুলোও ব্যতিক্রম, দেখতে ভালো লাগছে।’

নিরাপত্তার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, 'অত্যন্ত সুন্দরভাবে পূজা উদযাপন করতে আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি। নিরাপত্তার জন্য প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ছাড়াও পুলিশ ও সাদা পোশাকে গোয়ান্দা সদস্যরা ক্যাম্পাসে কাজ করছেন।’

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: