প্রধানমন্ত্রী আমাকে পছন্দ করে বলে সরকারি দলের কিছু লোক এ রকম করছে: নজিবুল বশর

প্রকাশিত: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৪:১২ পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক, আশরাফুল ইসলাম: সম্প্রতি বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম-২ আসনের এমপি সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর দুই ছেলেসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের বিরুদ্ধে ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ৩৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

ছেলেদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে গত সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তরিকত ফেডারেশনের এই নেতা। ওই অনুষ্ঠানে মাইজভান্ডারী বলেন, ‘দুদক নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীকে চেনে নাই। যা তা কমেন্ট করছেন সহকারী পরিচালক। চামড়া সব ছিঁড়ে ফেলব। মাইজভান্ডারীর গায়ে হাত!’। সংসদ সদস্যের দেওয়া এমন বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিষয়টি বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চে নজরে আনলে হাইকোর্ট বলেন, 'এমন বক্তব্য দেয়া ঠিক হয়নি। আমরা সকলেই অসহিষ্ণু হয়ে পড়ছি। আমাদের যে ধরনের সভ্য হওয়া দরকার তা হতে পারিনি।' এসব বিষয় নিয়ে সম্প্রতি বিডি২৪লাইভের সাথে একান্তে কথা বলেন সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী।

সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নিয়ে আপনার দেয়া একটি বক্তব্য নিয়ে বেশ সমালোচনা হচ্ছে। বিষয়টি আপনি কিভাবে দেখছেন?

** দেখুন আমার দুই ছেলের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মামলা করা করেছে দুদক। সারা বাংলাদেশ দেখলো আমার দুই ছেলে টাকা লোপাট করেছে। এ পর্যন্ত আমার কাছে অনেক ফোন এসেছে। কয়েক লক্ষ্য মানুষ আমাদের খবর নিয়েছে। মিডিয়ায় ছাপানো হচ্ছে আমার ছেলেরা টাকা আত্মসাৎ করেছে। কিন্তু এই ঘটনারতো আসলে কোনো সত্যতা নাই। ৩৯ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে টাকা জমা দিয়ে দিলে কি আর টাকা আত্মসাত থাকে? ওই মামলায় ৬৫ কোটি টাকা যা জমা হয়েছে দুদক তা গোপন করেছে।

তিনি বলেন, আমি দুদকের বিরুদ্ধে রিট করবো। এছাড়াও দুদকের বৈধতা নিয়েও চ্যালেঞ্জ করা হবে। কারণ ওদের কাজ হচ্ছে সঠিক জিনিসটা খুঁজে বের করা। তারা চাইলে ব্যাংক থেকে তথ্য নিতে পারতো বা অন্যভাবে কাজটি করতে পারতো। কিন্তু তারা আমার ছেলেদের নাম হাইলাইটস করে বলছে অর্থ আত্মসাৎ করেছে। আপনার নামে যদি এরকম মিথ্যা কিছু আসে তাহলে আপনি কি করতেন?

আপনার কাছে কি মনে হয় এগুলোর বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক চক্রান্ত কাজ করছে?

** মনে হওয়াটা স্বাভাবিক। আমিতো ১৪ দলের সাথে আছি। এই মুহূর্তেতো আমি মনে করি আমার বিরুদ্ধে এরকম করা মানে সরকারকে বিব্রত করা। আবার এমনও হতে পারে প্রধানমন্ত্রী আমাকে পছন্দ করে বলে সরকারী দলের কিছু লোক এরকম করছে। তিনি বলেন, আমি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য অনেক কিছু করেছি। আমি শেখ হাসিনার সাথে আছি এবং থাকবো। সরকারের উচিত যারা আমার সাথে এ রকমটা করছে তাদের খুঁজে বের করা।

'আমাকে মুখ খোলাবেন না, বিপদে পড়বেন।' সম্প্রতি আপনি এমন বক্তব্য দিয়েছেন। আসলে আপনি কি জানেন?

** আমি অনেক কিছুই জানি। তবে কিছুই বলতে চাই না।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া আপনার বক্তব্যটি হাইকোর্টের নজরে এসেছে। হাইকোর্ট এতে দুঃখ প্রকাশ করেছে। এ ব্যাপারে আপনি কি বলবেন?

** মহামান্য হাইকোর্ট ঠিক কথাই বলেছেন। আমার যে বক্তব্যটি ছড়িয়ে পড়েছে সেটা কাটিং করে প্রচার করা হয়েছে। আমি একজন ব্যক্তির উদাহরণ টেনে কথাগুলো অনেক গুছিয়ে বলেছিলাম। কিন্তু সেটা কেউ উল্লেখ করেনি। যে কারণে বক্তব্যটি খারপ মনে হয়েছে। তিনি বলেন, আমি নিজেও বিশ্বাস করি যে বক্তব্যটি ছড়িয়ে পড়েছে সেটা আমার মুখে মানায় না। কারণ আমাদের মতো সিনিয়রদের মতো মানুষদের মুখে এমন কথা শোভা পায় না।

সর্বশেষ তিনি বলেন, বিক্ষুদ্ধ জনতা অনেক কথাই বলতে পারে। তাদের সাথে তুলনা করলে তো আমাদের চলবে না। জিনিসটা খুব অসুন্দর। দেখুন আপনার পরিবারের উপর যখন এ রকম মিথ্যা অভিযোগ আসবে আপনি কি করবেন?  বিষয়টি যেভাবে প্রচার হচ্ছে সেটাতে কি আমার সন্মান ক্ষুন্ন হচ্ছে না?

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: