নবীগঞ্জে দু’গ্রামবাসীর সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত দেড় শতাধিক

নবীগঞ্জ-হবিগঞ্জ সড়কের শিবগঞ্জ বাজারে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার (৭ মার্চ) দু’গ্রামবাসীর ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। প্রায় ৩ ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয় পক্ষে কমপক্ষে দেড় শতাধিক আহত হয়েছে। নবীগঞ্জ থানা পুলিশ স্থানীয়দের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। সংঘর্ষ চলাকালে ওই সড়কে প্রায় তিন ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্রসহ ইটপাটকেল ব্যবহার করা হয়েছে। এ সময় সিএনজিসহ বেশ কয়েকটি মিশুক গাড়ী, দোকানপাট ভাংচুর করা হয়েছে। আহতদের সিলেট, হবিগঞ্জ ও নবীগঞ্জ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। গুরুতর আহত ৫০জন কে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় সুত্রে জানাযায়, মঙ্গলবার (৭ মার্চ) সকাল ১১টার দিকে বানিয়াচং উপজেলার হলদারপুর গ্রামের জনৈক টমটম চালক ও নবীগঞ্জ উপজেলার পুরানগাও গ্রামের জনৈক যাত্রীর মধ্যে শিবগঞ্জ বাজারে ভাড়া নিয়ে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে চালক ওই যাত্রীকে ধাক্কা দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’ গ্রামবাসী দেশিও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষই পিকল, টেটাসহ দেশীয় অস্ত্র ও ইটপাটকেল ব্যবহার করে। বাজারে অবস্থিত বাসা বাড়ির ছাদের উপর থেকে বৃষ্টি মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। ফলে পুরো বাজারই রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। প্রায় ৩ ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষের সময় ওই সড়কে যানচলাচল বন্ধ ছিল। সংঘর্ষ চলাকালে ৩টি মিশুক, ২টি সিএনজি গাড়ী ভাংচুর করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি দোকান ভাংচুর লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে।

খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ডালিম আহমদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পৌছে স্থানীয়দের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। এক পর্যায়ে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ রঞ্জন দে, বাহুবলের সার্কেল এসপি আবুল খয়ের, বানিয়াচংয়ের ওসি অজয় রায় ও কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা আব্দুল মুকিত চৌধুরীসহ রাজনৈতিক, সামাজিক নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উভয় পক্ষ থেকে দাঙ্গা হাঙ্গামা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে শিবগঞ্জ বাজারে স্বাভাবিক চলাচলের উদ্যোগ নেন।

আহতদের মধ্যে গুরুতর আহত হাফিজুর রহমান (৩৫), ওহি মিয়া (২১), আলা আমিন (২৩), মামুন আহমদ (২৭) ও সফিকুর ইসলাম (৫১)কে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। অপর আহত ইয়াওর মিয়া (৬০), মেহেদুর রহমান (২৮), হাবিব মিয়া (২০), সাইফুল ইসলাম (২৬), কাওছার মিয়া (৩০), সেলিম উদ্দিন (২২), তাজেল মিয়া (৪৫), রাকু মিয়া (৩৪), এসআই জাহাঙ্গীর আলম (৪০) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্য আহতদের হবিগঞ্জ আধুনিক হাসপাতাল ও সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। বাকি সামান্য আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে হয়েছে।