গুলশানের ফাইভ স্টার রেস্টুরেন্টও অনিয়ম পেয়েছি: ভোক্তার ডিজি

প্রকাশিত: ১০ মার্চ ২০২৩, ০৯:৪৬ পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক, আশরাফুল ইসলাম: সম্প্রতি সুলতান’স ডাইনের বিরুদ্ধে বিড়ালের মাংস দিয়ে কাচ্চি বানানোর অভিযোগ তোলেন একদল ক্রেতা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই ভিডিও মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায় মাংসের হাড় চিকন আকৃতির ছিল। এ বিষয়ে যাচাইবাছাই করতে সুলতান’স ডাইনের গুলশান শাখায় অভিযান পরিচালনা করে নিরাপদ খাদ্য এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

অভিযানকালে সুলতান ডাইন যে সরবরাহকারীর কাছ থেকে মাংস সংগ্রহ করে তাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলে জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তর। দু'পক্ষের সাথে কথা বলার পর ২৫ কেজি খাসির মাংসের গড়মিলও পাওয়া যায়। এ ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে শুধু কি সুলতান’স ডাইনে এমন বাজে খাবার সরবরাহ করা হয়? বাকিদের অবস্থা কি?

বাংলাদেশে হঠাৎ সবকিছুর বাজারদর ঊর্ধ্বমুখী ও সুলতান’স ডাইন কান্ড নিয়ে বিডি২৪লাইভের সাথে একান্তে কথা বলেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান।

* সম্প্রতি বিড়ালের মাংস দিয়ে কাচ্চি বানানোর অভিযোগ পাওয়ার পর সুলতান’স ডাইন ছাড়াও অন্য কোনো রেস্টুরেন্টে অভিযান পরিচালনা করেছেন?

" হ্যাঁ। সুলতান’স ডাইন ছাড়াও 'কাচ্চি হাউজ' নামের একটি রেস্টুরেন্টে অভিযান পরিচালনা করেছি। আসলে এই বিষয়গুলো আমাদের দেখার কথা না। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এ ধরণের অভিযান পরিচালনা করে থাকে। যেহেতু সুলতান’স ডাইনের বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে তাই বিষয়টা নিয়ে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) গুলশানে তাদের রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলাম। আগামী সোমবার তাদের আমাদের অফিসে ডেকেছি।

" আমরা আসলে এটা মনিটর করছি। তবে সেটা কিসের মাংস ছিলো তার পরীক্ষা করবে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। আমাদের কাছে পরীক্ষা করার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নেই। আমরা শুধু দেখবো যে তাদের খাবারের মাধ্যমে ভোক্তার কোনো স্বাস্থ্য ঝুকি রয়েছি কি না। আমাদের এই অভিযান অব্যহত থাকবে। তবে আমাদের মূল ফোকাস কিন্তু রেস্টুরেন্ট না এটা একটা অংশ মাত্র। মূলত এই সব ব্যাপার গুলো দেখে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ তারপরেও যদি আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসে আমরা ব্যাবস্থা গ্রহণ করবো।

* বড় বড় রেস্টুরেন্ট ছাড়াও শহরের অলিতে-গলিতে যেসব বিরিয়ানি হাউজ আছে সেগুলোর বিরুদ্ধেও বিস্তর অভিযোগ আছে। তাদের বিরুদ্ধে আপনাদের পদক্ষেপ কি?

" আসলে আমরা জানি ছোট ছোট বিরিয়ানি হাউজগুলোতে ব্যাপক অনিয়ম হয়। আমাদের লোকবল কম থাকার কারণে তাদের বিরুদ্ধে সেইভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারছি না। তবে আমারা যখনি কোনো অভিযোগ পায় সেটার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করি। আসলে এমন কোনো রেস্টুরেন্ট নাই যেখানে অনিয়ম নাই। দেখেন গুলশান- ২ এর একটা ফাইভ স্টার রেস্টূরেন্টে অভিযান চালিয়ে সেখানেও অনিয়ন পেয়েছি। আমাদের পক্ষ কি সব জায়গায় চোখ রাখা সম্ভব? আমাদের কিছু লিমিটেশনতো থাকেই।

" আমরা ব্রয়লার মুরগী নিয়ে সম্প্রতি অনেকগুলো অভিযান পরিচালনা করেছি। দেখেন এগুলো দেখার দায়িত্ব নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের হয়তো তারা এগুলো নিয়ে কাজ করছেন। তবে ভোক্তার স্বার্থে আমাদের এগুলো নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। এ সংকান্ত একটা রিপোর্ট রেডি করছি সেটা আমাগী রবিবার সরকারের কাছে প্রেরণ করবো। আসলে আমরা চেষ্টা করছি কিভাবে পরিস্থিতি ভালো করা যায়।

* সামনে রামাদান মাস বাজার নিয়ন্ত্রণে আপনাদের পদক্ষেপ কি?

" দেখুন সবাই আমাদের কাছে অভিযোগ দেয় কারণ আমরা মাঠে কাজ করি বা থাকি। আমরা সব সময় চেষ্টা করি কিভাবে অবস্থার উন্নতি করা যায়। কদিন আগে আমি নিজে একাধিক অভিযান পরিচালনা করেছি। আমি বোঝার চেষ্টা করেছি বাজারের পরিস্থিতিটা আসলে কেমন। সেই আলোকে কাজ করে যাচ্ছি। দেখুন একটা জিনিস সবার বোঝা উচিত আমরাতো রাষ্ট্রের একটি অংশ মাত্র চাইলেও সব নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনা। দেখেন আমরা যেখানে যাবো এমন কোনো জায়গা নাই যেখানে দু চারটা রেস্টুরেন্ট পরিস্কার বা মানসম্মত খাবার দিচ্ছে। সব জায়গায় অনিয়ম।

* আপনারা বর্তমানে কি ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছেন?

" দেখুন আমরা বাজারে বাজারে যাচ্ছি সবাইকে সচেতন করছি। যেসব দোকানে মুল্য তালিকা নাই সেখানে অভিযান চালাচ্ছি। ফেসবুক-ইউটিউবে প্রচারণা চালাচ্ছি। সেগুলো মানুষ দেখছে ও সচেতন হচ্ছে। সেগুলো দেখে অনেকে আমাদের কাছে অভিযোগ দেয় আমরাও তাদের অভিযোগ আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: