নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব চৌমুহনী, নিষ্ক্রিয় প্রশাসন

নোয়াখালী চৌমুহনীতে অবৈধ ও নিষিদ্ধ পলিথিন কারখানা সয়লাবে ছেয়ে গেছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই, নেই কোনো অনুমোদন তাহলে প্রশাসনের নাকের ডগায় কিভাবে চলছে নিষিদ্ধ পলিথিন কারখানা এ নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এছাড়াও চৌমুহনীসহ বিভিন্ন স্থানে গোপনে গড়ে তোলা হয়েছে নিষিদ্ধ পলিথিনের কারখানা। এসব কারখানা থেকে বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়ছে নিষিদ্ধ পলিথিন।চৌমুহনী থেকে বিভিন্ন জেলা, উপজেলা,ইউনিয়ন ও কাঁচাবাজারে। এমন এলাকা পাওয়া দুষ্কর যেখানে পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার নেই। এর ব্যবহার চলছে দেদারছে। শহর কিংবা গ্রামের মধ্যে কোনো তফাত নেই, সব জায়গায় ক্রেতারা বাজার করতে যায় খালি হাতে।আর ফিরে আসে পলিথিনের ব্যাগভর্তি বাজার নিয়ে। অনেক অসাধু ব্যবসায়ী গোপনে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন ও বাজারজাত করছেন। তবে নিয়মিত অভিযান না থাকায় পলিথিনের বিক্রি ও ব্যবহার আগের তুলনায় অনেকাংশে বেড়ে গেছে। ফলে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা বাড়ছে।
চৌমুহনীতে বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, অভিজাত রেস্টুরেন্ট, মুদি দোকান, কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে ফুটপাতের প্রায় সব দোকানের পণ্য বহনে ব্যবহৃত হচ্ছে পলিথিন ব্যাগ। সহজলভ্য ও ব্যবহারে সুবিধা থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই ক্ষতির দিক বিবেচনা না করে পলিথিন ব্যাগ দেদারছে ব্যবহার করছেন।
তবে পরিবেশবিদরা বলছেন, নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহারে শাস্তির বিধান রেখে আইন করা হলেও কমেনি পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার। পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যবহারে পরিবেশের ক্ষতির কথা চিন্তা করে ২০০২ সালে পলিথিন নিষিদ্ধ করা হয়। তখন বিকল্প হিসেবে কাগজ ও পাটের ব্যাগের প্রচলন শুরু হয়।পরবর্তী সময়ে আইনের প্রয়োগ না থাকায় পলিথিন বিক্রি ও ব্যবহার বেড়েছে জ্যামিতিকহারে।পলিথিন ব্যাগ বন্ধের আইন ও বিধিমালা রয়েছে।যারা এটা কার্যকর করবে তারা এটা করছে না। পরিবেশ অধিদপ্তরের নিয়মিত মনিটরিং ও অভিযান না চলার কারণে প্রকাশ্যে ব্যবহার হচ্ছে পলিথিন।
জানা যায়, গেলো বছর ২০২২ সালের ১৬ মার্চে চৌমুহনী দক্ষিণ বাজারের একটি কারখানায় অভিযান চালিয়ে একটি অবৈধ পলিথিন কারখানাকে ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছিলো বেগমগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ কামরুল হাসান চৌধুরী।পরের মাসে (২৫ এপ্রিল) সোমবারে বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুন্নাহার চৌমুহনী বিসিকে নিষিদ্ধ পলিথিন তৈরির করার অভিযোগে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে এসপি প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং কারখানাকে ১ লাখ টাকা, ভাই ভাই প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংকে ১ লাখ ও আল মদিনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং কারখানাকে ৫০ হাজার টাকাসহ মোট ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করে।কিন্তু অভিযান পরবর্তী কারখানাগুলো ফের নিষিদ্ধ পলিথিন তৈরি করছে প্রশাসনের নাগের ডগায়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, চৌমুহনী শ্রী শ্রী রামঠাকুর মন্দির গেটের পূর্ব গলিতে একটি পলিথিন কারখানা রয়েছে।চলে নিষিদ্ধ পলিথিন তৈরি। নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও অনুমতি।কারখানার মালিক জানায় প্রশাসন অভিযান দিয়ে জরিমানা করে টাকা নিয়ে যায়। গোপনে পলিথিন তৈরি তারা।সব জায়গায় তৈরি হলে এখানে উৎপাদন হতে সমস্যা নেই তার। এসব নিউজ করে কোনো লাভ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এক পর্যায়ে সবার সাথে যোগাযোগ আছে বলেও জানান তিনি। অপরদিকে চৌরাস্তা বিসিক নগরীর ভিতরে কয়েকটি নিষিদ্ধ পলিথিন কারখানা রয়েছে। পাশাপাশি দক্ষিণ গোলাবাড়িয়াও কয়েকটি নিষিদ্ধ পলিথিন কারখানা রয়েছে। সিলগালা না করায় অভিযানের পর ফের চালু করে পলিথিন তৈরি করে এসব কারখানা। অনেকের মতে প্রভাবশালী ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই নাকি চলে এসব কারখানা।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের নোয়াখালী জেলার সহ-পরিচালক তানজিল তারেক বিডি২৪লাইভকে বলেন, নিষিদ্ধ পলিথিন কারখানাগুলোতে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। মূল ব্যবসায়ীরা কৌশল পাল্টিয়ে ভ্রাম্যমাণভাবে পলিথিন উৎপাদন করছে। আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। নিষিদ্ধ পলিথিন কারখানাগুলোতে মোবাইল কোর্ট করে জরিমানা করা হয়েছে। অনেক কারখানা সিলগালাও করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বিডি২৪লাইভকে বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অনেক কারখানার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চৌমুহনীসহ অন্যান্য জায়গায় নিষিদ্ধ পলিথিন কারখানায় অভিযান করা হয়েছে। অনেক কারখানা বন্ধ করা হয়েছে।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: