নামে বিজ্ঞানাগার কাজে নেই

কাগজে কলমে নামে আছে বিজ্ঞানাগার কিন্তু কাজে নেই। সেই সাথে প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে প্রায় ১০ লাখ টাকার বিজ্ঞানাগারের যন্ত্রপাতি ৮ বছর ধরে তালাবদ্ধ রয়েছে প্যাকেটবন্দী। এমন ঘটনাটি অভিযুক্ত হয়েছেন পঞ্চগড় সদর উপজেলার কাজীপাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোমকিন আলম মুকুল। বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা শেখা তো দূরের কথা কোনদিন বিজ্ঞানের কোন যন্ত্রাংশ দেখতেও পায়নি দীর্ঘদিনেও। বছরের পর বছর প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে রাখায় যন্ত্রাংশগুলো এখন আর ব্যবহার করা যাবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় পঞ্চগড় সদর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম কাজীপাড়া। এই এলাকার বেশিরভাগ মানুষ শ্রমজীবী ও দরিদ্র। আশপাশে ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় তাদের সন্তানদের মাধ্যমিক পাঠ চলে কাজীপাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ৮ জন শিক্ষক ২ জন কর্মচারী রয়েছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় দুই শতাধিক হলেও। নিয়মিত ক্লাশ করে তার অর্ধেকেরও কম। ২০১৬ সালে বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের পড়ানোর জন্য প্রায় ১০ লাখ টাকার মূল্যবান জিনিসপত্র সরবরাহ করা হয় বিদ্যালয়টিতে।
কিন্তু প্রধান শিক্ষক তোমকিন আলম মুকুল সব জিনিসপত্র নিজের বাড়িতে নিয়ে একটি কক্ষে তালাবন্ধ করে রাখেন। তারপর পেরিয়ে গেছে প্রায় ৮ বছর। সেই তালা খোলেনি। বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা না পেয়েছে কোন কিছু শিখতে না পেরেছে জিনিসগুলো দেখতে। প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে এখনো প্যাকেটবন্দি অবস্থায় রয়েছে মূল্যবাদ জিনিসপত্রগুলো। কোনদিন তা বিদ্যালয়ে এনে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেয়া হয় নি। বিদ্যালয় প্রধানের এমন দায়িত্বহীন কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। গত এসএসসি পরীক্ষায় ওই বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ৫ জনসহ ২০ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। তার মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৩ জন। তবে তাদের ফলাফল সন্তোষজনক নয়।
ওই বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী সুমা আক্তার বলেন, বিজ্ঞানের কোন জিনিসপত্র আমরা কোনদিন দেখিনি। আছে কিনা তাও আমরা জানি না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক জানান, বিদ্যালয়টিতে দিন দিন লেখাপড়ার মান কমে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের তথ্য প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানে দক্ষ করে এগিয়ে নেয়ার কোন উদ্যোগ নেই প্রতিষ্ঠানটির। বিজ্ঞানাগারের জন্য দেয়া জিনিসপত্র তালাবন্ধ হয়ে রয়েছে প্রতিষ্ঠান প্রধানের বাড়িতে। এখন মনে হয় না সেসব যন্ত্রাংশ আর ব্যবহার করা যাবে। আসলে বিদ্যালয়গুলোতে কর্তৃপক্ষের দুর্বল মনিটরিং ব্যবস্থার কারণে এমন নাজুক অবস্থা তৈরি হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোমকিন আলম মুকুল বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে কোন বিজ্ঞানাগার নেই। তাই জিনিসগুলো আমার বাড়িতে নিয়ে রেখেছি। আমাদের বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট। তার পাশাপাশি শ্রেণিকক্ষেরও সংকট রয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে ওইসব জিনিসগুলো বাড়িতে রাখা হয়েছে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহীন আকতার বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি তদন্ত করার জন্য সদর উপজেলা মধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: