মেডিকেলে চান্স পেয়ে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আব্দুর রহমান

প্রকাশিত: ১৯ মার্চ ২০২৩, ০৫:৪২ পিএম

কৃষক আবদুস সালামের ছেলে আবদুর রহমান মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সাতক্ষীরা সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তার পরিবারে। দেখা দিয়েছে মেডিকেলে ভর্তি হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা।

আবদুর রহমানের বাবা আবদুস সালাম বলেন, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। তিনি আমার ছেলেকে ডাক্তার হওয়ার একটি সুযোগ করে দিয়েছেন। আমি গরিব মানুষ, সামান্য জমিতে চাষাবাদ ও কৃষিকাজ করে সংসার এবং ছেলের পড়ালেখা খরচ চালিয়ে আসছি। এখন ছেলেকে মেডিকেল কলেজে ভর্তি করাতে হবে। ভর্তির জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, তা অল্প সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা করা আমার জন্য খুবই কঠিন হবে। তাই আল্লাহর ওপর ভরসা করা ছাড়া আমার আর কোনো উপায় নেই।

আবদুর রহমান বলেন, আমার বাবার তেমন কোনো সম্পদ নেই। দাদার কাছে থেকে দেড় বিঘার মতো জমি পেয়ে ছিলেন। সেখানেই চাষাবাদ করে সংসার এবং আমার লেখাপড়ার খচর চালিয়েছেন। আমাকে নিয়ে বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিলো, পড়ালেখা করে একজন ভালো চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করতে হবে। মেডিকেলে ভর্তির সুযোগের মধ্যদিয়ে বাবা-মায়ের সেই স্বপ্নের দুয়ার খুললেও অর্থ সংকটে দুচিন্তায় পড়তে হয়েছে আমার পরিবারকে। চলতি মাসের ২৭ তারিখ ভর্তির সময় দিয়েছে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে দুচিন্তায় আছি।

সাপাহার আল হেলাল ইসলামী একাডেমি অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাহবুবুর আলম বলেন, আবদুর রহমান একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। সে অত্র বিদ্যালয় থেকে জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-গোল্ডেন ‘এ’ প্লাস পেয়েছিল। বর্তমানে আবদুর রহমান মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। তার এই কৃতিত্বে আমরা গর্বিত। আবদুর রহমান একজন ভালো চিকিৎসক হয়ে দেশ ও জাতীর কল্যাণে অবদান রাখবে বলে আশা করছি।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবদুল্যাহ আল মামুন জানান, মেডিকেলে ভর্তির বিষয়ে আব্দুর রহমানের পরিবার যদি কোনোরকম কোনো সহযোগিতা চেয়ে যোগাযোগ করে, তা যাচাই করে সরকারি সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি ব্যক্তিগত ভাবেও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।

জানা যায়, সামান্য কৃষিজমি থেকে স্বল্প আয় দিয়ে ছয় সদস্যের পরিবারের সংসার চালানোর পাশাপাশি ছেলে আবদুর রহমানের পড়ালেখার খরচ চালিয়ে আসছেন কৃষক আবদুস সালাম। আব্দুস সালাম ও সামেছা বেগম দম্পতির পরিবারে দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে আবদুর রহমান দ্বিতীয়।

এর আগে আবদুর রহমান সাপাহার উপজেলার আল হেলাল ইসলামী একাডেমি অ্যান্ড কলেজ থেকে জেএসসিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে একই প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসিতে জিপিএ-গোল্ডেল ‘এ’ প্লাস পেয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়। এরপর রাজশাহী নিউ গর্ভমেন্ট ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসিতেও গোল্ডেন ‘এ’ প্লাস অর্জন করেন। এবারে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সাতক্ষীরা সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: