জুড়ীতে আলো দেখাচ্ছে কিশোর-কিশোরী ক্লাব

প্রকাশিত: ২০ মার্চ ২০২৩, ১২:৫০ পিএম

মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের অধীনে ৬টি কিশোর-কিশোরী ক্লাব গড়ে উঠেছে। উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নে গড়ে উঠা এসব ক্লাবগুলো উপজেলার কিশোর কিশোরীদের আলো দেখাচ্ছে। ওইখানে প্রতি শুক্রবার ও শনিবার সপ্তাহে দুই দিন গান, কবিতা আবৃত্তি ও জেন্ডার বিষয়ে শিখছে শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে সমাজসচেতন হচ্ছেন তারা। বাল্যবিয়ে, মাদকবিরোধী নানা বিষয়ে জ্ঞানার্জন করছে ক্লাব সদস্যরা।

উপজেলা মহিলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি ক্লাবে ২০ জন কিশোর ও ১০ জন কিশোরীসহ মোট ৩০ জন কিশোর-কিশোরী নিয়ে গঠন করা হয়েছে ক্লাব। ক্লাবে পাঠদানের জন্য নিয়োজিত রয়েছেন ১১ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। এরমধ্যে দুই জন পুরুষ ৪ ও ৭ জন নারী শিক্ষিকা রয়েছেন। তদারকির জন্য রয়েছেন একজন জেন্ডার প্রমোডর, একজন ফিল্ড সুপারভাইজার এবং কো-অর্ডিনেটর হিসেবে স্ব স্ব ওয়ার্ডের একজন জনপ্রতিনিধি।

এদিকে কাজের সার্বক্ষণিক তদারকি ও দেখভাল করেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিস। ১১ থেকে ১৮ বছর বয়সের কিশোর-কিশোরীরা ক্লাবের সদস্য হয়ে শিখছে গান, কবিতা আবৃত্তি, জেন্ডার বিষয়সহ নানা বিষয়। প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতি ও শুক্রবার বিকালে দুই ঘণ্টা করে এসব শিখছে। তাছাড়া প্রতি মাসে দুই দিন তাদের কারাতেও শিখানো হয়।

সরেজমিনে উপজেলার দক্ষিণ জাঙ্গিরাই মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হরিরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কিশোর-কিশোরী ক্লাবে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা মনোযোগসহকারে গান শিখছে। এই ক্লাবের শিক্ষার্থীদের সরব উপস্থিতিতে শেখানো হচ্ছে গান ও আবৃত্তি। শেখার খুব আগ্রহ এখানকার কিশোর-কিশোরীদের।

ক্লাবে আসা কিশোর কিশোরীরা জানান, এখানে এসে আমরা গান ও নাচ আবৃত্তি শেখার পাশাপাশি জেন্ডার বিষয়ে নানা ভাবে সচেতনতা হচ্ছি। এছাড়া বাল্য বিয়ে ও নারী নির্যাতনের বিষয়ে সচেতন হওয়ার মাধ্যমে কোথাও কারো বাল্য বিয়ে হলে প্রশাসনের সহযোগিতায় বন্ধে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারছি। এই ক্লাবের মাধ্যমে আমরা জানতে পারছে ৯৯৯ কল দিলে কী হয়, কী কী সরকারি সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিসের ফিল্ড সুপারভাইজার মো. সুজাউদ্দৌল্লা জানান, উপজেলায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে কিশোর-কিশোরী ক্লাব। নামমাত্র সম্মানিতে শিক্ষক-শিক্ষিকারা শিক্ষাদানের মহৎ কাজটি করে চলেছেন। তাছাড়া এসব ক্লাবে নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে। ফলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কোনো ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ নেই।

এ ব্যাপারে উপজেলা নিবার্হী অফিসার রঞ্জন চন্দ্র দে বলেন, উপজেলায় ছয়টি কিশোর কিশোরী ক্লাব রয়েছে। এ ক্লাবে শিশুদেরকে সাংস্কৃতিক বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এখানে তারা গান, আবৃত্তি, নৃত্য শিখছে। শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে কিশোর কিশোরী ক্লাব অগ্রণী ভূমিকা পালন করার পাশাপাশি সামাজিক সমস্যা যেমন বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে কাজ করছে। সর্বোপরি কিশোর কিশোরী ক্লাবের সদস্যরা রাষ্ট্র ও সমাজ উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে।

উল্লেখ্য, সারা দেশে ৪ হাজার ৫৫৩ টি ইউনিয়ন ও ৩৩০টি পৌরসভার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কিশোর–কিশোরী ক্লাব পরিচালনা করা হয়। প্রতিটি ক্লাবে ৩০ জন করে কিশোর-কিশোরী সদস্য রয়েছে। প্রতি শুক্র ও শনিবার আবৃত্তি, গান ও কারাতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রান্তিক কিশোর-কিশোরীদের জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে সক্ষম করার বিষয়ে সচেতন করাও এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: