‘সরকার ঘর দেছে বলেই আমরা মায়ের কোলে চলে যাচ্ছি’

বাপ দাদার আমল থেকে অন্যের জায়গায় বসবাস করে আসছেন তারা। ঝড়ে শাড়ি আঁচল অন্যের বেড়ায় উড়ে চলে গেছে এমন দিন কেটেছে তাদের। বৃষ্টি সময় থালা নিয়ে ঘরের ভিতরে দাঁড়িয়ে থাকতে হত। এক চালার ভিতরে মধ্যে বেড়া দিয়ে বেশ কয়েকটি পরিবার বসবাস করতে হত। কাউকে বারান্দায় রাত্রি যাপন করতে হত। এক চুলায় তিন পরিবারকে রান্না করে খেতে হত। এক জনের রান্না শেষ করে অন্য আরেক জন রান্না করত। এভাবে করে তাদেরকে মানবেতর জীপন যাপন করতে হত।
এসব বলছি দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার ৪ নম্বর আটগাঁও ইউনিয়নের মোল্লা পাড়ার ৪৫ ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্টি পরিবারের কথা।তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের বরাদ্দের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার দুই শতক জমিসহ নতুন ঘর পাচ্ছেন। এবার বোচাগঞ্জ উপজেলায় চতুর্থ পর্যায়ে ১৫০ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহার জমি সহ ঘর পাবেন।
বুধবার (২২ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে একযোগে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।এ কার্যক্রমের আওয়াত ওদিন সারাদেশে প্রায় ৩৯ হাজার ৩৬৫টি পরিবারকে ঘর ও প্রত্যক পরিবারে জন্য দুই শতক জমি হস্তান্তর করবেন।এছাড়াও সারাদেশে ৭টি জেলা ও ১৫৯টি উপজেলা ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত ঘোষনা করবেন।
উপকারভোগী মেঘিয়া ঋসি (৮০) বলেন, এক ঘরে তিন পরিবার পর্যন্ত থাকতে হয়েছে। খুব কষ্ট হত আমাদের।এক চুলায় তি পরিবার পাক করতে হত। লোক সংখ্যা বেশি হওয়াতে বারান্দায় ঘুমাইছি। সরকার ঘর দেছে বলেই আমরা মায়ের কোলে চলে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী জন্য দোয়া করি ওনাকে ভালো রাখুক। প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ।
খাটু ঋসি (৭৫) বলেন, বাপ দাদার আমলে এই জায়গার রেল লাইনে কাজ করেছিল। হামরা তখন থেকে আছি। এখন সংসার বড় হওয়া অনেক কষ্ট করে থাকতে হত। চারদিক মানুষের জমি থাকায় কোথাও গরু ছাগল বাধার মত জায়গায় ছিল না। হামার ঘরে প্রধানমন্ত্রী ঘর দেছে এটা কোনদিন চিন্তা করিবা পারি নাই। এই সরকারে মত কোন সরকার হামার ঘরে এত উপকার করে নাই।
মোমিতা ঋসি বলেন, পানি হলে আমরা থালা নিয়ে দাঁড়াই থাকতাম। যাওয়ার মত কোন জায়গায় ছিল না। ঝড় বাতাসে আমার শাড়ির আচল অন্যের ঘেরা বাড়ি চলে গেছে এমনো দিন কাটায়ছি। এখন আমরা জমি সহ পাকা ঘর পাছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ।
৬ নম্বর রনগাঁও ইউনিয়নের উপকারভোগী আব্দুস শহীদ ও ফুল বাবু বলেন, আমরা পাকা ঘরে শুয়ে থাকবো। এটা আমাদের ধারনা ছিলো না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের জন্য এত বড় চিন্তা করে ঘরে দিচ্ছে। আমরা দোয়া করি প্রধানমন্ত্রী আল্লাহ সুস্থ রাখুক।
এবিষয় বোচাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছন্দা পাল জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প আশ্রয়ণ-২ এর উপকারভোগী বাছাইএ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সহ উপজেলার সর্বসাধারণের প্রচেষ্টায় আমরা উপজেলার ভূমিহীন ব্যক্তিদের বাছাই করেছি এবং তাদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করেছি। রেলের জমি এবং অন্যের জমিতে বসবাস করা এই পরিবারগুলোর সকলের একত্রে থাকার প্রত্যাশা অনুযায়ী আমরা হাটরামপুর মৌজার খাস জমি নির্বাচন করি এবং এখানে তাদের পুনর্বাসন করি। এছাড়া ঘরের পাশাপাশি তাদের জীবিকার উন্নয়নে কিছু কার্যক্রম গ্রহণের আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।
উল্লেখ, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী উপহার ঘর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের বরাদ্দের আওতায় প্রথম পর্যায়ে ৪৩০,দ্বিতীয় পর্যায়ে ১০০, তৃতীয় পর্যায়ে ১৭০ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে দুই শতক জমিসহ নতুন ঘর পেয়েছে। এবার প্রধানমন্ত্রী উপহার ঘর চতুর্থ পর্যায়ে ১৫০ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে দুই শতক জমিসহ নতুন ঘর পাচ্ছেন।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: