রাবির জিয়া হলে খাবার তালিকায় মুরগির বদলে গরুর মাংস

আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। বাদ যায়নি ব্রয়লায় মুরগিও। মাসের ব্যবধানে আকাশচুম্বী দাম বেড়েছে ব্রয়লারসহ বিভিন্ন মুরগির। ফলে মেসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের খাদ্য তালিকায় বাদ যাচ্ছে মাছ-মুরগি। ডিম-সবজি খেয়েই দিন পার করছেন তারা।
এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ জিয়াউর রহমান হলের ডাইনিংয়ে খাবারের তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে মুরগি মাংস। এখন গরুর মাংস দিয়েই ডাইনিং চালাচ্ছেন মালিকরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, কিছুদিন আগেও খাবারের তালিকায় মুরগির মাংস ছিল। এখন মুরগির পরিবর্তে গরুর মাংস দিয়ে ডাইনিং চলছে। দুপুরের খাবারের জন্য ডাইনিংয়ে সারিবদ্ধ ভাবে মাংসের বাটি রাখা আছে। ঝোলভর্তি সেই বাটিতে আছে ছোট আকারের এক টুকরো গরুর মাংস আর এক বা দু পিস আলুর টুকরো। এ দিয়েই পেটপুরে খাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে বলে জানান ডাইনিং মালিকরা।
লতিফ হলের আবাসিক ছাত্র হাসান তানভিরুল রাকিব বলেন, ‘দাম যেভাবে বাড়ছে মাছ-মাংস খাওয়াটাই অস্বাভাবিক হয়ে গেছে। এতকিছুর পরও আমরা গরুর মাংস দিয়ে খেতে পারছি তাতেই আলহামদুলিল্লাহ। মুরগির চেয়ে গরুর মাংসের ঝোল অনেক ভালো।’
শুধু জিয়া হল নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে আগে গরু দেওয়া হতো না। এখন ব্রয়লারের দাম বেড়ে যাওয়ায় মুরগির বদলে গরুর মাংস খাওয়ানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
এ বিষয়ে কথা হয় শহীদ জিয়াউর রহমান হলে ডাইনিংয়ের প্রধান দেলওয়ার হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ব্রয়লার মুরগির দাম এখন অনেক বেড়ে গেছে। ২৬০-২৭০ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে। এক কেজি ব্রয়লার কিনলে ৬০০ গ্রাম মাংস পাওয়া যায়। মুরগির পিস এতো ছোট করলে শিক্ষার্থীদের বিমুখ পরিবেশ দেখা যায়। তাই মুরগির বদলে গরুর মাংস দিয়ে ডাইনিং চালাচ্ছি। গরুর পিস ছোট হলেও শিক্ষার্থীরা সেটাকে ভালোভাবেই নিচ্ছেন। আমাদের সমস্যাটাও তাদের বুঝতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই সবসময় তাদের ভালো খাবার খাওয়াতে। কিন্তু তা পারছি না। কোথায় মুরগি কিনেছি ১২০-১৪০ টাকা এখন দাম বেড়ে ২৬০-২৭০ টাকা কেজি হয়েছে। দাম স্বাভাবিক হলে আবারও মুরগির মাংস খাবারের তালিকায় রাখবো।’
এদিকে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হোটেলগুলোতেও খাবারের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। মাছের দাম আগে ৩৫-৪০ টাকা হলেও এখন ৫০-৫৫ টাকা রাখা হচ্ছে। মুরগির ক্ষেত্রেও ১০-১৫ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করছেন দোকানিরা। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি হলের ক্যান্টিনেও মুরগির তরকারিতে আনা হয়েছে দামের পরিবর্তন।
টুকিটাকি চত্বরের মনির নামে এক হোটেল মালিক বলেন, ‘দামের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে আমাদের লোকসান হলেও ব্যবসা চালিয়ে যেতে হচ্ছে। দাম বাড়ালেও আগের মতো আমাদের ব্যবসা হচ্ছে না। আগে শিক্ষার্থীরা বেশি খরচ করতো। এখন দাম বাড়ার ফলে তারাও খরচ কমিয়ে দিয়েছে।’
দুসপ্তাহ ধরে সকালের খাবার বাদ দিয়ে দুবেলা খেয়ে দিন পার করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান মাহমুদুল। তিনি বলেন, সবকিছুর দাম বাড়লেও বাড়ি থেকে টাকা পাঠানোর পরিমাণ বাড়েনি। অভাবের সংসারে বাবা যা দেয় তা দিয়ে আগে তিনবেলা খেতে পারলেও এখন আর সম্ভব হচ্ছে না। এখন দুবেলা খেয়ে দিন পার করছি।
শাকিল/সাএ
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: