এ ঘটনা আমাদেরকে আরও অন্ধকারের দিকে নিয়ে গেল: ফারুকী

প্রকাশিত: ৩০ মার্চ ২০২৩, ১০:৩০ পিএম

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া উত্তাল। নেটিজেনদের সিংহভাগই তার পক্ষে আওয়াজ তুলেছেন। বিষয়টি নিয়ে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন দেশের খ্যাতিমান নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

এই নির্মাতার মতে, সব রাস্তা বাদ দিয়ে যে রাস্তা বেছে নেওয়া হয়েছে, সেটা দেশের জন্য ভয়ংকর।

পাঠকদের জন্য ফারুকীর স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

যে বা যারা প্রথম আলোর সাংবাদিক এবং সম্পাদকের বিরুদ্ধে জিনিসটা মামলা পর্যন্ত নিয়ে গেলেন, জেনে রাখবেন এটা আমাদেরকে আরও অন্ধকারের দিকে নিয়ে গেল। আমি ঐ খবরটা নিয়ে আলোচনায় আর না যাই। কারণ অনেক কথা ইতিমধ্যেই হয়েছে। শুধু এইটুকু বলি, সংবাদ নিয়ে যে কেউ সংক্ষুব্ধ হতে পারেন। সেটা ডিল করার অনেক রাস্তাও আছে। সব বাদ দিয়ে যে রাস্তাটা বেছে নেওয়া হয়েছে, এটা দেশের জন্য ভয়ংকর।

সরকারের পিআর অ্যাংগেল থেকেও যদি বলি, এই রিঅ্যাকশনের মাধ্যমে ‘চাইল-ডাইল-মাংসের’ স্বাধীনতা চাই শ্লোগানটার মধ্যে আরও কয়েক হাজার গুণ বেশি শক্তি ইনজেক্ট করা হলো। আশা করবো, শুভ বুদ্ধির উদয় হবে এবং এই অতি উৎসাহের রাশ টেনে ধরা হবে।

আবারও বলছি, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল করেন! আমি সবসময় এই কথাটা বলি- ভাইয়েরা এবং বোনেরা আমার, আইন করার সময় এই জিনিসটা মাথায় রাখবেন যে, আইনটা আপনার বিরুদ্ধে প্রয়োগ হলে আপনার অবস্থাটা কি হবে। মানে আপনি যখন ক্ষমতায় থাকবেন না, তখন এই আইন আপনার কাছে কিভাবে ফিরে আসবে, এটা মাথায় রেখে যে আইন করা হয় সেটাই তুলনামূলক উত্তম আইন। মনে রাখবেন, ‘চিরদিন কারও নাহি যায় সমান’! পৃথিবীতে আজীবন থাকে, এই রকম কোনো সরকার আসে নাই এখনও।

একটা স্বাস্থ্যকর সমাজে প্রেসের ভুল করার স্বাধীনতা থাকতে হবে। যদিও ছবি উলটপালট করা ছাড়া প্রথম আলোর রিপোর্টে ভুলটা কি- আমি এখনও বুঝি নাই। রাস্তাঘাটে মানুষতো বলছে, জিনিসপত্রের দাম বাড়াতে তাদের নাভিশ্বাস উঠছে। এমনকি স্বয়ং মন্ত্রীরাও বলছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দাম বেড়ে গেছে। তো এই কথাটা কেনো এতো কড়া রিঅ্যাকশন ইনভাইট করলো, আমি বুঝলাম না। কিন্তু যদি প্রেস ভুলও করে তার রিঅ্যাকশন এই রকম রিপ্রেসিভ হতে পারে না। কেনো পারেনা সেটা জানতে গুগল করলে এই বিষয়ে অনেক ক্লাসিক লেখা পেয়ে যাবেন।

যাই হোক, শেষ করি একটা কথা দিয়ে। সমাজে প্রশ্ন করার জায়গা থাকতে হবে। দ্বিমত করার জায়গা থাকতে হবে।

উল্লেখ, এর আগে স্বাধীনতা দিবসে (২৬ মার্চ) করা একটি প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসের বিরুদ্ধে গত বুধবার (২৯ মার্চ) রাতে অ্যাডভোকেট আবদুল মশিউর মালেক বাদী হয়ে রাজধানীর রমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, পত্রিকাটির সাভারের নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামস, সহযোগী ক্যামেরাম্যান এবং অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।

পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সকালে শামসুজ্জামান শামসকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রমনা মডেল থানার পরিদর্শক আবু আনছার। পরবর্তীতে শামসুজ্জামানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: