মেহেরপুরে চাঞ্চল্যকর দুই ভাই হত্যাকাণ্ডে ৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত: ০২ এপ্রিল ২০২৩, ০৬:৪৯ পিএম

মেহেরপুরের কাজিপুর সীমান্তে রফিকুল ইসলাম ও আবু জেল নামের দুই সহোদর হত্যা মামলায় ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত। রোববার (২ এপ্রিল) দুপুরে মেহেরপুর অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ দণ্ডাদেশ প্রদান করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলো- গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামের কিয়ামতের ছেলে হালিম (৩৫), আছের উদ্দীনের ছেলে আতিয়ার (৪০), নজির আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম (৪০), মৃত দবীর উদ্দীনের ছেলে শরিফ (৪০) ও ফরিদ (৪৫), আব্দুল জলিলের ছেলে জালাল উদ্দীন (৪৩), আফেল উদ্দীনের ছেলে আজিজুল (৩৬), মুনছারের ছেলে মনি (২৫), নজির উদ্দীনের ছেলে দবির উদ্দীন (৩২)। এর মধ্যে জালাল উদ্দীন পলাতক রয়েছেন। বাকিরা রায় প্রদানের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মামলায় ৫ আসামি আরিফ, রাজিব, আলমেস, হারুন ও ফারুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় আদালত তাদের বেকুসর খালাস প্রদান করেন।

মামলার বিবরনে জানা যায়, ২০১২ সালের ৫ জুন কাজীপুর গ্রামের একটি মাঠ থেকে পরিত্যাক্ত অবস্থায় ফেন্সিডিল উদ্ধার করে বিজিবি। বিজিবিকে ফেন্সিডিল ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে রফিকুল ইসলাম ও আবু জেলের নামে। এ ঘটনায় ঐ দিন রাতে রফিকুল ইসলামকে ডেকে নিয়ে মারধর করে অভিযুক্তরা। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে রফিকুলকে উদ্ধার করে। ১৫ জুন রাত ১০ টার দিকে বিষয়টি মিমাংসার জন্য ঐ দুই ভাইকে ডেকে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। তারপর থেকেই ঐ দুইজনের আর কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলো না। এদিন ভোর রাতে কাজীপুর গ্রামের ভারতীয় সীমান্ত মেইন পিলার ১৪৫ এর সাব পিলারের ৬ এস এর পাশে ঐ দুই ভাইয়ের ক্ষত বিক্ষত লাশ পাওয়া যায়। তাদেরকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে সীমান্তে মরদেহ ফেলে রাখা হয়েছিল। এ ঘটনায় ঐ দুই ভাইয়ের বোন জরিনা বেগম গাংনী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তভার পড়ে তৎকালীন গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামানের হাতে। ২০১২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ১৪ জনকে আসামী করে, আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন তিনি। এ মামলায় তিন জন আসামী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকাক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। ১৭ জনের সাক্ষির সাক্ষ্য শেষে আদালত এই মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন।

মামলায় রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবি ছিলেন, অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. কাজী শহীদুল হক ও আসামী পক্ষের আইনজীবি ছিলেন, অ্যাড. কামরুল ইসলাম, অ্যাড. এ.কে.এম শফিকুল আলম, অ্যাড. আতাউল গনি আন্টু।

এ মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি অ্যাড. কাজী শহীদুল হক। তিনি বলেন, এটি একটি দৃষ্টান্তমূলক রায়। এ রায় নজির হয়ে থাকবে। কারণ মামলায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারক্তি মূলক জবানবন্দীও রয়েছে।

অন্যদিকে আসামী পক্ষের আইনজীবি অ্যাড. এ.কে.এম শফিকুল আলম বলেন, এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নয়। ন্যায় বিচারের জন্য উচ্চদালতে আদালতে আপিল করবো। এদিকে রায় ঘোষনার পর পরই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের স্বজনরা।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: