কেরানীগঞ্জে বিএনপির সমাবেশে হামলা, আ'লীগ অফিস ভাংচুর

প্রকাশিত: ২৬ মে ২০২৩, ০৬:৩৫ পিএম

কেরানীগঞ্জের জিনজিরায় ঢাকা জেলা বিএনপির জন সমাবেশকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায়সহ উভয় পক্ষের কমপক্ষপে ৩০ জন আহত হয়।

শুক্রবার(২৬ মে) বেলা ১১টায় জিনজিরা বাস রোডে আয়োজিত ১০দফা দাবি বাস্তবায়নে ঢাকা জেলা বিএনপি'র সমাবেশে যুবদলের একটি মিছিল ছাটগাও এলাকা থেকে জন সমাবেশ স্থলের দিকে আসে। মিছিলটি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে আসলে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া করে ঘটনা ঘটে।এতে বিএনপির ঢাকা জেলার সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় চৌধুরী সহ বেশ কয়েকজন নেতা কর্মী আহত হয়।

এ সময় বিএনপি এর উত্তেজিত নেতাকর্মীরা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। এছাড়াও সড়কের ওপর থাকা বেশ কয়েকটি ব্যাক্তিগত গাড়ি ভাংচুর ও আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে থাকা মোটরসাইকেলে ক্ষতি সাধন করে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পরিস্থিতি শান্ত হলে এরপর জন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে শেয়ালের কাছে মুরগি জমা রাখলে যে অবস্থা হবে এই সরকারের আমলে নির্বাচন ঠিক একই অবস্থা রকম হবে বলে মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে যে নির্বাচন হবে সেটা নির্বাচন নয়। সেখানে ভোটাররা ভোট দিতে যেতে পারে না, দিনের ভোট রাতে হয়। তার অধীনে নির্বাচনে কোন বিরোধী দল অংশগ্রহণ করবে না ।একতরফা নির্বাচন আমরা জানি শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছে তার নির্বাচন সেখানে কোন বিরোধী দল থাকেনা। শেখ হাসিনা এমন একজন নেত্রী যিনি বিরোধী দলীয় নেত্রীকে বলে পদ্মা সেতু থেকে ঠুস করে পানিতে ফেলে দিবে। তার মুখে গণতান্ত্রিক কোন ভাষা নেই, সহমর্মিতা সহঅবস্থানের কোন ভাষা নেই। শুধু আক্রমণ শুধু হিংসা শুধু রক্তপাত। আজকে নিপুন সহ আমাদের নেতাকর্মীদের আহত করে তার আরেকটি উদাহরণ তৈরি করলেন।

হামলা পরবর্তী দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছে।ঢাকা জেলা বিএনপি'র সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক জানান, তাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপি'র ব্যানার ব্যবহার করে মিছিল নিয়ে এসে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা ওই পাটকেল নিক্ষেপ করেছে। এতে বিএনপি ঢাকা জেলার সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় সহ অন্তত ২০জন আহত হয়েছে। নিপুন রায় বর্তমানে কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ম. ই মামুন অভিযোগ করে বলেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায়ের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা করে ভাংচুর করে। এসময় তাদের ৩০ জন নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছে।

হামলা বিষয়ে দুপুরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহীন আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, কোন প্রকার উস্কানি ছাড়াই বিএনপি নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের পার্টি অফিসে হামলা করেছে। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আশা প্রকাশ সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। হামলার প্রতিবাদে শনিবার (২৭ মে) দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ সমাবেশ করা হবে বলে জানান সংবাদ সম্মেলন থেকে ঘোষণা দেয়া হয়।

ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম বলেন,বিএনপির অতি উৎসাহী কিছু কর্মি আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা করে। এতে ইটে আঘাতে বেশ কয়েক জন আহত হয়। পরে পুলিশ এসে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: