চাকরি পেয়ে লাইভে এসে সুখবরের আশা দিলেন সেই মুক্তা

প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২৩, ০১:৪৮ পিএম

চাকরি না পাওয়ার হতাশায় ফেসবুক লাইভে স্নাতক সনদ পুড়িয়ে ফেলা মুক্তা সুলতানা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের একটি প্রকল্পে ৩৫ হাজার টাকা বেতনে চাকরি পেয়েছেন। চাকরি পাওয়ার পর ফেসবুক লাইভে এসে চাকরির বয়সসীমা বাড়ানো নিয়ে আশার বাণী শোনালেন তিনি।

সোমবার (২৯ মে) মুক্তা সুলতানা তার ব্যক্তিগত প্রোফাইল থেকে ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, গত ৫ দিন আগে আমার সার্টিফিকেট পোড়ানোর ঘটনায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক যোগাযোগ করে আমাকে আজ সোমবার (২৯ মে) মন্ত্রণালয়ে ডেকে পাঠিয়েছেন। এখানে এসে আমি একটি ভিডিও করেছি। ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রীকে চাকুরির বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়টি আমি বলেছি। ভিডিওটি আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছেন। খুব দ্রুতই আমরা হয়তো ইতিবাচক সংবাদ পাবো।

লাইভে তিনি আরও বলেন, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক নিজেও আমাকে আশ্বস্ত করেছেন যে তিনি নিজে এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনেকেই এই বিষয়ে ইতিবাচক-নেতিবাচক কথা বলেছেন। জাতীয় নির্বাচনের আগেই হয়তো আমরা এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত জানতে পারবো।

পরে আরেকটি স্ট্যাটাস দেন মুক্তা সুলতানা। সেখানে তিনি লেখেন (স্ট্যাটাসটি তার প্রোফাইল থেকে হুবুহু তুলে ধরা হল), ‘আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনায়েদ আহমেদ পলক স্যারের সামনেই আমি লাইভে বলেছি যে আমি বয়সসীমা বৃদ্ধির পক্ষে কাজ করে যাবো। তারপরও এত বিভ্রান্তি সৃষ্টি কেন করা হচ্ছে আমি বুঝতে পারছিনা। সার্টিফিকেট যখন পুড়িয়েছি, আমি ব্যাক্তি পুড়িয়েছি। ব্যাক্তি আমার সাথে যখন সরকারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে, আমি ব্যাক্তিই সাক্ষাত করেছি। কারো সঙ্গে কথা বলতে হবে প্রয়োজনীয়তা মনে করিনি। পলক স্যারের সাথে আমি প্রায় ২ ঘন্টা কথা বলেছি, বয়সসীমা বৃদ্ধি প্রসঙ্গেই যাবতীয় আলোচনা হয়েছে। তিনি আমার বয়সসীমা বৃদ্ধির যুক্তিগুলো শুনে বয়সসীমা বৃদ্ধির পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন। তার ফোন দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার ভিডিও বার্তা তার (স্যারের)অডিও বার্তা সংযুক্ত করে পৌঁছে দিয়েছেন এবং চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি নিয়ে ক্যাবিনেটে আলোচনা করবেন পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বয়সসীমা বৃদ্ধির ব্যাপারে ব্যাক্তিগতভাবে আলোচনা করবেন বলে কথা দিয়েছেন। সাথে সাথে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর পক্ষে যুক্তিগুলো তাকে (স্যারকে) হোয়াটসঅ্যাপে পাঠাতে বলেছেন।

এবং আইসিটি ডিপার্ট্মেন্টের লাইভ ভিডিওতে আমি বিষয়টা পরিস্কার করেছি।

কিন্তু আমার সত্যিই কষ্ট লাগছে, দাবির পক্ষে থাকার পরও যখন আমাকে নিয়ে নেগেটিভ কথা বলা হচ্ছে। আমার মনে হয় আমার একটা রুটি রুজির ব্যাবস্থা হয়েছে সেটা অনেকেই পছন্দ করছেন না। ক্ষুধার্ত পেটে থাকলেই হয়তো অনেকেই বেশি খুশি হতেন। এটাই বুঝতে পারলাম, কলিজা রান্না করে খাওয়ালেও বলবেন লবন হয়নি। আজকে আমার প্রতি আপনাদের ভালোবাসা বহিঃপ্রকাশ করলেন।’

রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজ থেকে ২০১৯ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। হতাশাগ্রস্ত হয়ে তিনি গত ২৩ মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ২৭ বছরে অর্জিত সব অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলেন। লাইভের বিষয়টি গণমাধ্যমে তুলে ধরা হলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের দৃষ্টিগোচর হয়। পরে তিনি মুক্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তার দপ্তরে আসার জন্য অনুরোধ জানান। তার সঙ্গে আলোচনার পর প্রতিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মুক্তাকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীন ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব সিকিউরড ইমেইল ফর গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার’ প্রজেক্টে ‘কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল কমিউনিকেশন অফিসার’ পদে ৩৫ হাজার টাকা বেতনের চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন।

চাকরি পেয়ে মুক্তা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ‘আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সহানুভূতির কারণে আমি চাকরি পেয়েছি। আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ।’

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: