দুই জেলার ৫০টি গ্রামের লাখ মানুষের স্বপ্ন পুরণ

প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২৩, ০২:৪৮ পিএম

বৃটিশ আমল থেকে একটি সেতুর জন্য দুটি জেলার এক লক্ষ মানুষের অপেক্ষা প্রহর
শেষ হয়েছে গতকাল রবিবার দুপুরে ।সরকার বদল হয়েছে অনেক বার আর দেশ
স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছর পর নির্মিত হয়েছে এরা বরাক নদীর সেতু। প্রায় ৭
কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি গতকাল জনসাধারনের চলাচলের জন্য
খুলে দেয়া হয়েছে। এরা বরাক এপার-ওপারের দূরত্ব মাত্র ১০০ মিটার,অপারে মৌলভীবাজার এপারে হবিগঞ্জ। সেতুটি দীর্ঘ এক বছর ধরে ঝুলছিল সংযোগ সড়কের জন্য।

দীর্ঘ কয়েক যুগ এরা বরাক ৯৬ মিটার নতুন সেতু নির্মাণ হওয়ায় ভাগ্য বদলেছে
হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার ৫০টি গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের। দুই জেলার
সীমান্তের সেতুটি নির্মান হওয়ায় কারনে যোগাযোগ ক্ষেত্রে পরিবর্তন হয়েছে।

এই নদীর বাশের সাকো দিয়ে চলাচল করতেন ৫০টি গ্রামের মানুষ। এখন তাদের
গাড়ি চড়ে বাড়ি যেতে পারবেন। ঢাকা সিলেট মহাসড়কের সাথে হয়েছে
সরাসরি সংযোগ।

এমনটাই চোখে পড়েছে নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের মিনাজপুর ও
মৌলভী বাজার জেলার খলিলপুর ইউনিয়নের কেশবচর গ্রামের মধ্যবর্তী এরা বরাক নদীর ওপর নির্মিত ৯৬মিটার সেতুর কারণে। সেতুটি নির্মাণের ফলে ওই এলাকার
অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের চিত্র বদলে গেছে। সহজেই পরিবহন করা যাচ্ছে গ্রামে।
সহজে চলাচল করছে ইজিবাইক, মোটরবাইক।

এলজিইডির অধীনে দু’পাশের সড়ক পাকা করার পাশাপাশি হেমলিপ প্রকল্পের অধীনে
এরাবরাক নদীর ওপর ৯৬ মিটার দৈর্ঘ্যের আরসিসি গার্ডার সেতুটি নির্মিত হয়। এতে মৌলভীবাজার জেলার খলিলপুর ইউপির সঙ্গে হবিগঞ্জসহ ঢাকা সিলেট মহাসড়কের ও অন্যান্য এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয়েছে।

মৌলভীবাজার সদর উপজেলা ও নবীগঞ্জ উপজেলার ৩০/৪০ টি গ্রামের অনেক শিক্ষার্থী সীমান্তবর্তী নবীগঞ্জ উপজেলার যোগাযোগে সহজ হওয়ার কারনে ঐতিহ্যবাহী আউশকান্দি রশিদিয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজে এই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাকো দিয়েই যাতায়াত করে লেখা পড়া করেছেন এখন সেতু চালু হলে আর তাদের সেই দুর্ভোগ নেই। মানচিএ গত দিক দিয়ে মৌলভীবাজার জেলার পশ্চিমাঞ্চলের লোকজন হবিগঞ্জ জেলার সাথে অধ প্রতভাবে জড়িত। এ সেতু নির্মান হলে নবীগঞ্জের সাথে মৌলভীবাজার সদরের দূরত্ব অনেক কমে যাবে।

স্থানীয় মোটরসাইকেলচালক আজাদ মিয়া জানান, সেতু না থাকায় মোটরসাইকেল নদীর ওপারেই রাখতে হতো অথবা ভিন্ন পথ ব্যবহার করতে হতো। এখন সহজেই মোটরসাইকেল নিয়ে ঢাকা সিলেট মহাসড়কে যাওয়া যায়।

স্থানীয় কলেজশিক্ষার্থী শাওন জানান, আগে আউশকান্দি বাজারে ও কলেজে যাওয়ার
জন্য অনেক পথ ঘুরতে হতো। এখন আশপাশের গ্রামগুলো থেকে সরাসরি সেখানে
যাওয়া যায়।

কেশবচর গ্রামের হাজী ইলিয়াছ মিয়া মেম্বার জানান, বৃটিশ আমলের পর থেকেই
দুই জেলার যোগাযোগের জন্য বাঁশের সাকো ব্যবহার করা হয়। সরাসরি যান চলাচলের ব্যবস্থা না থাকায় অনেক দূরের রাস্তা ঘুরে এ দুই জেলার লক্ষ মানুষ যাতায়াত
করতে হতো এখন আমরা সুখি হবো যোগাযোগ ব্যবস্থায়। এতে অতিরিক্ত সময় ও
অর্থের অপচয় বাঁচবে। তাই হবিগঞ্জ জেলার আউশকান্দিস্থ বিশ্বরোডের নিকটবর্তী দুই জেলায় বিভক্ত (এরাবরাক) হাতিমারা নদীর সেতু লক্ষ জনতার প্রাণের দাবী পুরন হয়েছে। মৌলভীবাজার উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী

সাংবাদিকদের জানান, এরা বরাক ৯৬ মিটার সেতুর কারণে মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ
জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছে। এ ছাড়া ঢাকা সিলেট মহাসড়কের সাথে ওপারে (মৌলভীবাজার) ৫০ হাজার মানুষের যোগাযোগ স্থাপন হয়েছে। দুই জেলার মানুষের ৫০ বছরের স্বপ্ন পুরণ হয়েছে।

অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সিলেট বিভাগের এজাজ মুর্শেদ চৌধুরী জানান, সেতুর নির্মান ব্যয় হচ্ছে ৬ কোটি ৯৭ লাখ ১১হাজার ৯শ ৫০টাকা। কারণ এই সেতুর নবীগঞ্জ অংশের (এপ্রোফুভ) সংযোগ সড়কটি আগে ধরা ছিলো না এর জন্য বিলম্ব হয় উদ্বোধন করতে। এখন আমরা ঐসংযোগ সড়কের জন্য প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যায় করেছি। দুই জেলার মানুষের স্বপ্ন পুরণ হয়েছে।

হবিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব দেওয়ান গাজী শাহনওয়াজ মিলাদ বলেন,
সেতুটির গুরুত্ব বিবেচনা করে আমরা দুই এমপি ডিও লেটার মাধ্যমে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়। আমাদের সরকারের সফলতার জন্য এই সেতুটি চালু হয়েছে। উভয় জেলার কয়েক লক্ষ মানুষের স্বপ্ন পুরণ হয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: