জয়পুরহাটের ৬ শিক্ষককে ফেরত দিতে হবে ৮৭ লাখ টাকা

প্রকাশিত: ০১ জুন ২০২৩, ০২:৩৯ পিএম

জাল সনদে চাকরি নেওয়ার অভিযোগে জয়পুরহাট জেলায় ৯ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১১ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রনালয়। শাস্তি হিসেবে চাকরিচূতীর পাশা পাশি ছয় শিক্ষককে ফেরত দিতে হবে ৮৭ লাখ ৯৯ হাজার টাকা।

জেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, সম্প্রতি সারাদেশের ৬৭৮ জন জাল সনদধারী শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে জয়পুরহাটের ১১ জন শিক্ষক রয়েছেন। ১১ জন শিক্ষকের ছয়জন শিক্ষক এমপিওভুক্ত হ‌য়ে নিয়মিত বেতনভাতা উত্তোলন করে আসছেন। আর অন্য পাঁচজন ননএমপিও। তারা কোনো সরকারি আর্থিক সুবিধা পাননি।

জাল সনদে এমপিওভুক্ত হওয়া শিক্ষকরা বেতন বাবদ সরকারি তহবিল থেকে নেওয়া বেতন অবৈধভাবে গ্রহণ করেছেন। তাদের অবৈধভাবে গ্রহণ করা বেতন সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া, যারা অবসরে গেছেন তাদের অবসর সুবিধা বাতিল করা, স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের আপত্তির টাকা প্রধান শিক্ষক বা অধ্যক্ষের মাধ্যমে আদায় করা, জাল সনদধারীদের নিয়োগ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।

জেলার এম‌পিওভুক্ত যেসব শিক্ষক‌দের টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হ‌য়ে‌ছে তা‌দের ম‌ধ্যে রয়েছেন- আক্কেলপুরের পুণ্ডুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (সমাজ) মোছা. রমনা পারভীন, সদরের পল্লীবালা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) লিপি আরা, চাঁদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) লতিফা খানম, পাঁচবিবির জাবেকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) মোসা. নূরে জেসমিন, কালাইয়ের মোসলেমগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) মোছা. শিরিন আক্তার ও সদরের শাহাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (শরীর চর্চা) মোছা. শাহীন সুলতানা।

মোছা. রমনা পারভীনকে ১০ লাখ ৪৭ হাজার ৩৪০ টাকা, লিপি আরাকে ১৭ লাখ ৩০ হাজার, লতিফা খানমকে ১৬ লাখ ৭১ হাজার ৫০ টাকা, মোসা. নূরে জেসমিনকে ১৩ লাখ ৫৭ হাজার ৩৬০ টাকা, মোছা. শিরিন আক্তারকে ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৮১৩ টাকা ও মোছা. শাহিন সুলতানাকে ৪ লাখ ২০ হাজার ৯০৩ টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ননএমপিও পাঁচ জাল সনদধারী শিক্ষক হলেন- জামালগঞ্জ কলেজের দর্শন বিভাগের প্রভাষক মোছা. সালমা জাহান, একই প্রতিষ্ঠানের হিসাববিজ্ঞানের প্রভাষক মোছা. মনিরা খাতুন, পাঁচবিবি মহিলা কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক মো. শফিকুল ইসলাম, জয়পুরহাট মহিলা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক আল আমিন রাজু এবং সদরের শাহাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) রুমানা পারভীন।

মন্ত্রণাল‌য়ের আদেশে পল্লীবালা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) লিপি আরার বগুড়ায় অবস্থিত জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমির (নেকটার) সনদ জাল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে লিপি আরা বলেন, ‌সা‌র্টিফি‌কেট যাচাই করে চাকরি হয়েছে। এখনো মন্ত্রণালয়ের কোনো চিঠি পাইনি। চিঠি পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

ননএমপিও তালিকায় থাকা জয়পুরহাট মহিলা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক আল আমিন রাজু ব‌লেন, আমি প্রথমে মাস্টার রোলে যোগদান করেছিলাম। পরে কম্পিউটার অপারেটর পদে যোগদান করি। কিন্তু অডিটের সময় আমার নামে ওই পদই ছিল। তাই এমনভাবে নাম এসেছে।

এ বিষ‌য়ে জেলা শিক্ষা অফিসার চলতি দায়িত্ব আব্দুর রাজ্জাক ব‌লেন, জাল সনদধারী শিক্ষক‌দের বিষয়টি জেনেছি। তবে এখনও কোন অফি‌শিয়া‌লি নির্দেশনা পাইনি। নির্দেশনা পেলে সেই মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: