সাভারে আলো ছড়াচ্ছে ওয়াসিল উদ্দিন পাঠাগার

প্রকাশিত: ০৬ জুন ২০২৩, ০৯:০৪ পিএম

ঢাকার অদূরে সাভার উপজেলার ব্যস্ত এলাকা হেমায়েতপুরের শিল্পাঞ্চল। বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া এলাকা জুড়ে সারাদিন যানবাহন, দোকানপাট ও মানুষের ভিড়। সেখানেই লাল টকটকে ব্যানারে জানান দিচ্ছে ওয়াসিল উদ্দিন গণ পাঠাগার। কোলাহলের মধ্যে গড়ে ওঠা পাঠাগার জুড়ে থরে থরে সাজানো হাজারো বই। দিনভর নানা বয়সী পাঠকদের পদচারণায় মুখর থাকে পাঠাগার। দিনে দিনে এটি হয়ে উঠেছে জ্ঞানের আলো ছড়ানোর মশাল।

২০১৯ সালে প্রয়াত সাংবাদিক ওয়াসিল উদ্দিন স্মরণে তার পরিবারের উদ্যোগে পাঠাগারটি গড়ে ওঠে।

প্রতিষ্ঠাতাদের দেওয়া তথ্য বলছে, বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক প্রায় দুই হাজার বই আছে পাঠাগারে। সহজে বই খুঁজে পেতে তাকে তাকে ভিন্ন ভিন্ন নামে সাজিয়ে রাখা হয়েছে সব বই। স্কুল, কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা যেমন পাঠাগারে আসেন। তেমনি আসেন বৃদ্ধরাও।

সম্প্রতি এক বিকেলে পাঠাগারে গিয়ে দেখা যায় বই পড়ছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। এছাড়া পত্রিকা পড়তে দেখা যায় কয়েকজন বয়োজ্যেষ্ঠকে। পড়ার ফাঁকে কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা ও এসএসসির শিক্ষার্থী আরমান হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ''আমাদের এলাকায় কোনো পাঠাগার ছিল না। এটা হওয়ায় অনেক সুবিধা হয়েছে। প্রচুর বই আছে এখানে। ইতিহাস ও গল্পের বই আমার খুবই পছন্দের। নিয়মিত এখানে এসে পড়ি।"

নাজমুল হাসান নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, এখানে বিজ্ঞান ও ফিকশনের বই আছে। এগুলো কিনতে গেলে অনেক টাকার দরকার। কিন্তু এখানে সহজেই বই পড়তে পারছি। পাঠাগারটা হওয়ায় আমরা ভীষণ উপকৃত হয়েছি।

শিক্ষার্থী ছাড়াও এ পাঠাগারে আসেন বয়োজ্যেষ্ঠরাও। জাতীয় একাধিক দৈনিক পত্রিকা রাখা হয় পাঠাগারটিতে। অনেকেই সেসব পত্রিকা পড়তে আসেন। ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা ৬৫ বছর বয়সী ওমর ফারুক বলেন, ওয়াসিল উদ্দিন পাঠাগারে একাধিক পত্রিকা রাখা হয়। প্রতিদিন পত্রিকা পড়তে আসি। মাঝে মাঝে বইও পড়ি।

হেমায়েতপুর জয়নাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা ও শিক্ষক নাফিসা ইয়াসমিন বলেন, শিক্ষার বাতিঘর পাঠাগার। এরকম শিল্প এলাকায় এক ফুট জায়গাও মানুষ বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করে। সেখানে গোছানো পাঠাগার অনুপ্রেরণাদায়ক। এ পাঠাগারের মাধ্যমে স্থানীয়রা উপকৃত হচ্ছে। অনেক বই কেনার সামর্থ্য নেই অনেকের। তারা সহজে পাঠাগার থেকে বই পড়তে পারছেন।

পাঠাগারটির উপদেষ্টা হিসেবে আছেন প্রয়াত সাংবাদিক ওয়াসিল উদ্দিনের দুই ছেলে সাভারের উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীব ও তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফখরুল আলম সমর। এটির দেখভাল করেন ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ”মূলত এই এলাকার মানুষের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতেই পাঠাগারটি গড়ে তোলা হয়। ২০১৯ সালে যাত্রা শুরুর পরই পাঠাগারের উদ্যোগে হেমায়েতপুরে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতে বইমেলার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া গণ পাঠাগারটিতে নিয়মিত সকলে বই পড়তে আসেন।”

সাইদুল ইসলাম আরও বলেন, ”পাঠাগারটি আরও বড় করার পরিকল্পনা রয়েছে। আরও বইয়ের সংগ্রহ করা হবে। এছাড়া পাঠাগারটিকে সামাজিক কার্যক্রমের সূতিকাগার হিসেবে গড়ে তোলা হবে। সেজন্য সরকারি ও বেসরকারি সহয়তা প্রয়োজন।”

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: