
ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুর পর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ নাজিমুদ্দিন আহমেদ বর্তমানে একমাত্র সক্ষম প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি হিসেবে ট্রাস্টি বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যান হওয়ার কথা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে আশুলিয়ার মির্জা নগর গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান, ১৯৭২ সালে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ৪ জন ট্রাস্টি ছিলেন। ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী,সাদেক খান,জাকারিয়া। ১৯৮০ সালে দলিল সংশোধনিতে তার অগোচরে সই জালিয়াতি হয়। দলিল সংশোধনিতে জালিয়াতির ফলে আপত্তি থাকা সত্ত্বেও জাফরুল্লাহ চৌধুরীর চাপের মুখে ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বৃহত্তর স্বার্থে সহ্য করেছেন বলে দাবি করেন।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে, আরো বিভিন্ন সংশোধনিতে আইনবহির্ভূত, ডাঃ কাশেম চৌধুরী,মিস সন্ধ্যা রায়, ডাঃ মনজুর কাদির আহমেদ ও ডাঃ কণা চৌধুরীকে প্রবল আপত্তি থাকা সত্ত্বেও ট্রাস্টি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করা হয়। মিসেস জাকারিয়া অর্থাৎ আলতাফুন্নেসাকে দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারপার্সন হিসেবে মেনে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুর পর সাম্প্রতিক কিছু অসংলগ্ন এবং বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ৫ হাজার কর্মীর জীবন জীবিকা বিপন্ন হচ্ছে যার কারণে তিনি এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সাম্প্রতিক কিছু অসংলগ্ন এবং বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন,মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষকে এক সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগ করে পুনরায় অব্যহতি দেয়া, অর্থ উপপরিচালককে নতুন দায়িত্ব দিয়ে একমাসের মধ্যে পুনরায় অব্যহতি দেয়া, পুরোনো। অর্থ ব্যবস্থাপককে নিজেই দুর্নীতির দায়ে অব্যহতি দেয়া সত্ত্বেও চোখের সামনে পুনরায় চাকরিতে বহাল রাখা, জামিন সনদ জালিয়াতির কারণে আদালতে অভিযুক্ত আইনজীবি ব্যারিস্টার ফখরুলকে (যিনি ইতঃপূর্বে যুদ্ধোপরাধী সাকা চৌধুরীর আইনজীবি ছিলেন)। যাকে গণস্বাস্থ্যের মতো বৃহৎ প্রতিষ্ঠানের প্রধান আইনজীবি হিসাবে বহাল রেখে বিভিন্ন নিয়মবহির্ভূত কাজ করে যাচ্ছেন এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ফান্ড থেকে টাকা-পয়সা অযাচিতভাবে খরচ করে যাচ্ছেন যা জনগনের স্বার্থে ব্যবহার করার কথা।
আলতাফুন্নেসার দায়িত্বকালীন সময়ে অনেক কর্মকর্তায় প্রচুর অর্থ দুর্নীতি করা সত্ত্বেও কোন সুরাহা হয়নি। সাম্প্রতিক কালে অধ্যাপক আলতাফুন্নেসা গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সকল কর্মী ও ডাক্তারদের বেতন বন্ধ করে দিয়ে সকলের জীবন-যাপন ব্যবস্থা দূরঅবস্থা, সংকটপূর্ণ এবং মানবেতর ও অনিশ্চয়তার মধ্যে ঢেলে দিয়েছে বলে দাবি করেন।
আরও উল্লেখ্য যে, গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেল কলেজের ২৭ তম ব্যাচে ৬০ জন শিক্ষার্থীর অনুমোদন সত্ত্বেও ১১০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়ে, ৫০ জন শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন না পাওয়ার কারণে জীবন হুমকির মুখে যার সুরাহা করার চেষ্টা না করে অধ্যাপক আলতাফুন্নেসা ও ডাঃ কাশেম চৌধুরী ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডাঃ মহিবুল্লাহ খন্দকার ভাবলেশহীন ভাবে জীবন-যাপন করছেন এবং তারা অননুমোদিত ভর্তি করা সত্ত্বেও রাষ্ট্রের বিপক্ষে মামলা ঢুকে দিয়েছে যা আমার মতে রাষ্ট্রদ্রোহীতার সামিল।
এর ফলশ্রুতিতে, জুনের ১৪ তারিখ উনাকে অব্যহতি দিয়ে সার্বিক অবস্থার বিবেচনায় আমি চেয়ারম্যানের পদ গ্রহণ করি কারণ, আমি বর্তমানে একমাত্র সক্ষম প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি।এমতাবস্থায়, একমাত্র বৈধ ট্রাস্টি হিসেবে তিনি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সকল দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানান। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে ডাঃ গোলাম রহমান শাহজাহানকে নিযুক্ত করেছেন।
এসময় এ সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নতুৃন দায়িত্বপ্রাপ্ত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সিও ডা.গোলাম রহমান, গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভাইস প্রিন্সিপাল ডা.কবির উদ্দিন শিকদার, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিচালনার দায়িত্বে থাকা গিয়াস উদ্দিন আহমেদ সহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
সর্বশেষ খবর