
ত্বকের একটি সাধারণ সমস্যার নাম আঁচিল। অনেকের শরীরেই দেখা যায় এই শক্ত, তিলের মতো মাংসপিণ্ড। যদিও অনেক সময় তা তেমন কষ্টদায়ক হয় না, তবে এটি ত্বকের সৌন্দর্যে ব্যাঘাত ঘটায়। কিন্তু জানেন কি, আঁচিল সবসময় নিরাপদ নয়? কিছু কিছু আঁচিল ক্যানসার সৃষ্টিকারী ভাইরাসের বাহকও হতে পারে।
আঁচিল দূর করতে বহুদিন ধরেই প্রচলিত একটি ঘরোয়া পদ্ধতি হলো আঁচিলে চুল বা সুতো পেঁচিয়ে রাখা। বিশ্বাস করা হয়, এতে আঁচিল শুকিয়ে পড়ে যায়। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, এই পদ্ধতি মোটেই নিরাপদ নয়। বরং এতে ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
আঁচিলে চুল পেঁচানোর বিপদ কী?
চুল বা সুতো পেঁচানোর ফলে আঁচিলের জায়গায় ঘষা লাগে এবং সেখানে ত্বকের ক্ষত তৈরি হয়। ফলে:
রক্তক্ষরণ হতে পারে,
সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে,
ত্বকের রন্ধ্রে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের প্রবেশ ঘটে,
প্রদাহ, পুঁজ কিংবা চুলকানির মতো সমস্যা দেখা দেয়।
চিকিৎসকরা বলছেন, আঁচিলের ওপর চুল পেঁচালে কখনো কখনো তা খসে পড়লেও মূল শিকড়টি ত্বকের গভীরে থেকেই যায়। ফলে একই জায়গায় আবারও আঁচিল হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। পাশাপাশি, ত্বকে স্থায়ী ক্ষত বা দাগও সৃষ্টি হতে পারে।
আঁচিল হয় কেন?
আঁচিলের মূল কারণ হলো হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (HPV)। এই ভাইরাসটি ত্বকের উপরিভাগে (এপিডার্মিসে) সংক্রমণ ঘটিয়ে কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির মাধ্যমে আঁচিল তৈরি করে।
আঁচিল দূর করার নিরাপদ উপায় কী?
আঁচিল থেকে মুক্তি পেতে চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিচের পদ্ধতিগুলোর মধ্যে যেকোনোটি গ্রহণ করা যেতে পারে:
স্যালিসাইলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ ওষুধ: বাজারে জেল, লোশন বা ক্রিম হিসেবে পাওয়া যায়। নিয়মিত ব্যবহারে ধীরে ধীরে আঁচিল দূর হতে পারে।
ইলেক্ট্রোকটারি বা ইলেক্ট্রোসার্জারি: যেখানে বিদ্যুতের মাধ্যমে আঁচিল পুড়িয়ে ফেলা হয়।
ক্রায়োথেরাপি: তরল নাইট্রোজেন ব্যবহার করে আঁচিল জমিয়ে তুলে ফেলা হয়।
লেজার থেরাপি: কার্যকর হলেও খরচ বেশি।
আঁচিলের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ ঘরোয়া টোটকা নয়, বরং একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ সঠিক চিকিৎসা ছাড়া আঁচিল থেকে স্থায়ী মুক্তি পাওয়া কঠিন।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর