• ঢাকা
  • ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ৭ ঘন্টা পূর্বে
সম্পাদনাঃ মোঃ রেজওয়ানুল ইসলাম
সাব এডিটর
প্রকাশিত : ০১ ডিসেম্বর, ২০২৩, ১২:১৩ দুপুর
bd24live style=

যেভাবে জুমার নামাজের সূচনা

ফাইল ছবি

জুমআ ইসলামের অপরিসীম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। ঐতিহাসিকভাবে এ দিনের অসংখ্য ফজিলত রয়েছে। তবে এটি মুমিন মুসলমানের জন্য সপ্তাহিক ইবাদতের হিসেবে নির্ধারিত। কিন্তু অনেকেই জানেন না যে, কীভাবে জুমআর প্রচলন শুরু হয়?

আরবি শব্দ ‘জুমুআ’-এর অর্থ হলো একত্রিত হওয়া। আর তাহলো ইয়াওমুল জুমআ বা শুক্রবার। আল্লাহর দুনিয়ায় সপ্তাহের সেরা দিন ইয়াওমুল জুমআ। তিনি জগৎ সৃষ্টির পরিপূর্ণতা দান করেছেন এ দিনে। জুমআর দিনকে মুমিনের ঈদ ও গরিবের হজের দিন হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

এ দিনে মুসলিম উম্মাহ আল্লাহর নির্দেশ পালনে ইবাদত উপলক্ষে মসজিদে একত্রিত হয় বলে দিনটিকে ইয়াওমুল জুমাআ বা জুমার দিন বলা হয়। কুরআনেও সে কথাটি ওঠে এসেছে-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِي لِلصَّلَاةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
‘হে মুমিনগণ! জুমআর দিনে যখন নামাজের আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দ্রুত মসজিদের দিকে ধাবিত হও। আর বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝতে পার।’ (সুরা জুমআ : আয়ত ৯)

হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু এক বর্ণনায় বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোনো এক জুমআর দিনে বললেন-

‘হে মুসলিম সম্প্রদায়! আল্লাহ তাআলা এ দিনকে ঈদের দিন হিসেবে নির্ধারণ করেছেন।’

যেভাবে শুরু হয় জুমআ

জুমআর সূচনা ও ফরজ হয় প্রথম হিজরি থেকে। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পবিত্র নগরী মক্কা থেকে হিজরত করে মদিনার কুবায় গিয়ে অবস্থান করেন। সেখান থেকে জুমআর দিন মদিনায় যাওয়ার পথে বনি সালেম গোত্রের উপত্যকায় পৌঁছলে জোহরের সময় হয়ে যায়। তিনি সেখানেই জুমআ আদায় করেন। ইসলামের ইতিহাসে এটাই ছিল প্রথম জুমআ।

তবে হিজরতের পর জুমআর নামাজ ফরজ হওয়ার আগে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়তের ১২তম বর্ষে মদিনায় নাকিউল খাজিমাতে ২ রাকাআত জুমআ পড়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। সেখানে হজরত আসআদ বিন জুরারাহ রাদিয়াল্লাহু আনহুর ইমামতিতে শুক্রবার সে নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। আর সেটি ছিল নফল নামাজ।

এ প্রসঙ্গে মুহাম্মদ ইবনে সিরীন থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় আগমনের পর এবং জুমআর নামাজ ফরজ হওয়ার আগে একবার মদিনার আনসারগণ একত্রিত হয়ে আলোচনা করলেন যে, ইয়াহুদিদের জন্য সপ্তাহে একটা দিন নির্দিষ্ট আছে, যে দিনে তারা সকলে একত্র হয়।

আর নাসারাদেরও সপ্তাহে সবার একত্রিত হওয়ার জন্য একদিন নির্ধারিত আছে। সুতরাং আমাদের জন্য সপ্তাহে একটা দিন নির্দিষ্ট হওয়া প্রয়োজন, যে দিনে আমরা সবাই সমবেত হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করব, নামাজ আদায় করব।
অতপর তারা আলোচনাকালে বললেন, শনিবার ইহুদিদের আর রোববার নাসাদের জন্য নির্ধারিত। অবশেষে তাঁরা ‘ইয়াওমুল আরুবা’ (শুক্রবার)-কে গ্রহণ করলেন এবং তারাই এদিনকে ‘জুমআর দিন’ নামকরণ করলেন। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, সীরাতুল মুস্তাফা, তিরমিজি)

তবে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুবা নামক স্থান থেকে মদিনায় পৌঁছার পথে বনি সালেম গোত্রের উপত্যকায় সবাইকে নিয়ে যে জুমআ আদায় করেন। এটিকে ইসলামের প্রথম জুমআ ধরা হয়। আর সেদিন থেকেই মুমিন মুসলমানদের জুমআ আদায় শুরু হয়।

জুমআ পড়ার নির্দেশ

হাদিসের বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, ফরজ ইবাদত হিসেবে জুমআ পড়ার নির্দেশ আসে পবিত্র নগরী মক্কায়। কিন্তু সে সময় পরিস্থিতির কারণে জুমআ আদায় করা সম্ভব হচ্ছিল না। এ সম্পর্কিত একাধিক তথ্য ও বর্ণনা হাদিসে পাকে এভাবে ওঠে এসেছে-

- হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস ও আবু মাসউদ আনসারি রাদিয়াল্লাহু আনহুমার বর্ণনা থেকে জানা যায়, হিজরতের কিছুদিন আগে মক্কা নগরীতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর জুমআর নামাজ পড়ার বিধান নাজিল হয়। কিন্তু সে সময় তিনি এ নির্দেশের ওপর আমল করতে পারতেন না। কারণ মক্কায় সামষ্টিক কোনো ইবাদাত করা সম্ভব ছিল না। তাই যেসব সাহাবি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগে মদিনায় হিজরত করেছিলেন, তিনি তাদের নির্দেশ পাঠিয়েছিলেন যে, তারা যেন সেখানে জুমআ প্রতিষ্ঠা করেন। অতএব প্রথম দিকে হিজরতকারীদের নেতা হজরত মুসআব ইবনে উমায়ের ১২ জন লোক নিয়ে মদিনায় প্রথম জুমআর নামাজ আদায় করেন। (তাবারানি, দারাকুতনি)

- হজরত কাব ইবনে মালেক ও ইবনে সিরিনের বর্ণনা মতে, তারও আগে আনসারগণ নিজ থেকেই (বিশ্বনবির মদিনার পৌছার আগে) সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, তারা সবাই মিলে সপ্তাহে একদিন সামষ্টিক ইবাদাত করবেন। এ উদ্দেশ্যে তারা ইয়াহুদিদের শনিবার ও খ্রিস্টানদের রোববার বাদ দিয়ে জুমআর দিনকে মনোনীত করেছিলেন এবং বনি বায়দা অঞ্চলে হজরত আসআদ ইবনে জুরারাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু প্রথম জুমআ পড়েছিলেন। এতে ৪০ জন ব্যক্তি উপস্থিত হয়েছিলেন।(মুসনাদে আহমাদ, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, বায়হাকি)

এ থেকে জানায় ইসলামি জনতার আবেগ অনুভূতি তখন এমন একটি সাপ্তাহিক ইবাদাত-বন্দেগির দিন থাকার প্রয়োজনীয়তা উপলব্দি করেছিল। উপরন্তু বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিজরত করার পর সর্বপ্রথম যে কাজগুলো করেন, জুমআ প্রতিষ্ঠা ছিল তার অন্যতম।

বিশ্বনবি মক্কা থেকে হিজরত করে সোমবার দিন কুবায় উপনীত হন। সেখানে ৪ দিন অবস্থান পর পঞ্চম দিন ‘ইয়াওমুল জুমআ’ তথা জুমআর দিনে সেখান থেকে মদিনার দিকে রওয়ানা হন। পথিমধ্যে বনি সালেম ইবনে আওফের এলাকায় জুমআর নামাজের সময় হয়। সেখানেই তিনি প্রথম জুমআর নামাজ আদায় করেন। (ইবনে হিশাম)

জুমআর গুরুত্ব

শুক্রবার জোহরের পরিবর্তে জুমআর নামাজকে ফরজ করা হয়েছে। জুমআর দুই রাকাআত ফরজ ও ইমামের খুতবাকে জোহরের চার রাকাআত ফরজ নামাজের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। সপ্তাহের এদিনে জুমআর খতিব তা বক্তেব্যে উম্মতের যাবতীয় প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কুরআন ও হাদিসের আলোকে নির্দেশনা ও সমাধানমূলক উপদেশ দেবেন। হাদিসে এসেছে-

- হজরত তারেক ইবনে শিহাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইলি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ক্রীতদাস, নারী, নাবালেগ বাচ্চা ও অসুস্থ ব্যক্তি এই ৪ প্রকার মানুষ ছাড়া সব মুসলমানের ওপর জুমআর নামাজ জামাআতে আদায় করা অপরিহার্য কর্তব্য (ফরজ)।’ (আবু দাউদ, মুসতাদরেকে হাকেম)

- হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো শরিয়তসম্মত কারণ ছাড়া জুমআর নামাজ বর্জন করবে, তার নাম মুনাফিক হিসেবে এমন দফতরে লেখা হবে; যা মুছে ফেলা হবে না এবং পরিবর্তনও করা যাবে না।’ (তাফসিরে মাজহারি)

- হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জুমআর নামাজ না পড়া ব্যক্তিদের সম্পর্কে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আমার ইচ্ছা হয় যে আমি কাউকে নামাজ পড়ানোর আদেশ করি, সে মানুষকে নামাজ পড়াক। অতপর যে সব ব্যক্তি জুমআর নামাজ পড়ে না, আমি তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিই।’ (মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ, মুসনাদে ইবনে আবি শাইবা)

সুতরাং জুমআ হলো মুমিন মুসলমানের জন্য বিশেষ ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। যা প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় হিজরত করে আনুষ্ঠানিকভাবে বনি সালেম গোত্রের উপত্যকায় আদায়ের মাধ্যমে শুরু করেছিলেন। আজও মুমিন মুসলমানের জন্য তা বিশেষ ইবাদত হিসেবে জারি রয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com