বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) চলমান আন্দোলনে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের বর্তমান অচলাবস্থা নিরসন এবং স্বাভাবিক একাডেমিক কার্যক্রম চালুর দাবি জানিয়েছে বুয়েট শিক্ষক সমিতি।
সোমবার (৮ এপ্রিল) বুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ কে এম মঞ্জুর মোরশেদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতি এ দাবি জানানো হয়।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৮ মার্চ ২০২৪ থেকে উদ্ভূত ঘটনাবলিতে [রাত্রি দ্বিপ্রহরে একটি ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের বুয়েট ক্যাম্পাসে অনাহৃত আগমন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগ দাবি, সংশ্লিষ্ট কয়েকজন বুয়েট ছাত্রের বহিষ্কার দাবি, উপাচার্য মহোদয় সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকদের সাথে যথাযথ আচরণ না করা, টার্ম-ফাইনাল পরীক্ষা বর্জন, ১লা এপ্রিল ২০২৪ মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক বুয়েটে রাজনীতি নিষিদ্ধে জারিকৃত আদেশ স্থগিতকরণ, শিক্ষার্থীদের অব্যাহত আন্দোলন এবং একাডেমিক কার্যক্রমে স্থবিরতা] বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (প্রবিশিস) উদ্বেগ প্রকাশ করছে। সেইসাথে কিছু পর্যবেক্ষণ সন্নিবেশ করছে।
এতে বলা হয়, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস সহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব রেজিস্ট্রার মহোদয়ের। সকলের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানানো যাচ্ছে। নিষিদ্ধ-ঘোষিত সংগঠনের ইমেইল প্রেরণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। এ-ব্যাপারে জাতীয় আইন-প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের দৃষ্টি আকর্ষণের আহবান জানাচ্ছে।
ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে ২০১৯ সালে জারি করা যে প্রজ্ঞাপন হাইকোর্ট স্থগিত করেছেন তার বিরুদ্ধেও বুয়েট প্রশাসনকে আপিল করতে জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগী হওয়ার আহবান জানিয়ে বলা হয়, সাংগাঠনিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করে দেওয়া জরুরী বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিত করার যে রায় গত ১লা এপ্রিল ২০২৪ তারিখে মহামান্য হাইকোর্টে দিয়েছে তার বিপরীতে আপিল করার বিষয়টিতে প্রশাসন জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগী হবেন এবং এ ব্যাপারে শিক্ষক সমিতি সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে।
সবশেষে বলা হয়, ২০১৯-পরবর্তী বিগত বছরগুলিতে বুয়েটে শিক্ষা-কার্যক্রম অবাধে চলেছে এবং সুষ্ঠু একাডেমিক পরিবেশ বজায় ছিল। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখা, নিরাপদ রাখা, বিদ্যাচর্চা অক্ষুণ্ণ রাখা ইত্যাদি আমাদের সকলের দায়িত্ব। শিক্ষক সমিতি এমন পরিবেশই প্রত্যাশা করে। এমতাবস্থায় বর্তমান অচলাবস্থা নিরসন এবং স্বাভাবিক একাডেমিক কার্যক্রম চালুর দাবি জানাচ্ছে শিক্ষক সমিতি।
সেই সঙ্গে একটি শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল এবং নিষ্কলুষ ক্যাম্পাস আমাদের সকলের কাম্য। সকল অংশীজনের সহযোগিতা ও দায়িত্বশীল আচরণের মাধ্যমে অচিরেই সে অবস্থা ফিরে আসবে বলে শিক্ষক সমিতি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে বলে ওই বলে বিবৃতিতে উল্লেখক করা হয়।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর