পরকীয়ার জের ধরে নুরুন্নবী মন্ডল হত্যা মামলায় দীর্ঘ ১৯ বছর পর স্বামী-স্ত্রীসহ ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রোববার (৫ মে) দুপুরে জয়পুরহাট অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক মোঃ নুরুল ইসলাম আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় প্রদান করেন।
জয়পুরহাট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ্যাড : নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল জানান- সাজা প্রাপ্তরা হলেন, জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার বড়াইল শেখপাড়া গ্রামের স্বামী শাহাদুল ইসলাম, স্ত্রী মরিয়ম বেগম রেখা, ইনারী সরদারের ছেলে আঃ রাজ্জাক, রইস উদ্দিনের ছেলে মোজাহার আলী ও শামসুদ্দিনের ছেলে রেজাউল ইসলাম।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, শাহাদুল ইসলামের স্ত্রী মরিয়ম বেগম রেখার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পরে আলতাব মণ্ডলের ছেলে নুরুন্নবী মন্ডল। এ ঘটনার জের ধরে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী স্বামী-স্ত্রীসহ ও অন্যান্য সাজা প্রাপ্ত আসামীরা পরস্পর যোগসাজশে নুরুন্নবী কে হত্যা করে পুরাতন কবরে লুকিয়ে রাখে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যার পর থেকে পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজ খবর করেও কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না নুরুন্নবীর। এতে দুশ্চিন্তায় পড়ে যায় নুরুন্নবীর পরিবারের লোকজন। এ অবস্থায় ২০ নভেম্বর বেলা ১২ টায় পাশের দক্ষিণ হাটশহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছোট ছেলে মেয়েরা বলাবলি করে হাটশহরের নাপিতের কুড়ির পূর্ব পাশে কবরস্থানে একটি পুরাতন কবরে লাশের পা দেখা যাচ্ছে। এমন খবরে পরিবারসহ জনপ্রতিনিধি ও পুলিশের সহায়তায় নুরুন্নবীর লাশ শনাক্ত করা হয়। এ ঘটনায় ২১ নভেম্বর ক্ষেতলাল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন পিতা আলতাব মন্ডল।
এ মামলায় ৪ জন তদন্ত কর্মকর্তার হাত বদল হয়ে সর্বশেষ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান খান মামলাটি তদন্ত করে ২০০৭ সালের ৩০ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বিচারে ৯ জনের সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে দীর্ঘ ১৯ বছর পরে বিচারক আজ রোববার এ রায় প্রদান করেন। রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এ্যাড : নৃপেন্দ্রনাথ সন্ডল পিপি ও এপিপি গকুল চন্দ্র মন্ডল, শামীমুল ইমাম শামীম, খাজা শামসুল ইসলাম বুলবুল এবং আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এ্যাড : মোস্তাফিজুর রহমান ও শহীদুল ইসলাম (১)।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর