প্রয়াত রাজনীতিবিদ সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের নির্বাচনী এলাকা সুনামগঞ্জের দিরাই ও শাল্লায় ৮ই মে অনুষ্ঠিত হবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এই দুই উপজেলার শেষ মুহূর্তে প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণায় চলছে ভোটের মধ্যে নানা হিসাব নিকাশ।
রাজনৈতিক পরিচয়ে ভোট না হওয়ায় এই দুই উপজেলায় সম্প্রদায় এবং আঞ্চলিকতার ভোটের হিসাব রয়েছে বলে জানা গেছে। সব মিলিয়ে ফলাফল জন্য ভোটের দিনেই জানা যাবে বলে জানিয়েছেন সচেতন মহল।
এদিকে দুটি উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থীরা শিক্ষা,স্বাস্থ্য,সড়কের উন্নয়নসহ বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রার্থীরা নির্বাচনী এলাকার পাড়া, মহল্লা, চায়ের স্টল ও হাওরের ধান খলায় গিয়েও ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট চাইছেন। ফলে শেষ সময়ে প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,শেষ মুহূর্তে দিরাই ও শাল্লা দুটি উপজেলায় নির্বাচনী প্রচারণায় নানা হিসাব নিকাশ করছেন প্রার্থী ও সমর্থকরা। দলীয় প্রতীক বা সমর্থনে প্রার্থী না হওয়ায় অঞ্চল,সমাজ এবং সম্প্রদায় ভিত্তিক প্রচারণাও করছেন প্রার্থীরা। তবে জনপ্রিয়তা ও ভালো কাজের মূল্যায়ন করবেন ভোটাররা।
দিরাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন,জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আজাদুল ইসলাম রতন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রঞ্জন কুমার রায়, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী রিপা সিনহা, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ গোলাপ মিয়া।
দিরাই উপজেলায় ভোটার রয়েছেন ১ লক্ষ ৯৭ হাজার ২২৫ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ৯৭ হাজার ৩৫৪ জন ও পুরুষ ভোটার সংখ্যা ৯৯ হাজার ৮৭০ জন। উপজেলার ৫১০টি ভোট কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে।
ভোটাররা বলছেন,দিরাই উপজেলায় প্রচারণার দৌড়ে তিন প্রার্থী এগিয়ে রয়েছেন প্রদীপ রায়,রঞ্জন রায় ও গোলাপ মিয়া। ভাল আর যোগ্য প্রার্থীকেই এবার নির্বাচিত করবেন ভোট দিয়ে।
অপরদিকে, শাল্লা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীরা হলেন,জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অবনি মোহন দাস, উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি (বহিষ্কৃত) সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গণেন্দ্র চন্দ্র সরকার, অ্যাডভোকেট দীপু রঞ্জন দাস ও এস এম শামীম।
এই উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ৯১ হাজার ৩৬৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৪৫ হাজার ৯৫৬ জন এবং নারী ৪৫ হাজার ৪১২ জন। উপজেলার ৪ ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্র রয়েছে ৩৭টি। ভোট কক্ষ ২১৩টি।
শাল্লা উপজেলার চার ইউনিয়নের মধ্যে বাহিরায় দুটি এবং হবিবপুরে কেন্দ্রের পাল্লা ভারী। আটগাঁওয়ে অবনি ও গনেন্দ্র সমানে সমান। শাল্লায় অবনি,গনেন্দ্র ও আরেক প্রার্থী দীপু রঞ্জন রায় ও এস এম শামীম তারও ভোট রয়েছে।
তবে নির্বাচনে জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট অবনি মোহন দাশ,উপজেলা বিএনপির সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতি গনেন্দ্র চন্দ্র সরকার ও অ্যাডভোকেট দিপু রঞ্জন দাশের মধ্যেই ত্রিমুখী লড়াই হবে বলে মন্তব্য করেছেন রাজনীতিক ব্যক্তিগণ।
আর ভোটারগণ বলছেন,তারাও এবার নির্বাচনে যাচাই বাছাই করে ভোট দিবেন। উন্নয়ন বঞ্চিত হতে হবে এমন কোনো প্রার্থীকে এবার আর ভোট দিবেন না।
দিরাই উপজেলার স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মীরা জানিয়েছেন,গোলাপ মিয়ার পক্ষে তার নিজের এলাকার বাসিন্দাগণ সক্রিয়। এলাকার কর্মীরাই উপজেলা চষে বেড়াচ্ছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের স্ত্রী ড. জয়া সেন গুপ্তার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত প্রদীপ রায়ের পক্ষে এমপি জয়া সেনের কর্মীরা সক্রিয় রয়েছেন।
অপর দিকে প্রদীপ রায়ের ভাই পৌর মেয়র বিশ্বজিৎ রায় প্রচারণায় শক্তি যোগ করেছেন। আর রঞ্জন রায়ের পক্ষে নেমেছেন এমপি জয়া বিরোধী আওয়ামীলীগের কর্মীরা।
আওয়ামী লীগ নেতা আজাদুল ইসলাম রতন এবং মহিলা আওয়ামীলীগের নেত্রী রিপা সিনহাও তাদের নেতা কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে উপজেলা চষে বেড়াচ্ছেন নির্বাচনে বিজয়ী হবার আশায়।
দিরাই উপজেলার বাসিন্দা শামিম মিয়া বলেন,এখন পর্যন্ত প্রদীপ রায়,রঞ্জন রায় ও গোলাপ মিয়ার মধ্যেই ত্রিমূখী লড়াই দেখা যাচ্ছে। তবে শেষ মুহূর্তে তা দ্বিমুখী লড়াইয়ের রূপ নিতে পারে বলে বলছেন কেউ কেউ। তাই ভোটের আগে নিশ্চিত করে কিছু বলা কঠিন।
শাল্লা উপজেলায় বাহারা ইউনিয়নের বাসিন্দা লতিফ মিয়া জানান,দলীয় পরিচয়ের ভোটের বাহিরে আঞ্চলিকতা ও সম্প্রদায়ের ভোটেরও প্রভাব পড়বে এই নির্বাচনে। এরপরও নির্বাচনে কার কখন কী পরিস্থিতি হয় বলা যায় না।
পাঁচটি ছবি এক সাথে,, প্রদীপ রায়, গোলাপ মিয়া,রঞ্জন কুমার রায়, রিপা সিনহা ও আজাদুল ইসলাম।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর