মোবাইল ফোনে কথা বলতে নিষেধ করায় মাকে শারীরিক আঘাত করায় মা অতিষ্ঠ হয়ে সুমির গলার ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ডের কোনো ক্লু না থাকায় অপমৃত্যুর মামলা হয়। হত্যাকাণ্ডের ভুল আসামি গ্রেফতারের পরই বেরিয়ে আসে মূল হত্যাকাণ্ড।
ভিকটিম সুমী কাউছার (১৮), পিতা-মৃত এমএল মিয়া, সাং-দরুণ বৈরাটি, ইউনিয়ন-১২নং বৈরাটি, থানা-পূর্বধলা, জেলা-নেত্রকোণা গত ২২আগস্ট ২০২২ রাত্রি অনুমান ০৩:৩০ ঘটিকার সময় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে তাহাদের বসত বাড়ির পূর্ব পাশে টয়লেটে যায়। টয়লেট শেষে চিৎকার দিলে ভিকটিমের মা মোছা: জোসনা বেগম দৌড়ে গিয়া ভিকটিমকে বাহির থেকে বসত ঘরে নিয়া আসেন। পরবর্তীতে ভিকটিমের বুক জ্বলিতেছে বলিয়া ডাক চিৎকার করে এবং এক পর্যায়ে ভিকটিম মারা যায়।
উক্ত সংবাদের প্রেক্ষিতে পূর্বধলা থানার অপমৃত্যু মামলা নং-৩৮ তারিখ: ২৩/০৮/২০২২ খ্রি :, সময় দুপুর ১২:০৫ ঘটিকার সময় রুজু পূর্বক তদন্তভার এসআই (নি:)/মো: হাফিজুর রহমান এর উপর অর্পণ করা হয়। এসআই (নি:)/মো: হাফিজুর রহমান উক্ত মামলার তদন্তভার গ্রহণ পূর্বক ভিকটিমের মৃতদেহের সুরতহাল প্রস্তুত পূর্বক মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য মৃতদেহ আধুনিক সদর হাসপাতাল, নেত্রকোণা মর্গে প্রেরণ করেন।
পরবর্তীতে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পর্যালোচনায় দেখা যায়, ভিকটিমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। উক্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে এসআই (নি:)/মো: হাফিজুর রহমান বাদী হইয়া অজ্ঞাতনামা আসামীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন, যাহার পূর্বধলা থানার মামলা নং-০২ তারিখ: ০১-০১-২০২৪ খ্রি :, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল নং, ১৮৬০;।
বিভিন্ন কৌশল এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করেও ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন সম্ভব হচ্ছিল না। অবশেষে গত ০৫-০৫-২০২৪ খ্রি: অফিসার ইনচার্জ, পূর্বধলা থানা, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত), পূর্বধলা থানাসহ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর (নি:) জনাব আশরাফুল ইসলাম ভিকটিমের মা মোছা: জোসনা বেগম (৪৭), স্বামী-মৃত এমএল মিয়া, সাং-দরুণ বৈরাটি, ইউনিয়ন-১২নং বৈরাটি, থানা-পূর্বধলা, জেলা-নেত্রকোণাকে পর্যায়ক্রমে ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে স্বীকার করে যে, সে তাহার মেয়ে ভিকটিম সুমী কাউসারকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে।
তিনি কারণ হিসাবে উল্লেখ করেন, ভিকটিম সুমী কাউসার তাহার অবাধ্য হয়ে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে, ইতিপূর্বে একাধিকবার তাকে শারীরিক আঘাত করাসহ ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে ক্ষতিসাধন করেছে। বাধা নিষেধ করা স্বত্বেও জনৈক ছেলের সহিত মোবাইল ফোনে কথা বলে। ঘটনার দিন গভীর রাতে মোবাইল ফোনে কথা বলতে থাকে, মোবাইল ফোনে কথা বলতে নিষেধ করিলে ভিকটিম সুমী কাউসার তার মা মোছা: জোসনা বেগমকে শারীরিক আঘাত করায় ভিকটিমকে তার গলার ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের মা মোছা: জোসনা বেগমকে কোর্টে প্রেরণ করা হইলে তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট ফি: কা: বি: ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর