
ভোলার চরফ্যাশন হাসপাতাল রোডে অবস্থিত সেন্ট্রাল ইউনাইটেড নামের প্রাইভেট ক্লিনিকের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আঁখি আক্তারের ভুল চিকিৎসায় অস্ত্রোপচারের সময় মুন্নি আক্তার নামের এক প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ওই প্রসূতি মৃত্যু হলেও ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় সদ্যভূমিষ্ঠ হওয়া নবজাতক শিশু। ক্লিনিকে প্রসূতি নারীর মৃত্যু হলে ওই চিকিৎসক বিষয়টি গোপন রেখে প্রসুতিকে দ্রুত বরিশাল শেবাচিমে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরিবারের সদস্যরা ঘটনাটি টের পেয়ে ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে ক্লিনিকের ভিতরে হট্টোগোল শুরু করেন।
এসময় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে পরিবেশ শান্ত হয়। পরে রাতেই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ওই নারীর পরিবারকে এক লাখ টাকা দিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করেন। নিহত মুন্নি আক্তার আমিনাবাদ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ৬ টায় ওই ক্লিনিকে প্রসূতি নারীকে অস্ত্রোপচারের সময় তার মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
নিহত প্রসূতি নারী মুন্নির বাবা আনোয়ার হোসেন জানান, দুপুরে তার অন্তঃসত্ত্বা মেয়ের প্রসববেদনা শুরু হলে তার পরিবারের সদস্যরা চরফ্যাশনের সেন্ট্রাল প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে যান। কর্তব্যরত গাইনি চিকিৎসক ডাঃ আঁখি আক্তার কোন রকম পরীক্ষা ছাড়াই গর্ভের সন্তান সংকটাপন্ন বলে জানান এবং পূর্বের পরীক্ষার রির্পোট অনুযায়ী তার মেয়েকে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন।
অস্ত্রোপচারের সময় নবজাতক শিশু জীবিত থাকায় মৃত্যু হয় মেয়ে মুন্নি আক্তারের। বিষয়টি চিকিৎসক ও নার্সরা গোপন রেখে তার মেয়ের অবস্থাসংকাটপ্ন বলে তাকে দ্রæত বরিশালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। ঘটনাটি তিনি এবং তার স্বজনা বুঝতে পেরে ওই ক্লিনিকে হট্টোগোল শুরু করলে ক্লিনিকের কর্তৃপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের চাপের মুখে পড়ে তারা মেয়েকে লালা মোহন হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান অস্ত্রোপচারের সময় তার মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরও জানান, রাতে তারা নিহত মুন্নির মরদেহ দাফনের পর ওই ক্লিনিকের কর্তৃপক্ষরা তাদের বাড়িতে যান। এবং তার মেয়ে গর্ভের ভূমিষ্ঠ হওয়ার নবজাতকের চিকিৎসা করানোর জন্য তার হাতে এক লাখ টাকা তুলে দেন।
এবিষয়ে জানতে ওই ক্লিনিকে গেলে চিকিৎসক আঁখি আক্তারকে পাওয়া যায়নি। পরে তার মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
তবে ওই ক্লিনিকের পরিচালক মোঃ বশির আহমেদ জানান, নারীর পরিবার বাড়িতে নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করে যখন প্রসূতি অবস্থা সংকটাপন্ন তখন তাদের ক্লিনিকে নিয়ে আসেন। চিকিৎসকের কাছ থেকে যতটুকু জানতে পেরেছি গর্ভের সন্তানের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে দ্রæত অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। পরে প্রসূতি নারীর জ্ঞান না ফেরায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে রেফার করা হয়। তবে চিকিৎসকরা ধারণা করেছেন ওই নারীর অস্ত্রোপচারের সময় স্টোক করেছেন। পরে তিনি মারা গেছেন।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর