
টাঙ্গাইলের সখীপুরে মাদ্রাসাছাত্রীকে বেত্রাঘাত করায় মাওলানা আব্দুল আজিজ (৩৫) নামের এক শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা তৈরি হয়েছে। শনিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার কচুয়া পশ্চিমপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, মাওলানা আব্দুল আজিজ কচুয়া হাফেজিয়া ফোরকানিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক। তিনি ওই মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী আফরীনকে (১১) দুষ্টুমি করায় বেত্রাঘাত করেন। পরে দুপুরে শিক্ষক মাওলানা আব্দুল আজিজ বাইসাইকেল নিয়ে মাদরাসায় যাওয়ার পথে ছাত্রীর চাচা রাসেল, দাদা তারা মিয়া, হবি মিয়া সহ বেশ কয়েকজন মিলে ওই শিক্ষকের সাইকেলের গতিরোধ করে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। এ সময় ছাত্রীর চাচা রাসেল ঐ শিক্ষকের দাড়ি ধরে টেনে ছিঁড়ে ফেলেন।
শিক্ষক মাওলানা আব্দুল আজিজ জানান, মাদরাসায় ক্লাস ছুটি হওয়ার আগে আমি শিক্ষার্থীদেরকে বলে দেই তারা যেন ছুটি হওয়ার পরে কোথাও দাঁড়িয়ে না থেকে সরাসরি নিজেদের বাড়িতে চলে যায়। ছাত্রী আফরীনকেও বলে দেই। কিন্তু সে গত কয়েকদিন ধরে ছুটি হলে অন্য ক্লাসরুমের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। এতে ওই ক্লাসের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সমস্যা হয়। এ কারণে আজকে তাকে ডেকে সতর্ক করে দিয়ে দুটি বেত্রাঘাত করি। এটাই আমার অপরাধ।
শিক্ষক আব্দুল আজিজ আরও বলেন, একজন শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত করা যদি আমার অপরাধ হয়ে থাকে, এর বিচার করবে মাদ্রাসার কমিটির লোকজন। তারা আমাকে মারধর করল কেন? আমি দাড়ি টেনে ছিঁড়লো কেন? তারা তো আমার গায়ে হাত দিতে পারে না। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ আনোয়ার জানান, ছাত্রীর মা তার মেয়েকে মারধরের বিষয়ে আমার কাছে আসে এবং কমিটির সদস্যদের কাছে অভিযোগ দিয়েছিল। আমরা জানিয়েছি বিষয়টি তদন্ত করে ওই শিক্ষক অপরাধী হলে তার বিচার হবে। কিন্তু তারা আমাদেরকে সেই সময় দেননি। তারা নিজেরাই শিক্ষককে সঙ্ঘবদ্ধভাবে মারধর করেছেন। তাকে মারধর করেছেন। এটি খুবই দুঃখজনক কাজ হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক আনোয়ার আরো জানান, ওই শিক্ষককে মারধর করায় অন্য শিক্ষকরা ক্লাস করাচ্ছেন না। তারা আগে ঘটনাটির সুষ্ঠু ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছেন। মাদ্রাসার কমিটির সদস্যরা এ বিষয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
সখীপুর থানার উপ-পরিদর্শক সুকান্ত রায় জানান, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। স্থানীয় ইউপি সদস্যকে দায়িত্ব দিয়েছি বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করার জন্য।
উপজেলার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মামুন মিয়া জানান, ঘটনাটি অবশ্যই অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা অচিরেই মাদ্রাসার কমিটির সদস্যদের নিয়ে বসে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক একটি বিচার করব।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর