
১৯৭১সালের ৪ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা পাকহানাদার মুক্ত হয়ে ওড়ানো হয় লাল সবুজের বিজয় নিশান। এই দিনে বর্বর পাক-হানাদারবাহিনী ও তাদের দোসররা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে ভোরে তাহিরপুর উপজেলা ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়। জয়বাংলা শ্লোগানে মুখরিত হয় উপজেলায়। শত্রুমুক্ত ঘোষণা করেই মুক্তির উল্লাসে মেতে উঠেন মুক্তিযোদ্ধা জনতাসহ সর্বস্তরের মানুষ দলে দলে নেমে আসেন রাস্তায়।
১৯৭১সালে নয় মাস প্রতিরোধ গড়ে তুলেন স্বাধীনতাকামী বাংলার দামাল ছেলেরা জীবন বাজি রেখে বর্বর পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে।
হানাদার মুক্ত দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের উদ্যোগে র্যালি ও আলোচনা সভাসহ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) আবুল হাসেম।
পাকহানাদার বাহিনীর আতঙ্ক উপজেলার বীরনগর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বাঘা জানান, ৫নম্বর সেক্টরের ৪নম্বর সাব সেক্টরের বড়ছড়া,টেকেরঘাটের অধীনে ছিল তৎকালীন সময়ে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা। এই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রাত জেগে যুদ্ধ করে হানাদার বাহিনীদেরকে পরাজিত করেন। সর্বশেষে উপজেলা সদরের ভাটি তাহিরপুর উপজেলার সদর ইউনিয়ন কাছারিতে অবস্থানরত পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে তারা নানা পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ভোর সাড়ে ৪টার মেজর মুসলেদ্দিনের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা একত্রিত হয়ে পাক হানাদারদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পাক হায়েনারা নিজেদের জীবন বিপন্ন ভেবে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। এ সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আনন্দে সবার মুখে উচ্চারিত হয় ‘জয় বাংলা,বাংলার জয়’ প্রতিধ্বনি। শুরু হয় আনন্দ মিছিল। মিছিলে মিছিলে মুখরিত হয়ে উঠে সমগ্র উপজেলা। এ যেন এক অন্যরকম অনুভূতি যা বলে প্রকাশ করা যাবে না বলে জানান এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর